• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষার ক্ষতি পোষাতে বিকল্প পথ বের করলো মন্ত্রণালয়


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ১২, ২০২০, ১১:৪৬ এএম
শিক্ষার ক্ষতি পোষাতে বিকল্প পথ বের করলো মন্ত্রণালয়

ঢাকা : করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘ ছুটির ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে দুটি বিকল্প নিয়ে ভাবছে শিক্ষা প্রশাসন। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে এগুলোর যে কোনো একটি বাস্তবায়ন করা হবে। আপাতত ক্ষতি নিরূপণের জন্য নির্দেশ রয়েছে সংশ্লিষ্টদের। 

বিকল্প দুটির একটি হলো, করোনা শেষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর সব ছুটি বাতিল করে নির্ধারিত সময়ে সিলেবাস শেষ করা। অন্যটি হলো, ২০২০ শিক্ষাবর্ষের ডিসেম্বরের পরিবর্তে আগামী বছরের (২০২১) ফেব্রুয়ারিতে বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ ও ফল প্রকাশ।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, ঈদুল ফিতরের ছুটি পর্যন্ত যেসব ক্লাস বাদ গেছে, এগুলো পুষিয়ে নেওয়া যাবে। কারণ, রোজার একটি লম্বা ছুটি বার্ষিক শিক্ষাপঞ্জিতে ছিলই। এর আগে ১৭ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত করোনাজনিত ছুটির কারণে (সাপ্তাহিকসহ নির্ধারিত ছুটি বাদ দিয়ে) ১৫ থেকে ২০ দিনের মতো ক্লাস বন্ধ ছিল। এই ক্লাসগুলো শিক্ষাবর্ষের সামনের ছুটিগুলো কমিয়ে, অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে সমন্বয় করা যাবে। এজন্য সিলেবাস কমাতে হবে না, শিক্ষাবর্ষ পরের বছরেও বর্ধিত করতে হবে না। তবে করোনার কারণে জুন-জুলাই বা আরও বেশি সময় বন্ধ থাকলে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে শিক্ষা ক্যালেন্ডারে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞরা জানান, সিলেবাস কমানোর বিপক্ষে তারা। প্রয়োজনে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে সিলেবাস শেষ করার পক্ষে মত তাদের। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, প্রতিটি শ্রেণির সিলেবাস প্রণয়ন করা হয় ওই শ্রেণির নির্ধারিত দক্ষতা ও জ্ঞান অর্জন করে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য। সিলেবাস কমানো হলে নির্ধারিত জ্ঞান অর্জন সম্ভব হবে না। এতে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হবে। এছাড়া তাড়াহুড়ো করে সিলেবাস শেষ করলে শিক্ষার্থীরা সেটি ধারণ করতে পারবে না, অনেকের পরীক্ষার ফলও খারাপ হবে। তাই তারা শিক্ষাবর্ষ দুই মাস বাড়ানোর পক্ষে।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, বিষয়টি নির্ধারণ করতে কয়েকটি সভা হয়েছে। সেখানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ছিলেন। মূলত শিক্ষার্থীদের সিলেবাস শেষ করতে দুটি প্রস্তাব এসেছে। কিন্তু কবে করোনার প্রকোপ শেষ হবে আর কবে স্কুল-কলেজ খুলবে, সেটির মোটামুটি একটা ধারণা না পেলে এগোনো যাচ্ছে না। এ বিষয়ে আরও বৈঠক হবে।

তিনি বলেন, যদি আগস্ট বা সেপ্টেম্বরে স্কুল খুলে দেওয়া হয়, তাহলে এনসিটিবির প্রস্তাব ছিল, চলতি শিক্ষাবর্ষকে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া। ফেব্রুয়ারিতেই বার্ষিক পরীক্ষাসহ অন্যান্য পরীক্ষা নেওয়া। এতে শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে পড়ে ও শিখে পরবর্তী শ্রেণিতে উন্নীত হতে পারবে। আর পরবর্তী শিক্ষাবর্ষ ২০২১ সালের মার্চ থেকে শুরু করা। আগামী শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন ধরনের ছুটি কমিয়ে ১০ মাসে শিক্ষাবর্ষ শেষ করা।

তবে বিকল্প প্রস্তাবও এসেছে। সেখানে ২০২০ সালের মধ্যেই সব পরীক্ষা শেষ করার কথা বলা হয়েছে। এতে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা ও ঐচ্ছিক ছুটি কমানোর কথা বলা হয়েছে। তবে কবে নাগাদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে পারে, সেটা মোটামুটি জানতে পারলে এনসিটিবি চূড়ান্ত প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেবে।

একটি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, করোনার কারণে এ পর্যন্ত কতগুলো ক্লাস বাতিল হয়েছে তার হালনাগাদ তথ্য চেয়েছে মন্ত্রণালয়। আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি। এসব তথ্য-উপাত্তের ওপর নির্ভর করে করোনা পরবর্তীতে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, অনির্ধারিত ছুটি পুষিয়ে নিতে আমরা কয়েকটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে বাস্তবায়ন করা হবে।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ ছুটি থাকবে ৩০ মে পর্যন্ত। এরপর করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা বা বন্ধ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হবে।

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!