• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শিশু খেতে চায় না? সহজ কিছু উপায় জেনে রাখুন-


স্বাস্থ্য ডেস্ক জুলাই ২৪, ২০১৮, ০৩:৩৪ পিএম
শিশু খেতে চায় না? সহজ কিছু উপায় জেনে রাখুন-

ঢাকা : তরল খাবারের পাশাপাশি শিশুর শক্ত খাবার খাওয়া শেখাটা শিশুর জন্য একটি নতুন পদক্ষেপ, যেটা দেখার জন্য প্রতিটা বাবা-মা ই উদগ্রীব হয়ে থাকে। বাস্তবতা একটু ভিন্ন প্রায়শঃই দেখা যায় শিশুরা শক্ত খাবার খাওয়াটাকে ভালভাবে নিতে পারে না কখনো কখনো খেতেই চায় না। যদিও আমরা জানি এটা খুবই স্বাভাবিক তারপরও যখন দেখা যায় শিশুরা বেলার পর বেলা বা দিনের পর দিন অথবা মাসের পর মাস খাবার নষ্টই করছে কিন্তু খাচ্ছে না তখন দুশ্চিন্তা কম বেশী সব পিতা-মাতাকেই গ্রাস করে, তাই তো আমাদের জানা প্রয়োজন-

১।শিশুরা কেন খেতে চায় না?
২। অল্প কিছুদিন খাবার পর কেন শিশুরা অনেক সময় খাওয়া বন্ধ করে দেয়?
৩। কিভাবে শিশুকে স্বাভাবিক খাবার খাওয়ানো সম্ভব?

১। শিশুরা কেন খেতে চায় না?
শিশুদের খেতে না চাওয়ার অনেক কারন রয়েছে যার কোন একটার বা একাধিক কারনের জন্য শিশুর খাবারের প্রতি অনিহা আসতে পারেঃ-
বয়সঃ শিশুর বয়স যখন ৬ মাস তখনই তাকে শক্ত খাবার introduce করানোর সঠিক সময়, তারপরও অনেক সময় শিশুদের জিহ্বার নড়াচড়া শিখতে সময় লাগে। আপনার শিশুকে আরও সময় দিন।
Tongue thrust reflex : শিশুরা সাধারনত মুখে কিছু ঢুকলেই চুষতে শুরু করে সেটা খাবার হলেও না হলেও। শিশুরা বড় হবার সঙ্গে সঙ্গে এটা চলে যায়, যদি না যায় Take Care of it.
খাবারের স্বাদ : নতুন খাবার নতুন স্বাদ, কোন শিশু পছন্দ করে আবার অনেক শিশু করে না।
Sensory : শিশুর বয়স ১ বছর হয়ে গেলেও যদি সে খাওয়া না শেখে সেক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় কারণটা হয়ে থাকে সে খাবারের স্বাদটাই পছন্দ করছে না অন্যভাবে বললে শিশুটি যে রকম খাবার আশা করছে সে রকম খাবার সে পাচ্ছে না। এ ধরনের শিশুরা খাবার দেখলেই বিরক্ত হয় এদের ক্ষেত্রে একটু বেশী মনযোগী হওয়া প্রয়োজন।
Co-Ordination : শিশুর খাবার প্রতি অনিহার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারন হতে পারে Co-Ordination. খেতে গেলে মুখ খোলা, খাবার গ্রহণ, মুখ বন্ধ করা, চিবানো, গিলে ফেলা এই সহজ কাজটি অনেক শিশুর জন্য সহজ নয়।(এই বিষয়ে অন্য কোন post এ details আলোচনা করবো।)
Baby Led Weaning : Sensory অথবা Co-Ordination problem ছাড়াও যদি আপনার শিশুর খাবার প্রতি অনিহা থাকে তা হলে আর Baby Food নয় টেবিলে একই সঙ্গে বসুন ওকে একই খাবার দিন।

২। অল্প কিছুদিন খাবার পর কেন শিশুরা অনেক সময় খাওয়া বন্ধ করে দেয়?
দাঁত- যদি আপনার শিশুর দাঁত বড় অথবা লাল হয়, হতে পারে এ জন্য শিশু খাবার সময় ব্যথা পাচ্ছে তাই খাচ্ছে না। খাবার ১৫-২০ মিনিট আগে Teething gel/gum দিয়ে দিন।
অসুস্থতা- অনেক সময় শিশুকে দেখে বোঝা যায় না ছোট খাট অসুস্থতা কিন্তু ওটাই তার খাবারের রুচি নষ্ট করে দেয়।
খাবারের স্বাদ- অনেক সময় শিশুরাই baby food পছন্দ করে না তাকে finger food দিন, একসঙ্গে আহার করুন।

৩। কিভাবে শিশুকে খাবারে অভ্যস্ত করাবেন?
১। সর্বপ্রথম এবং সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ শিশুকে প্লেট, চামচ ও খাবার দিয়ে বসিয়ে দিন, ওকে খেলতে দিন, নষ্ট করুক, নোংরা করুক এটাতে অভ্যস্ত হবার চেষ্টা করুন।
২। আপনার শিশুকে খাবার স্পর্শ করতে উৎসাহিত করুন। জোর করবেন না, ধমক দিবেন না। প্রয়োজনে বার বার দেখিয়ে দিন শিশুকে এটাকে খুব হালকা ভাবে নিতে দিন।
৩। যখনি আপনার সন্তান খাবার স্পর্শ করবে আপনি কিছুটা নিশ্চিন্ত হতে পারেন। ও খাবার ছাড়াবে, খেলবে, বেছে বেছে খাবে, খাবারের স্বাদ নেবার চেষ্টা করবে। নিজেকে খুব শান্ত রাখুন শিশুকে হালকা ভাবে উৎসাহিত করুন।
৪। শিশু যদি খাবার নিয়ে শুধু খেলতেই থাকে মুখে একদমই না নেয় আপনি বার বার দেখিয়ে দিন মুখে দেবার জন্য, প্রয়োজনে সুন্দর একটা চামচ দিন, বিরক্ত হবেন না।
৫। শিশুর হাতে খেলনা হিসাবে গাঁজর, শশা এই জাতীয় জিনিস দিন, ও খেলতে খেলতে মুখে দিয়ে ফেললে আস্তে আস্তে খাবারের স্বাদ বুঝতে পারবে।
৬। শান্ত থাকুন এবং ধৈর্যের সঙ্গে এভাবেই চেষ্টা করুন ৭-১৫ মাস পর্যন্ত।
৭। শিশু যদি খাবারের দিকে মনোযোগ দেয়, না খেলেও সেটা একটা ভাল দিক। পিতা-মাতা হিসাবে আমাদের যতই হতাশা থাকুক খাবার টেবিলে অভিনয় করতে হলেও হাসিখুশি থাকুন, শিশুর কাছে কিছু আশা করবেন না ওকে সময় দিন।

এতেও কোন উপকার না পেলে নিচের পদ্ধতিগুলো পালন করুনঃ-
১। দাঁত ব্রাশ করান- ব্রাশ করালে শিশুর জিহ্বার নাড়াচাড়া বৃদ্ধি পায়, যেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ । শিশু যদি ব্রাশ করতে না চায় অল্প সময় করান, বার বার করান প্রয়োজনে দিনে ৩ বার করান।
২। শিশুকে বিভিন্ন শুকনো খাবার দিয়ে খেলতে দিন।
৩। জিহ্বার ব্যায়াম করান।

শিশুরা সাধারণত ৮-১১ মাস বয়সের মধ্যেই শক্ত খাবার খেতে শিখে যায়, এই সময়ের মধ্যেই শিশুকে খাবারে অভ্যস্ত করে ফেলাটাই ওর জন্য মঙ্গল। এই পদ্ধতিগুলো অনুসরন করলে আশাকরি উপকৃত হবেন।
সোনালীনিউজ/আরজে

Wordbridge School
Link copied!