• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

‘র‌্যাগিং বন্ধ, জাকসু হবে, শিগগিরই প্রশাসনে রদবদল’


জাবি প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৯, ০৮:৪২ পিএম
‘র‌্যাগিং বন্ধ, জাকসু হবে, শিগগিরই প্রশাসনে রদবদল’

ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম

জাবি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হতে যাচ্ছে নতুন ব্যাচ (৪৮তম)-এর শিক্ষার্থীদের ক্লাস। বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো জাকসু দাবিতে আন্দোলন করছে। শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে ভরাডুবি ঘটেছে ভিসিপন্থি শিক্ষক সংগঠনের। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নে সরকার প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে বিভাজন বহুদিন ধরে। থেমে থেমে বেপরোয়া হয়ে উঠে ছাত্রলীগ। এসব বিষয়ে সোনালী নিউজের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সোনালী নিউজের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি শাহাদাত হোসাইন স্বাধীন।

সোনালী নিউজ : ২৪ তারিখ নতুন ব্যাচের ক্লাস শুরু হতে যাচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে র‌্যাগিংয়ের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। র‌্যাগিং বন্ধে আপনার প্রশাসন কি পদক্ষেপ নেবে?

ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম : প্রশাসন বলতে তো শুধু ভিসি, প্রো-ভিসিকে বুঝায় না। হল প্রভোস্ট, হলের হাউজ টিউটররাও প্রশাসনের অংশ। তাই সবাইকে মিলে র‌্যাগিং বন্ধে উদ্যোগ নিতে হবে। হলে হলে নজরদারি বাড়ানোর চিন্তা করা হচ্ছে। রাতে শিক্ষকদের হলে থাকতে বলা হয়েছে। হল প্রভোস্ট ও হাউজ টিউটরদের সময় ভাগ করে হলে ডিউটি দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া সিনিয়র ব্যাচের শিক্ষার্থীদের র‌্যাগ না দিতে মোটিভেট করার উদ্যোগ নেয়া হবে। প্রক্টরিয়াল বডি তো সার্বক্ষণিক সতর্ক থাকবেই। তিনি গণরুম নিয়ে বলেন, নতুন হলো নির্মিত হলে গণরুম বলে কিছু থাকবে না।

সোনালী নিউজ : সম্প্রতি ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটসহ শিক্ষার্থীরা জাকসুর দাবিতে জোরালো আন্দোলন চালিয়ে আসছে। আপনি নিজেও জাকসু নির্বাচন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কবে নাগাদ জাকসু নির্বাচন দেবেন?

ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম : জাকসু নির্বাচনের দাবি দীর্ঘদিনের। এই নির্বাচন হওয়াটা দরকার। আমি চেষ্টা করব চলতি বছরের মধ্যে জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের এবং সেটা সম্ভব। নির্বাচনের পরিবেশ বিনির্মাণে প্রশাসন শিগগিরই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে।

সোনালী নিউজ : উইকেন্ড কোর্স চালুর ফলে এবং শিক্ষকদের বাইরে পড়ানোর কারণে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ব্যাহত হচ্ছে। এটা নিয়ে আপনি কি ভাবছেন?

ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম : উইকেন্ড ও বাইরে পড়াতে যাওয়া তো আজকে শুরু হয়নি। এটা অনেকদিন ধরে হয়ে আসছে। এমন শিক্ষকও আছেন যিনি আট মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ক্লাস পরীক্ষা নেননি। ভোটের ভয়ে কেউ কোনোদিন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি। কিন্তু এসব নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।

সোনালী নিউজ : সম্প্রতি আপনাকে সমর্থন করা শিক্ষক সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু আদর্শের শিক্ষক পরিষদ’ শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে হেরে যায়। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দালকে এ্ই ভারাডুবির কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আপনার মন্তব্য কি?

ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম : এসব অনুমান। কোন্দল কোনো দলে নেই। সব দলেই কোন্দল থাকে। আওয়ামী লীগের একাংশ, বিএনপি, জামাত-শিবির বামদের সমন্বিত প্যানেলে বিরুদ্ধে গড়ে ২৪০ ভোট পাওয়া ও ৫টি পদে জিতে আসা কম না।

সোনালী নিউজ : আপনার প্রশাসনে অনেক লোক রয়েছে একাধিক দায়িত্বে। এর ফলে প্রশাসনের কাজে কোন মন্থরতা তৈরি হচ্ছে কিনা!

ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম : প্রশাসনে একাধিক পদে যেমন আছে আবার একাধিক পদে থেকে আমার বিরোধীতাও করছে তবে শিগগিরই প্রশাসনে একটা রদবদলের চিন্তা আছে।

সোনালী নিউজ : বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল গেইট সংলগ্ন মহাসড়কে প্রায় ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরেও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে।

ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম : ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় সড়কবাতি লাগানোর জন্য সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর কর্তপক্ষকে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে অনেক জায়গায় লাইট লাগানোর পরে তা আবার ভেঙ্গে দেওয়া হয়। তাই এবার ওপরে করে উন্নতমানের অধিক আলোকিত লাইট লাগানোর চিন্তা করছি।

সোনালী নিউজ : ছাত্রলীগের মধ্যে প্রায় একটা অসন্তোষ তৈরি হয়ে ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়া ছাত্রলীগের একটা গ্রুপের মধ্যেও একটা টানাপোড়ন চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থিতিশীলতার জন্য এসব বন্ধে প্রশাসন কোন উদ্যোগ নেবে কিনা?

ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম : ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগের বেশ কিছু দাবি-দাওয়া  রয়েছে। তাদের মধ্যে যে সমস্যা তা প্রশাসন আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নিরসন করার চেষ্টা করছে।

সোনালী নিউজ : বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ১৪০০ কোটি টাকার প্রজেক্ট শুরু হতে যাচ্ছে। এর আগে আপনি শিক্ষকদের মধ্যে একটি ঐক্য তৈরি করে সবার মতামতের ভিত্তিতে প্রজেক্টে হাত দিবেন কিনা?

ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম : এখানে ঐক্যমতের নামে হালুয়া রুটি ভাগের আসর বসাতে চাই না। সরকারিভাবে টেন্ডারের মাধ্যমে প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করা হবে। প্রজেক্ট তদারকির দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা ১% পরামর্শক সম্মানি পাবে। জাহাঙ্গীরনগরে খুব একটা ভাল কাজ হয়নি। আমি চাই এই প্রজেক্টের অধীনের প্রকল্পগুলো ভালভাবে বাস্তবায়ন হোক। আপনি উপাচার্যের দায়িত্বে থাকি না থাকি এই মেগা প্রজেক্ট ঠিকঠাকভাবে বাস্তবায়ন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমূল উপকার হবে। সেটাই আমার কামনা।

সোনালী নিউজ : শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে কি পদক্ষেপ নেবেন?

ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম : মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হলে শিক্ষার মান উন্নয়ন হবে।
 
সোনালী নিউজ : এক সময়ে আপনার সঙ্গে শিক্ষকরাই আপনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে দীর্ঘ সময় ধরে। এটা চ্যালেঞ্জ কিনা?

ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম : চ্যালেঞ্জ ছিল, চ্যালেঞ্জ থাকবে। চ্যালেঞ্জের মধ্যেই কাজ করতে হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!