• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

লকডাউন সাধারণ জনগণের শুধু ভোগান্তি ছাড়া কিছুই নয়!


সোনালীনিউজ ডেস্ক জুলাই ৫, ২০২০, ০৮:১৬ পিএম
লকডাউন সাধারণ জনগণের শুধু ভোগান্তি ছাড়া কিছুই নয়!

ঢাকা: রাজধানীর ওয়ারীতে লকডাউন শুরু হওয়ার দ্বিতীয় দিনেই বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা গেছে এলাকাবাসীকে। তারা বলছেন, কন্ট্রোল রুমে কীভাবে যোগাযোগ করবো, আক্রান্ত কোন সাইডে বেশি কিংবা রাস্তায় বের হয়ে হাঁটাহাঁটি করা যাবে কিনা, এসব সাধারণ তথ্য আমাদের দেওয়া দরকার ছিল। মানুষ কীভাবে এতদিন ঘরে থাকবে তা নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে গেছে বলেও দাবি করেন তারা। এলাকাবাসীর মতে, লকডাউনটি  সাধারণ জনগণের জন্য শুধু ভোগান্তি ছাড়া কিছুই নয়।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে রেড জোন ঘোষণা করে লকডাউন করা হয়েছে রাজধানীর ওয়ারী এলাকাকে। শনিবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া ২১ দিনের লকডাউনের দুইদিন না যেতেই ওই এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, বর্তমান সময়ে এই লকডাউনের কোনও প্রয়োজন নেই। আর ওই এলাকার কাউন্সিলর বলছেন, লকডাউন দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। লকডাউন হলে কিছু অসুবিধা হবে এটাই স্বাভাবিক।

রোববার (৫ জুলাই) ওয়ারীর সুমি’স হট কেকের সামনের গেটে দাঁড়িয়ে কথা হয় এলাকার স্থায়ী কিছু বাসিন্দার সঙ্গে। এলাকাবাসীর দেওয়া ছবি ও তথ্য থেকে জানা গেছে, লকডাউনের মধ্যেও কিছু লোক রাস্তায় ঘোরাফেরা করছে। আবার কোনও কোনও প্রবেশপথ দিয়ে বাইরের লোক ভেতরে ঢুকে বেড়িয়ে আসতে পেরেছে। কয়েকজনকে বাসার নিচে দাঁড়িয়েও আড্ডা দিতে দেখা গিয়েছে। আবার অনেককে পায়ে হেঁটে এলাকার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তের বাসায় বাজার নিয়ে যেতেও দেখা গেছে। তবে কোনও রিকশা চোখে পড়েনি বলে তারা জানিয়েছেন।

এলাকাবাসী জানান, স্বেচ্ছাসেবকদের কাজে তারা সন্তুষ্ট। তবে কিছু প্রাথমিক তথ্যের ঘাটতি আছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বাসিন্দা বলেন, বলধা গার্ডেনের কাছে সিটি করপোরেশনের একটি ‘কন্ট্রোল রুম’ স্থাপন করা হয়েছে। সেই জায়গাটি চিনতে কোনও অসুবিধা না হলেও যেতে অসুবিধা হবে। কারণ, ভেতরে কোনও রিকশা চলাচলের সুযোগ নেই। ভেতরে নেই চোখে পড়ার মতো কোনও ব্যানার, যেখান থেকে নাম্বার সংগ্রহ করে কন্ট্রোল রুমে কল দেওয়া যেতে পারে।

ওই এলাকার ব্যবসায়ী মুশফিকা বলেন, লকডাউন কার্যকর। কিন্তু শেষ সময়ে এসে এরকম একটা লকডাউনের কী প্রয়োজন সেটা আমি বুঝলাম না। যারা বাইরে যাওয়ার, তারা ৪ তারিখের আগেই চলে গেছে। তারা তো ২১ দিন পর আবার ফিরবেন। যারা রোগাক্রান্ত, তারা অন্য একটা এলাকায় গেছে। এখন সবকিছু বন্ধ, আমরা পড়েছি মহাবিপদে। লকডাউন যদি হবে মানুষ বাসার বাইরে কেন?’

ওই এলাকার বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘জোনভিত্তিক লকডাউন করার আগে অন্যান্য দেশের সিস্টেমটা দেখা দরকার ছিল। অন্যান্য দেশের অবস্থা এবং আমাদের দেশের অবস্থার একটা পার্থক্য দেখে তারপর একটা ব্যবস্থা নিতে হতো। কিন্তু তা করা হয়নি।

একই শহরে আলাদা আলাদা জোন ভিত্তিক লকডাউন কেন প্রশ্ন করে ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘যদি লকডাউন দিতেই হয়, তবে সিটিভিত্তিক লকডাউন দেওয়া প্রয়োজন। লকডাউন শেষ হবে, আমরাও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আবার ফিরে যাবো। তখন যদি আবার সংক্রমণের শিকার হই। তাহলে লকডাউন দিয়ে কী লাভ হলো? সাধারণ জনগণ হিসেবে আমার মনে হয়, এই লকডাউন কার্যকর হবে না। আমরা লকডাউন বিরোধী এমন না, তবে আমরা এর বাস্তবায়ন নিয়ে চিন্তিত।

এলাকাবাসীর অভিযোগ ও মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে লকডাউন পরিস্থিতি বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়ারীর কাউন্সিলর সারোয়ার হাসান আলো বলেন, ‘আক্রান্ত যারা যারা আছেন তাদের বিষয়টি আইইডিসিআর বলতে পারবে। আমাদের দরকার এই সময়ে একটা ডিসিপ্লিন। সরকার লকডাউন দিলে সেটা তো আমাদের আটকানোর ক্ষমতা নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মনে করেছে এখানে লকডাউন দরকার। বাস্তবায়ন করাটা আমাদের দায়িত্ব। তবে লকডাউন হলে কিছু অসুবিধা হবে এটাই স্বাভাবিক।বাংলা ট্রিবিউন

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!