• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রুম্পার মৃত্যুতে পুলিশ কর্মকর্তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম


মাসুদ রানা, ময়মনসিংহ ডিসেম্বর ৭, ২০১৯, ১০:৪৭ এএম
রুম্পার মৃত্যুতে পুলিশ কর্মকর্তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম

ময়মনসিংহ : রাজধানীর স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির নিহত শিক্ষার্থী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার মৃত্যুতে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। রুম্পার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরনিলক্ষীয়া ইউনিয়ের বিজয়নগর। মেয়ের কবরের সামনেই বসে অঝোরে কাঁদছেন পুলিশ কর্মকর্তা বাবা মো: রুকুন উদ্দিন।

এদিকে মেয়ের শোকে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন মা নাহিদা আক্তার পারুল। স্বজনরা তাকে স্বান্ত্বনা দিয়েও কান্না থামাতে পারছেন না। দু'দিন ধরে কিছুই খাননি। শারীরিকভাবে অসুস্থও হয়ে পড়েছেন তিনি। রুম্পার মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড দাবি করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান স্বজনরা।

মা নাহিদা আক্তার পারুল বারবার চিৎকার করে বলেন, জরুরি কাজের কথা বলে গেলো, ফিরলো লাশ হয়ে। আমার মেয়েকে কতো কষ্ট দিয়ে ওরা মেরেছে। মরার সময় মেয়েটি কতবার জানি, মা-মা বলে চিৎকার করেছে। তিনি আরও বলেন, ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রছাত্রীদের শিফট আলাদা হওয়ায় দু'দিন ধরে মেয়ের মনও খারাপ ছিল। তার সঙ্গে কারো বিরোধ ছিল কি, না তা বলতে পারছি না।

নাহিদা আরও বলেন, বুধবার সকালে ডিম ভাজি করে নিজ হাতে খাইয়ে দিয়েছি। এটাই যে শেষ খাওয়া কে জানতো? সন্ধ্যায় তার চাচাতো ভাই শুভর নিকট ব্যাগ-মোবাইল দিয়ে চলে যায়। বাসার দ্বিতীয় তলাও রুম্পা উঠেনি। এমন কী জরুরি কাজ ছিল? যার জন্য এতো দ্রুত ছুটে যায়। দিন-রাত অপেক্ষায় ছিলাম- এইতো মেয়ে ফিরবে-ফিরে আসবে। এলো লাশ হয়ে! আমার মেয়েকে কেন মেরে ফেললো? আমি এ হহত্যার কঠিন বিচার চাই।

গত বুধবার রাতে রাজধানীর ইনার সার্কুলার রোড থেকে রুম্পার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার ভোর ৫টায় রুম্পার লাশ গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের চরনিলক্ষীয়া ইউনিয়নের বিজয়নগরে নিয়ে আসা হয়। সেখানে বেলা ১০টায় জানাজা শেষে পরিবারিক গোরস্থানে দাদী রুবিলা খাতুনের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।

রুম্পার বাবা মো: রুককুন উদ্দিন হবিগঞ্জ জেলার পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত। মা নাহিদা আক্তার পারুল গৃহিণী। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে রুম্পা সবার বড়। রুম্পা ২০১৪ সালে রাজরবাগ পুলিশ লাইনস স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি, ২০১৬ সালে ভিকারুন্নিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে জিপিএ-৫ এইচএসসি উত্তীর্ণ হন। এরপর সে রাজধানীর স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। আর ছোট ভাই আশরাফুল আলম ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক অধ্যয়নরত।

ঢাকার শান্তিবাগে একটি ফ্ল্যাটে মায়ের সঙ্গে থেকে পড়াশোনা করতেন রুম্পা ও তার ছোট ভাই । পড়াশোনার পাশাপাশি রুম্পা টিউশনি করাতেন। গত বুধবার টিউশনি শেষে বাসায় ফেরার কিছুক্ষন পর রুম্পা আবারও বাইরে কাজ আছে বলে বের হয়। কিন্তু এরপর রাতে আর বাসায় ফিরেনি। স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তার সন্ধান পাননি।

বৃহস্পতিবার রুম্পার মা ও স্বজনরা রমনা থানায় গিয়ে লাশের ছবি দেখে তাকে শনাক্ত করেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!