• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্প মালিকদের কম দামে বিদ্যুৎ দিতে চায় সরকার


নিজস্ব প্রতেবদক জানুয়ারি ১৮, ২০১৯, ০৬:০৭ পিএম
শিল্প মালিকদের কম দামে বিদ্যুৎ দিতে চায় সরকার

ঢাকা: উৎপাদনের তুলনায় চাহিদা কম থাকায় শিল্প গ্রাহকদের কাছে গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে চায় সরকার। এজন্য দাম কমিয়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের পাশাপাশি ক্যাপটিভের ব্যবহার কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, সারাদেশে এখন ১৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে। এর বাইরে আরও দুই হাজার ৮০০ মেগাওয়াট ক্যাপটিভ পাওয়ার রয়েছে। তবে শীতকাল জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রর বেশিরভাগই রয়েছে বন্ধ। তবে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ থাকলেও ক্যাপাসিটি চার্জ ঠিকই দিতে হয়। এতে করে সরকারকে আর্থিক লোকসান গুণতে হচ্ছে। তাই সাশ্রয়ী কোনও ব্যবস্থার কথা ভাবা হচ্ছে।

পাওয়ার সেল সূত্র জানায়, শিল্প মালিকরা যে ক্যাপটিভে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তার পরিচালন ব্যয় ও উৎপাদন ব্যয় কেমন, অন্যদিকে গ্রিড থেকে যদি তারা বিদ্যুৎ নেয় সেই খরচ কত, ক্যাপটিভ থেকে তারা যে মানের বিদ্যুৎ নিচ্ছে সেই মানের বিদ্যুৎ গ্রিড থেকে দিতে হলে কীভাবে দেওয়া যাবে, যদি এই দুয়ের মধ্যে দামের পার্থক্য হয়- সেই পার্থক্য কতটুকু; সেই দাম যদি কমিয়ে আনা হয়, তাহলে কী হবে এসব বিষয়ে নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করছে পাওয়ার সেল।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসেন বলেন, প্রতিবেদন তৈরির পর এটি সরকারের কাছে উপস্থাপন করা হবে। এরপর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বড় পরিসরে আলোচনার জন্য বসা হবে। সরকার চাচ্ছে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ুক, শিল্পমালিকরা যাতে নিজেদের ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ ব্যবহার না করে গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ নেয়। কারণ গ্রিডে বিদ্যুৎ এখন সহজলভ্য।’

তিনি আরো বলেন, এই কাজ করতে গিয়ে কী কী প্রতিবন্ধকতা আছে- তারমধ্যে দাম একটি, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ একটি; এই বিষয়গুলো নিয়ে যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।

এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, সম্প্রতি এক বৈঠকে বড় গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বৈঠকে উপস্থাপিত এক পরিসংখ্যানে বলা হয়, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির হারের সঙ্গে নতুন সংযোগ দেওয়ার তাল মিলিয়ে না চললে উৎপাদন ক্ষমতা অব্যবহৃত থেকে যাবে।’

এখন শীত মৌসুমের শুরুতেই সকালের বিদ্যুতের চাহিদা ছয় হাজার মেগাওয়াটের নীচে নেমে যাচ্ছে। তাই নতুন শিল্প সংযোগ বৃদ্ধির কৌশল বের করতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ী কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করতে পারলে সুফল পাওয়া যেতে পারে। শিল্পক্ষেত্রে ট্যারিফ কিছুটা কমালে যদি অফ পিক সময়ে চাহিদা ৪০০ থেকে ৫০০ মেগাওয়াটও বেড়ে যায় তাহলে মোট প্রাপ্ত দাম বাড়বে কিনা সেজন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করে পর্যালোচনার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা করা হয়।

উল্লেখ্য, গ্রিডের বিদ্যুতের বেশিরভাগের ক্রেতাই গৃহস্থালির গ্রাহক এবং ছোট শিল্প মালিকরা। বড় শিল্প মালিকদের বেশিরভাগই গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ নেয় না। সঙ্গত কারণে শীতের সময় বিদ্যুৎকেন্দ্রকে বসে থাকতে হয়।এসময় এসি-ফ্যানের লোড থাকে না। এই সময়টিতে শিল্প গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করলে তা পিডিবির জন্য লাভজনক বলে বিবেচনা করা হয়।

বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিদ্যুতে সঠিক পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। যেখানে দেশের বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রকে বসে থাকতে হয়, সেখানে আরো হাজারখানেক ক্যাপটিভ বিদ্যুতের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে করে শিল্পে গ্রিডের বিদ্যুতের চাহিদা তৈরি হবে না। উৎপাদন আধিক্য নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!