• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

লুমা নাকি মুফতি হান্নানের ভাগ্নি! কী বলছে তার মা?


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ১৭, ২০১৮, ০৯:৩৭ পিএম
লুমা নাকি মুফতি হান্নানের ভাগ্নি! কী বলছে তার মা?

ঢাকা: ইডেন কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী লুৎফুন্নাহার লুমাকে গ্রেপ্তারের পর তিনদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। প্রথমে অভিযোগ ছিল গোলাপি সালোয়ার-কামিজ পরে যে মেয়েটি আওয়ামী লীগ অফিসে শিক্ষার্থী খুন ও ধর্ষণের গুজব ছড়িয়েছিল, লুমাই সেই মেয়ে। পরে ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হলেও মুক্তি মেলেনি লুমার, বরং গুজব প্রচার ও নাশকতায় উসকানির নতুন অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

এদিকে শুক্রবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন লুমার মা রাশিদা বেগম।

তিনি বলেন, সে ঢাকায় আসার পর কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। কয়েকদিন পর মানুষের কাছে শুনলাম- লুমা নাকি মুফতি হান্নানের ভাগ্নি। আমার মেয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করে মুফতি হান্নান কে তুমি চেন? আমি বলি মুফতি হান্নানকে তো আমি নিজেই চিনি না। আমার মেয়ের নামে অনেক অপপ্রচার চালানো হয়েছে। 

লুমার মা বলেন, আমার মেয়ের সাহস অনেক। সে পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পুরস্কার হিসেবে বঙ্গবন্ধুর দুটি বই পায়। সে বলতো- বঙ্গবন্ধুর বই পড়ে সাহস পাওয়া যায়। সাহস পেলে পিছিয়ে আসা যাবে না। তিনি তো আমাদের কথা বলেছেন। জাতির কথা বলেছেন।

এদিকে, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফুন্নাহার লুমার নামে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক বিন ইয়ামিন মোল্লা।

ইয়ামিন বলেন, ‘‘ফেসবুক গ্রুপ ‘গুজবে কান দেবেন না’তে লুমার নামে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। সেখানে একটি ভিডিও শেয়ার করে তার নাম উপস্থাপন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় লুমা ঢাকায় ছিলেন না।’

প্রমাণ হিসেবে তিনি আরও বলেন, ‘গত ৩ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত লুমা গোপালগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জে ছিলেন। গত ৪ আগস্ট নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায় গোলাপী ড্রেস পরা একটি মেয়ে মুখ ঢেকে বক্তব্য দিচ্ছে। ভিডিওতে তাকে ঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। শুধু পরনের গোলাপী জামা দেখে তাকে লুমা হিসেবে নির্ণয় করা হয়েছে। এর কারণ একই রঙের একটি জামা পরে সে একটি টেলিভিশন টকশোতে অংশগ্রহণ করেছিল। আর এই বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়- ওই ফেসবুক গ্রুপে। লুমাকে নিয়ে নানা ধরনের অশালীন পোস্ট ওই গ্রুপে শেয়ার করা হয়।’

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউল্লাহ বলেন, ‘শুধু গোলাপী জামা দেখে সম্পূর্ণ সন্দেহের বশবর্তী হয়ে এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত থাকায় একটি বিশেষ গোষ্ঠীর অপপ্রচারের কারণে লুমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও পুলিশ ওই ভিডিওর সঙ্গে লুমার কোনও মিল বা সম্পৃক্ততা খুঁজে পায়নি বলে গণমাধ্যমে স্বীকার করেছে। তার নামে অভিযোগ আনা হলেও তার সপক্ষে একটি প্রমাণ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ উপস্থাপন করতে পারেনি। আমরা প্রশাসনকে অনুরোধ করবো মিথ্যা, ষড়যন্ত্র ও প্রহসনের মামলা এবং রিমান্ড প্রত্যাহার করে অবিলম্বে তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হোক। একইসঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আটক করা আন্দোলনকারীদের ঈদের আগেই নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, লুমার বড় বোন কেয়া সরকার, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক জালাল আহমেদ প্রমুখ।

সম্প্রতি নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। তখন লুমা ফেসবুক লাইভে বিভিন্ন উসকানিমূলক মিথ্যা তথ্য প্রচার করেন— এই অভিযোগে রমনা থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ। ওই মামলায় গত বুধবার (১৫ আগস্ট) ভোরে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার বড়ধুল ইউনিয়নের ক্ষিপ্রচাপড়ি গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয় লুৎফুন্নাহার লুমাকে। তিনি ওই গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের মেয়ে।

সোনালীনিউজ/জেএ

Wordbridge School
Link copied!