• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

লাশ নদীতে ফেলে দেয়া সেই মৌসুমীর করোনা হয়নি


লালমনিরহাট প্রতিনিধি মে ২৮, ২০২০, ১১:২০ পিএম
লাশ নদীতে ফেলে দেয়া সেই মৌসুমীর করোনা হয়নি

লালমনিরহাট : ট্রাকে করে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নে নিজ  বাড়িতে ফেরার পথে মৃত্যুবরন করা গার্মেন্টসকর্মী  মৌসুমী আক্তার  করোনা আক্রান্ত ছিলেন না। জেলা সিভিল সার্জন নির্মলেন্দু রায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মৌসুমী আক্তারের লাশ দাফনে বাঁধা দেয়ার সত্যতা মিলেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক তদন্তে। জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানিয়েছেন, গণমাধ্যমের খবরের ভিত্তিতে বিষয়টির একটি প্রশাসনিক  তদন্ত রিপোর্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে চেয়ারম্যান কর্তৃক লাশ দাফনে বাঁধা দেয়ার বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেছে।

এদিকে নিজেকে নির্দোষ দাবী করে বুড়িমারী চেয়ারম্যান নেওয়াজ নিশাত  দুদফা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে তিনি দাবী করেছেন, মরদেহ আনতে বাঁধা দেওয়া ও পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকির ভুল তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। 

অপরদিকে রংপুর মেট্রোপলিটনের  তাজহাট থানায় হওয়া মৌসুমীর অপমৃত্যুর মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ বলে জানিয়েছে তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ রোকনুজ্জামান। তিনি আরও জানান, মৌসুমীর মৃত্যু রহস্যের জট খুলতে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। প্রতিবেদন এখনো পাওয়া যায়নি, তবে শীঘ্রই পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।  

এ ছাড়া লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলাতানা জানিয়েছেন, যেহেতু লাশ দাফনে বাঁধা দেয়া আইনত একটি অপরাধ এবং বিষয়টি স্পর্শকাতর তাই অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে যাতে কোনো অপরাধী ছাড় না পায়। এ ব্যাপারে দোষী সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য,  গত ২১ মে গাজীপুর থেকে ট্রাকে করে লালমনিরহাটের পাটগ্রামে বাড়িতে ফিরছিলেন মৌসুমী। রংপুরের তাজহাট এলাকায় এসে চালক বুঝতে পারেন মৌসুমী মারা গেছেন। এরপর তার মরদেহ রাস্তায় ফেলে চলে যান। তাজহাট থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে রমেক মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে ২৩ মে পুলিশ গোলাম মোস্তফার কাছে তার মেয়ের মরদেহ হস্তান্তর করে।

মৌসুমীর বাবা গোলাম মোস্তফা অভিযোগ করেন, মৌসুমীর মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যাবেন বলে বুড়িমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নিশাদের সঙ্গে কথা বলেন। করোনা সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে মনে করে তিনি মৌসুমীর মরদেহ নিয়ে যেতে নিষেধ করেন। রংপুরেই মরদেহ দাফনের জন্য একজন লাশবাহী গাড়ির চালককে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মরদেহ দাফন না করে তিস্তা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।

এরপর গত ২৪ মে রাতে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্ধন গ্রামে তিস্তা নদী থেকে হাসপাতাল মর্গের ব্যাগে মোড়ানো অবস্থায় মৌসুমীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ সুপারের নির্দেশে ঈদের দিন বিকালে আদিতমারী থানা চত্বরে নামাজে জানাজা শেষে পাটগ্রামের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে মৌসুমী আখতারের মরদেহ দাফন করা হয়। অমানবিক এ ঘটনা নিয়ে ডেইলি অবজারভার সহ দেশের অন্যান্য শীর্ষ গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।     

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!