• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
এশিয়ার দুই মার্কিন বিরোধী পারমাণবিক শক্তি

শি জি পিং-এর আচমকা উ. কোরিয়া সফর, কী হতে পারে কারণ?


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুন ২০, ২০১৯, ০২:৩০ পিএম
শি জি পিং-এর আচমকা উ. কোরিয়া সফর, কী হতে পারে কারণ?

ঢাকা : গত ১৪ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো কোন চীনা প্রধান উত্তর কোরিয়ায় পৌঁছুলেন রাষ্ট্রীয় সফরে।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সকালে পিয়ংইয়ং-এ অবতরণ করে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জি পিংকে বহনকারী বিমানটি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠককে সামনে রেখে চীনের এমন পদক্ষেপকে প্রতীকী ও তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কোরিয়া প্রজেক্টের পরিচালক জন পার্ক বলেন, জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের মাত্র কয়েকদিন আগেই এমন সফর হতে পারে 'বড় ধরনের কোনো প্রতীক'। গত বছর শুরু হওয়া একটি দীর্ঘস্থায়ী বাণিজ্য যুদ্ধে বর্তমানে আবদ্ধ হয়ে গেছে ওয়াশিংটন এবং বেইজিং এবং জি-২০ বৈঠকের সময় এই বিষয়ে কিছু অগ্রগতির আশা করছে বিনিয়োগকারীরা। 'সিএনবিসি'

চীনা প্রেসিডেন্ট বৃহস্পতিবার সকালেই তার স্ত্রী, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই, শীর্ষ কূটনৈতিক ইয়াং জিশি এবং অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হে লিফেংকে সঙ্গে করে উত্তর কোরিয়ার উদ্দেশে চীন ত্যাগ করে বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে জানায় 'সিএনএন'।

উত্তর কোরিয়ার রাজধানীতে কিম জং উনের সঙ্গে দুইদিন ব্যাপী চীনা প্রেসিডেন্টের এই সফর বৃহত্তরভাবে প্রতীকী সম্পর্ককে প্রকাশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন অংশে এই সফরকে উদযাপন করতে ব্যাপক আয়োজন করতে দেখা গিয়েছে পিয়ংইয়ংয়ের প্রকাশিত ছবিতে। দেশ দুটির দীর্ঘকালীন সম্পর্ককে ফুটিয়ে তুলতে সড়কজুড়ে দেশ দুটির পতাকা, বেলুন ও ব্যানারে সজ্জিত করা হয়েছে, যাতে লেখা রয়েছে 'অবিচ্ছেদ্য বন্ধুত্ব'।

এই সফরের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠতে পারে কোরিয়ার পারমাণবিক চুক্তির বিষয়টি। গত ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প-কিমের হ্যানয় বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পরে দীর্ঘকালীন সহযোগী চীনের কাছেই কোনো পরামর্শ চাইতে পারে কোরিয়া। গত কয়েক বছর ধরেই কূটনৈতিক গতিবেগ বজায় রাখতে সংগ্রাম করে যাচ্ছিলেন কিম। যার ফলে নেতাদ্বয় স্থগিত পারমাণবিক চুক্তি ও ব্যর্থ হ্যানয় সফর নিয়ে যে আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন তা বেশ স্পষ্ট।

২০১২ সালে ক্ষমতায় আসার পর কোরিয়ায় শির এটাই প্রথম সফর। হ্যানয়ে ঠিক কী ঘটেছিল এবং এর থেকে সামনে এগোনোর জন্য কী করণীয় তা নিশ্চয়ই চীনা প্রেসিডেন্ট জানতে চাইবেন। জাপানের সম্মেলনে ট্রাম্পের সঙ্গে কোন তথ্য শেয়ার করবেন সেসব শি জানতে চাইতে পারেন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। 'বিবিসি নিউজ'

যদিও এই সপ্তাহের প্রথম দিকেই এই সাক্ষাৎটির কথা নিশ্চিত করা হয়েছিল। মার্কিন ভিত্তিক বিশ্লেষণ সাইট ৩৮ নর্থ-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক জেনি টাউন বলেছেন, এটি এখন ঘটছে বলে বিস্ময়ের কিছু নেই। দেশদুটির মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবেই এমন ঘটেছে।

জি-২০ সম্মেলনের ঠিক আগমুহুর্তে এমন সফর কিছু 'প্রতীকী মূল্য' রাখতে পারে, তবে এটি 'সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রের চেয়েও একটি বোনাস' হিসেবে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি।

উত্তর কোরিয়া এবং এর সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতার স্থিতিশীলতাই চীনের প্রধান লক্ষ্য এবং উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রও আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ। দুই কমিউনিস্ট নেতৃত্বাধীন দেশ বহু পুরোনো বন্ধু। কিন্তু গত দশকে পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাগুলোকে বেইজিং সমালোচনা করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য যুদ্ধ এবং উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যর্থ বৈঠক দেশ দুটিকে কাছে যাওয়ার আরও সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় বিশ্ব বাণিজ্যে অংশ নিতে না পারায় উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতির দশা ভঙ্গুর। দেশটির পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা মার্কিন বিদ্বেষ বাড়িয়ে তুলেছে।

এশিয়ার রাজনীতিতে দেশ দুটি অত্যন্ত শক্তিশালী, পারমাণবিক শক্তিধর এবং একই ক্ষেত্রে উভয়েই মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বী। উত্তর কোরিয়াকে বাণিজ্যিকভাবে পঙ্গু করে দিলেও চীনের সঙ্গে বাণিজ্যে তেমন কোনো ভাটা পরেনি, আর এমন সহযোগিতা দেশদুটিকে এশিয়ার জোট করে ফেলেছে। তাই এই সফর ট্রাম্পের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে বলেই অনেক বিশেষজ্ঞ বর্ণনা করেছেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!