• ঢাকা
  • বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শরিকদের আসন চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ


বিশেষ প্রতিনিধি অক্টোবর ৩, ২০১৮, ০৮:৩০ পিএম
শরিকদের আসন চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ

ঢাকা : আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় মহাজোটের শরিক দলগুলোর সংসদীয় আসন ভাগাভাগি প্রায় চূড়ান্ত। কোন কোন আসন শরিক দলগুলোর জন্য ছেড়ে দিচ্ছে আওয়ামী লীগ, তা শিগগিরই জানিয়ে দেওয়া হবে দলগুলোর শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদেরকে।

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে শিগগিরই বৈঠকে বসার কথা। বৈঠকেই আসনের বিষয়ে জানানো হবে বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সূত্র থেকে জানা গেছে।

নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরিকদের জন্য যেসব আসন আওয়ামী লীগ ছেড়ে দেয়, এবারো সেসব আসনের বেশিরভাগই দলটি ছেড়ে দেবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী সপ্তাহে ১৪-দলীয় জোটের শরিক দল ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। বৈঠকে শরিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে ও আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা চূড়ান্ত হতে পারে। তবে বৈঠকের তারিখ এখনো নির্ধারণ হয়নি।

শরিক দলগুলোকে আসন বণ্টনের কথা জানানো হলেও দলগুলো নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে তা প্রকাশ করবে না। তবে দলের প্রার্থীকে মাঠে থাকতে ‘সবুজ সঙ্কেত’ দেবেন দলগুলোর নেতারা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী কয়েকজন থাকা ও দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে তফসিল ঘোষণার আগে আসন সমঝোতার বিষয়টি প্রকাশ করতে চায় না মহাজোটের প্রধান শরিক এ দলটি।

সূত্র জানায়, আসন ভাগাভাগির বিষয়টি আগেভাগে ফয়সালা করার জন্য বেশ কয়েক মাস ধরে শরিকদের কোনো কোনো দল তাগাদা দেয় আওয়ামী লীগকে। ১৪ দলের বৈঠকে এ বিষয়ে কোনো কোনো দলের নেতা ক্ষোভও প্রকাশ করেন। তাদের কথা আওয়ামী লীগ আমলে নেয়নি- এমন অভিযোগও করেন। গত মাসের শেষ সপ্তাহে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বৈঠকেও আসন ভাগাভাগির প্রসঙ্গটি আসে।

তখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরার পর অক্টোবর মাসেই শরিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সব চূড়ান্ত করবেন। ২১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করে ১ অক্টোবর দেশে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের সূত্র জানায়, শরিক দলগুলো আগামী নির্বাচনে প্রায় ২০০ আসন দাবি করছে। জোটের কোনো কোনো শরিক দলের সঙ্গে এ নিয়ে আওয়ামী লীগের দরকষাকষিও চলছে। আগামী নির্বাচনে দল ও জোট- উভয় ক্ষেত্রেই প্রার্থী মনোনয়নে সতর্কতা অবলম্বন করছে আওয়ামী লীগ।
শরিকদের আসন ছেড়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে সেখানে ওই দলের সাংগঠনিক অবস্থা, প্রার্থীর যোগ্যতা ও মানুষের কাছে প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতাসহ সার্বিক দিক পর্যালোচনা করা হচ্ছে। শেখ হাসিনা নিজেও তা পর্যালোচনা করছেন।

শেষ মুহূর্তে ১৪-দলীয় জোটের শরিকরা কয়টি আসন পাবে, তা মহাজোট প্রধান শেখ হাসিনাই নির্ধারণ করবেন। শরিকদের জন্য ৬৫ থেকে ৭০টি পর্যন্ত আসন ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে আওয়ামী লীগের। দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও সাংবাদিকদের সম্প্রতি এমন আভাস দেন।

১৪ দলের শরিক সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শরিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকের পর আসন সমঝোতার বিষয়ে জানা যাবে।’

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে জোটগতভাবে ১৪ দলের পক্ষ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ৯ অক্টোবর রাজশাহী, ১০ অক্টোবর নাটোর, ১৩ অক্টোবর খুলনায় সমাবেশ করবে ১৪ দল। বৈঠকগুলোর পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হতে পারে। ওই বৈঠকে আসন বণ্টনের বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার কথা।’

সূত্র জানায়, বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে জোটের শরিক জাতীয় পার্টিসহ আরো কয়েকটি দলের জোটকে দিয়ে আলাদা হয়ে নির্বাচন করানোর পরিকল্পনা আছে। তখন শরিকদের জন্য আওয়ামী লীগের ছেড়ে দেওয়া আসন কমে আসবে। বিএনপি ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া নির্বাচনে অংশ নিলে আরো কয়েকটি দলকে নিয়ে আওয়ামী লীগের ‘নির্বাচনী জোটের’ পরিধি বাড়তে পারে। প্রগতিশীল, বাম ও গণতান্ত্রিক ধারার কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও দলগুলোর জোটে যোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

পরিস্থিতি অনুযায়ী তখন আওয়ামী লীগ আরো কয়েকটি আসন ছেড়ে দিতে পারে মিত্র দলের জন্য। আগামী সংসদ নির্বাচনের কাঠামো কেমন হয়, বিএনপিসহ সব দলকে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে নাকি নতুন ধাঁচের নির্বাচন হতে যাচ্ছে- সেদিকেও দৃষ্টি রাখছে আওয়ামী লীগের জোট মিত্ররা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!