• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রিজার্ভ চুরি: কিম অং ও মায়া দেগুইতোর বিরুদ্ধে মামল


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ১২, ২০১৬, ০৭:৫২ পিএম
রিজার্ভ চুরি: কিম অং ও মায়া দেগুইতোর বিরুদ্ধে মামল

সোনালীনিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে চুরির ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ফিলিপাইনে পাচারের অভিযোগে ক্যাসিনো জাংকেট অপারেটর কিম অং এবং রিজাল কর্মাশিয়াল ব্যাংক করপোরেশনের মাকাতি সিটির জুপিটার শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোষ দেগুইতোর বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করেছে দেশটির অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিল (এএমএলসি)।

গতকাল মঙ্গলবার ফিলিপাইনের অর্থপাচার বিরোধী এ সংস্থা বিচার বিভাগের কাছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পৃথক দুই মামলা করার সুপারিশ করে। অর্থ পাচারের জড়িত থাকার অভিযোগে এক মামলায় রিজাল ব্যাংকের সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক দেগুইতো এবং জুপিটার শাখায় মিথ্যা তথ্যে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা চার ব্যবসায়ী মাইকেল ফ্রান্সিস ক্রুজ, জেসি ক্রিসটোফার লাগ্রোসাস, আলপ্রেড সান্তোস বারগারা এবং এনরিকো তেওদোরো ভাসকোয়েজ অভিযুক্ত করার অনুমতি চেয়েছে এএমএলসি। এ চার ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্টে রিজার্ভ চুরির টাকা স্থানান্তর করা হয়। আরেক মামলায় ক্যাসিনো জাংকেট ক্যাম সিন অং ওরফে কিম অং এবং ওয়াইক্যাংক ঝু’র বিরুদ্ধে রিজার্ভ চুরির অভিযোগ আনার অনুমতি চেয়েছে এএমএলসি।

বিচার বিভাগে পৃথক দুই মামলা করার অনুমতি চেয়ে এএমএলসি বলেছে, তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ১৫ মে জুপিটার শাখায় ভুল তথ্যে চার ব্যবসায়ীকে অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতি দিয়েছিলেন ওই শাখার ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতো। অ্যান্টি মানি লন্ডারিং সংস্থা আবেদনে আরো বলেছেন, ভুল তথ্যে অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতির পর ওই চার অ্যাকাউন্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির টাকা স্থানান্তর এবং তুলে নেয়ারও অনুমতি দিয়েছিলেন জুপিটার শাখা ব্যবস্থাপক। অ্যাকাউন্টে আসা বিপুল অংকের এ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট চুরির মাধ্যমে আসা সম্পর্কে ই-মেইল বার্তাও পেয়েছেন দেগুইতো। ওই ই-মেইল বার্তায় টাকা পেমেন্ট বন্ধ করার অনুরোধও ছিল যা তিনি উপেক্ষা করেছেন। অধিকন্তু ওই টাকা উত্তোলনের সুযোগ করে দিয়েছেন ব্যাংক ম্যানেজার। তদন্ত রিপোর্টের উল্লেখ করে বিচার বিভাগকে এ কথা জানিয়েছেন এএমএলসি। অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিল বলেছে, রিজার্ভ চুরি টাকা ফিলিপাইনে আসা এবং তা ভাগ-বাটোরোয়ায় দেগুইতোর ভুমিকা প্রমাণ যে তিনি অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত। বিপুল এ অর্থ ফিলিপাইনে পাচার এবং তা ভাগ-বাটোরোয়া প্রসঙ্গে পুর্বাপর উদ্বৃত করে এএমএলসি বলেছে, দেগুইতোর সম্পৃক্তত্ ানিয়ে সংশয় নেই। এএমএলসি আবেদনে বলেছে, সিনেট কমিটির গত ১৭ মার্চের শুনানিতে চুরির টাকা স্থানীয় মুদ্রায় রুপান্তরে জড়িত বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারি প্রতিষ্ঠান ফিলরেমের প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের সুত্র ধরে ক্যাসিনো জাংকেট উইক্যাং ঝু’কে আসামি করা হচ্ছে। ওই দিনের শুনানিতে ফিলরেম কোম্পানির প্রেসিডেন্ট জানান, দেগুইতোর নির্দেশে টাকা উইক্যাং ঝু’র কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। এদিকে রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের মাকাতি সিটির জুপিটার শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতোর বিরুদ্ধে পৃথক দুই মামলা করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট লরেনজো তান।

সোমবার মাকাতি সিটি ট্রায়াল কোর্টে দায়ের করা মামলার একটিতে আরসিবিসি প্রেসিডেন্ট ৩২ মিলিয়ন পেসো ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন। মামলার আর্জিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে চুরির ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ফিলিপাইনে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ঢুকিয়ে তা বিলি-বন্টনে লরেনজো তানের জড়িত থাকা নিয়ে অসম্মানজনক মন্তব্য করেছেন দেগুইতো। একই কোর্টে দায়ের করা অপর মামলায় দেগুইতোর বিরুদ্ধে অসত্য বক্তব্য ও রিভাইজড প্যানেল কোর্ড লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

লরেনজো তান আর্জিতে বলেন, রিজার্ভ চুরি নিয়ে সিনেট কমিটির শুনানিতে দেয়া দেগুইতোর বক্তব্য ছিল ধারণাপ্রসূত। ওইসব বক্তব্য সত্যের অপলাপ মাত্র। গত ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে ১০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার তুলে নেয় দুবৃত্তরা। ওই টাকার ৮১ মিলিয়ন ডলার পাছানো হয় ফিলিপাইনের রিজাল কর্মাশিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের মাকাতি সিটির জুপিটার শাখায় ক্যানো ব্যবসায়ী কিম অংয়ের অ্যাকাউন্টে। রিজার্ভ লোপাটের বাকী ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাঠানো হয় শ্রীলংকার বেসরকারি সেচ্ছাসেবি সংগঠন শালিকা ফাউন্ডেশনের অ্যাকাউন্টে। প্রাপক সংস্থা নামের বানানে ভুল থাকায় পেমেন্ট আটকে দেয় ব্যাংক কর্মকর্তারা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!