• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শাহজাদ ঝড়ে বিধ্বস্ত তামিমের চিটাগাং


ক্রীড়া প্রতিবেদক নভেম্বর ৯, ২০১৬, ১০:৫৯ পিএম
শাহজাদ ঝড়ে বিধ্বস্ত তামিমের চিটাগাং

ঢাকা: ক্রিকেট তো নিছক একটা খেলাই। এখানে যোদ্ধা টোদ্ধার ব্যাপার আসার কথা না। কিন্তু আপনি যখন জানবেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত একটা দেশ, যে দেশে ক্রিকেট অবকাঠামো বলতে কিছু নেই। খেলার মাঠ তো নেই-ই। এমনকি অনুশিলন করার মতোও কোন জায়গা নেই। ভিনদেশে গিয়ে অনুশিলনের জন্য ক্রীড়া কমপ্লেক্স ভাড়া নিতে হয়। সেই আফগানিস্তান এখন ক্রিকেটের বড় দলগুলোর জন্য হুমকি। সম্প্রতি বাংলাদেশে এসে দুর্দান্ত ক্রিকেটে খেলেছে আফগানরা। ক্রিকেট অবকাঠামো না থাকার পরও একটা দেশের ক্রিকেটাররা  যখন এমন পারফরম্যান্স করেন তখন তাদের  যোদ্ধা বলা যেতেই পারে।

বিপিএলের চতুর্থ আসরে বিভিন্ন দলে খেলছেন আফগানিস্তানের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। বুধবার (৯ নভেম্বর) দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানদের ওপেনিং ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শাহজাদের কাছে খড়কুটার মতো উড়ে গেছে চিটাগাং ভাইকিংস। দল গোছানোর পর থেকেই সবাই  রংপুরকে দূর্বল দল বলে আসছিল। কিন্তু ব্যাটিংয়ে শাহজাদ-সৌম্য এবং বোলিংয়ে সোহাগ গাজী-আরাফাত সানি-শহীদ আফ্রিদিদের বোলিং বলে দিচ্ছিল তারা কতটা শক্তিশালি দল গড়েছে।

১২৫ রান তাড়া করতে নেমে বাজে সময় পার করে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন রংপুরের বড় বাজির ঘোড়া সৌম্য। মিলসের গতির কাছে হার না মানলে নিশ্চিতভাবেই ইনিংসটাকে আরো লম্বা করতে পারতেন। অবশ্য তার আগে দেখা গেছে চেনা সৌম্যকে। ২৫ বলে দুই ছক্কা, এক চারে খেলেছেন ২৩ রানের ইনিংস।

এরপর যা করার একাই করেছেন শাহজাদ। ভারতের ওয়ানডে ও টি২০ অধিনায়ক তার আদর্শ। এদিন ধোনির মতোই বড় বড় ছক্কা মারলেন শাহজাদ। দেখা গেলো ধোনির ট্রেডমার্ক হেলিকপ্টার শটও। শেষ পর্যন্ত শাহজাদ অপরাজিত ৮০ রান করে রংপুর জিতিয়ে তবেই  মাঠ ছেড়েছেন। ৫২ বলে ১১  চার, তিন ছক্কায় তিনি এই রান করেন। চিটাগাংয়ের কোন বোলারই এদিন উইকেট পাননি।

অভিষেকে আলো ছড়িয়েছিলেন সোহাগ গাজী। তারপর দাপটের সঙ্গেই খেলেছেন। সেই সোহাগ দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলে ব্রাত্য। বিপিএল তাই তার কাছে নিজেকে ফের প্রমাণের বড় মঞ্চ। অ্যাকশন শুধরে ফিরে আসা আরাফাত সানির জন্যও তাই। দুজনই চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষে বল হাতে আটোসাটো বোলিং করলেন। আর তাতে তামিম ইকবালের চিটাগাং ১৯.৪ ওভারে গুটিয়ে যাওয়ার আগে তুলতে পেরেছে ১২৪ রান।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুর দিকে ভালোই শুরু করেছিল চিটাগাং। যদিও আগের ম্যাচে ফিফটি করা অধিনায়ক তামিম ফিরে গেছেন মাত্র ১১ রান করেই। প্রথম ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হয়েছেন চিটাগাংয়ের  ক্যারিবিয়ান রিক্রুট ডুয়েন  স্মিথ (১০)।

তবে চিটাগাংকে কক্ষপথেই রেখেছিলেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শোয়েব মালিক এবং জাতীয় দল থেকে দীর্ঘদিন বাইরে থাকা এনামুল হক বিজয়। দূর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউটে কাটা পড়ার আগে  বিজয়ের ব্যাট থেকে এসেছে ১৬ বলে ২২ রান।

দারুন শুরু  করেও নিজের ইনিংসটাকে মালিক ৩০ রানের বেশি টানতে পারেননি সৌম্য সরকারের দুর্দান্ত এক থ্রোর কারণে। বিজয়ের মতো তিনিও রান আউটের ফাঁদে পড়েন। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে সবকটি উইকেট হারিয়ে চিটাগাং স্কোরবোর্ডে তোলে ১২৪ রান। সোহাগ ১৮ এবং রিচার্ড গ্লেসন ৩০ রানে নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। আফ্রিদি ১২, সানি ১৯ ও রুবেল হোসেন ২২ রানের বিনিময়ে পেয়েছেন ১টি করে উইকেট। ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন মোহাম্মদ শাহজাদ।

সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:
চিটাগাং ভাইকিংস: ১২৪/১০ (১৯.৪ ওভার) (মালিক ৩০, বিজয় ২৫, তামিম ১১, স্মিথ ১০।  সোহাগ ২/১৮, গ্লেসন ২/৩০, আফ্রিদি ১/১২, সানি ১/১৯, রুবেল ১/২২।)
রংপুর রাইডার্স: ১২৫/১ (১৫ ওভার) (শাহজাদ ৮০*, সৌম্য ২৫, মিঠুন ১২।)

ফল: রংপুর রাইডার্স ৯ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মোহাম্মদ শাহজাদ। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!