• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শেখ রেহানার যাপিত জীবন


সুজাত মনসুর সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮, ০৯:১৪ পিএম
শেখ রেহানার যাপিত জীবন

ঢাকা : বঙ্গবন্ধু পরিবারের কনিষ্ঠ মেয়ের নাম রেহানা। মায়ের ডাক নাম রেণুর প্রথম অক্ষর আর বড়বোন হাসিনার শেষের অক্ষর অক্ষুন্ন রেখে নাম। পারিবারিক পদবী যুক্ত হয়ে পরিপুর্ণ নাম শেখ রেহানা। অতি আদরের ছোট ভাই রাসেলের কাছে যিনি ছিলেন ‘দেনা’ আপা। রাসেলের দেনা আপা কিংবা বাবা-মায়ের আদরের রেহানা বা মুন্নার জন্ম এমন ও বেড়ে ওঠা এমন এক সময়ে যখন বঙ্গবন্ধু ধীরেধীরে হয়ে উঠছেন বাঙালি জাতির সকল আশা-ভরসার মুর্তপ্রতীক। বাংলা ও বাঙালির মুক্তির প্রতিকৃত। জেল-জুলুম-নির্যাতন যার নিত্যসঙ্গী। শেখ রেহানা যখন বুঝতে শিখেছেন, তখনই দেখেছেন বাবা শেখ মুজিব বাঙালি জাতির শোষণমুক্তির জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করতে গিয়ে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর কারাগারে। কারাগারই যেন তার মুল বাড়ি। আর নিজ বাড়িতে তিনি যেন ক্ষণিকের অতিথি। ঈদ-পার্বনে প্রায়ই তিনি কারাগারে। যদিওবা কখনো তিনি বাড়িতে থাকার সুযোগ পেতেন তখন বঙ্গবন্ধু পরিবারে সে বছরের ঈদ হত সবচেয়ে সেরা ঈদ। শেখ রেহানা এক স্মৃতিচারনে লিখেছেন, “ছোটবেলায় দেখতাম, আব্বা প্রায়ই থাকতেন জেলখানায়। আমদের কাছে ঈদ ছিল তখন, যখন আব্বা জেলখানার বাইরে থাকতেন, মুক্ত থাকতেন। আব্বাও জেলের বাইরে, ঈদও এলো এমন হলে তো কথাই নেই। আমদের হতো ডাবল ঈদ।”

বঙ্গবন্ধুর এমনই কপাল তিনি কোন মেয়ের বিয়েতেই উপস্থিত থাকতে পারেননি। বড়মেয়ের বিয়ের সময় জেলে আর ছোটমেয়ের বিয়ের আগেই তো ঘাতকের হাতে জীবন দিতে হল। আর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেসা রেণু নিজ হাতে বড়মেয়ে হাসুর বিয়ে দিতে পারলেও ছোট মেয়ের বিয়ে দিতে পারেননি ঘাতকের হাতে নিহত হবার কারনে। শেখ হাসিনার সন্তান জয়-পুতুল নানা-নানী-মামাদের আদর পেলেও, শেখ রেহানার সন্তান ববি, টিউলিপ, রূপন্তি ত্াঁদের আদর থেকে বঞ্চিত হয়েছে। পরিবারের বড় জামাতা ড. ওয়াজেদ মিয়া শ্বশুড়-শ্বাশুড়ির আদর-আপ্যায়ন পেলেও, ছোট জামাতা ড. শফিক সিদ্দিক তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

শেখ রেহানার বিয়ে সম্পন্ন হয় লন্ডনের কিলবার্নে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সুখ দুঃখের সাথী, বঙ্গবন্ধুর ফুফাতো ভাই মোমিনুল হক খোকার বাড়িতে ১৯৭৭ সালের জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে ড. শফিক সিদ্দিক-এর সাথে। শফিক সিদ্দিক তখন বিলেতের সাউদাম্পটন ইউনিভার্সিটিতে উচ্চ শিক্ষারত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় থাকাকালীন তিনি সেখানে এসেছিলেন। শেখ রেহানাও বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে শহীদ হবার পর বড়বোন শেখ হাসিনার সাথে জার্মান থেকে দিল্লি চলে যান এবং সেখান থেকে পরে তাদের প্রিয় খোকা চাচার নিকট লন্ডনে এসে বসবাস শুরু করেন। শফিক সিদ্দিক-এর পরিবার ও শেখ রেহানাদের পরিবার ছিলেন পুর্ব পরিচিত এবং ১৯৭৪ সালেই পারিবারিকভাবে তাঁদের বিয়ের পাকা কথা হয়েছিল। সব ঠিকঠাক থাকলে শেখ রেহানা জার্মানি থেকে ফিরে আসার পর বিবাহের কাজটি সম্পন্ন হবার কথা ছিল। কিন্তু পনেরোই আগস্টের হত‍্যাকান্ডের পর দেশে যাওয়া এবং বেঁচে থাকাই যেখানে অনিশ্চিত হয়ে যায়, সেখানে আবার বিয়ে? তারপরও জীবন থেমে যায় না। জীবন নদীর মতো বহমান। কিন্তু একটি কথা বলতেই হয় বঙ্গবন্ধু পরিবারের সবচেয়ে দুঃখী সন্তানের নাম হলো ‘রেহানা’। ছোট ভাই রাসেল ছাডা সবার নিকট যে ছিলেন আদরের 'মুন্না'। বড়বোনের বিয়েত বাবা উপস্থিত না থাকতে পারলেও মা, ভাই, চাচা ও তিনি নিজেসহ আত্মীয় স্বজন উপস্থিত ছিলেন। ভাইদের বিয়েতে পিতা মুজিব উপস্থিত থেকে আশীর্বাদ করেছেন। কিন্তু শেখ রেহানার বিয়েতে একমাত্র জীবিত বোন টিকেটের টাকা যোগাড় করতে পারেননি বলে অনুপস্থিত ছিলেন। এ প্রসঙ্গে শফিক সিদ্দিক লিখেছেন, “৮৩ সালে তখন হাসিনা আপা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে ঢাকায় অবস্থান করছেন। ঐ সময়ে আমি আমার পিএইচডি থিসিসের কাজে ঢাকা গিয়েছিলাম। একদিন হাসিনা আপার বাসায় উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলাম, উনি হাশেম ভুইয়াঁ নামের একজন কর্মীর অসুস্থ মেয়েকে লন্ডন পাঠাবার ব্যবস্থা করছেন। তখন হাসিনা আপা বেশ দুঃখ করে আমাকে বললেন, ‘শফিক দেখ, আজকে আল্লাহ্্র ইচ্ছায় আমি আমার একজন কর্মীর অসুস্থ মেয়েকে বিদেশ পাঠাতে সাহায্য করতে পারি। কিন্তু সেদিন আমার একমাত্র বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে দিল্লী থেকে লন্ডন যেতে পারিনি, কেবল টিকেটের টাকার অভাবে।” এরচেয়ে বড় কষ্ট ও দুঃখের ঘটনা কারো জীবনে হতে পারে না।

এরপরও দুঃখ কষ্ট তাঁকে, তাদের দু‘বোনের পরিবারকে তাড়া করে ফিরেছে। এখনো তো বাবা মা ভাই হারানোর বেদনা তাঁদের তাড়া করে বেডায়। যদিও পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে তারা অনেকটাই এখন সুখের পরশ পাচ্ছেন। তবে একটা বিষয়ে তাদের চরম শত্রুও স্বীকার করতে বাধ্য হবে, পারিবারিক শিক্ষা, বিশেষ করে মায়ের দেয়া শিক্ষা তাঁদেরকে ধৈর্য, সাহস, বিচক্ষণতা, অধ‍্যাবসায়, ত‍্যাগ, নির্লোভতা চলার পথকে সুগম করেছে। বিজয়ী করেছে। পুরোপুরি সুখী করতে না পারলেও স্বস্তি দিয়েছে। প্রেরণা যুগিয়েছে যুদ্ধজয়ের।

বিয়ের পর শফিক সিদ্দিক ও শেখ রেহানাকে নানামুখি সংকট মোকাবেলা করে অগ্রসর হতে হয়েছ। সে সময় আর্থিক কষ্টটাই ছিল প্রবল। বিয়ের পরপরই স্বামীর সাথে চলে আসেন সাউদাম্পটন ইউনিভার্সিটিতে। মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নেন আরেক বাঙালি পরিবারের সাথে রুম ভাগাভাগি করে। আর্থিক অনটনের কারণে চাইলেই একক বাড়ি ভাড়া করে থাকার সামর্থ্য তাঁদের ছিল না। তাই শেখ রেহানাও বিভিন্ন জাযগায় চাকরির চেষ্টা করছিলেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক‍্যান্টিনেও কর্মখালি দেখে চেষ্টা করেছেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়নি। নববিবাহিতা স্ত্রীর চাকরি করার বিষয়টি মন থেকে না চাইলেও শফিক সিদ্দিক রাজী হয়েছিলেন দুটি কারণে। (এক) শেখ রেহানা প্রায়ই একা বাসায় থাকতেন এবং সার্বক্ষণিক মা, বাবা, ভাইদের ছবি সামনে নিয়ে কান্নাকাটি করতেন। ফলে শফিক সিদ্দিকের সন্দেহ জেগেছিল, এভাবে একা থাকতে থাকতে শেখ রেহানার মানসিক সমস্যা যদি দেখা দেয়। সুতরাং কাজে থাকলে মানুষের সান্নিধ্যে ও ব‍্যস্ত থাকার কারণে পনেরোই আগস্টের ভয়াবহ স্মৃতি কিছুটা হলেও ভুলে থাকতে পারবেন। (দ্বিতীয়ত) কিছুটা হলেও আর্থিক সমস্যার সমাধান হবে, এই বিবেচনায় তিনি স্ত্রীর চাকরির ব‍্যাপারে সম্মত হন। কিন্তু তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক‍্যান্টিনের কাজের ধরণ ব‍্যাখ‍্যা করে স্ত্রীর অভিব‍্যক্তি জানতে চেয়েছিলেন এভাবে, তুুমি কি জান চাকরিটাতে তোমাকে ছাত্রদের খাবার পরিবেশন করতে হবে এবং সাথে ধোয়া-মোছার কাজও করতে হবে? এই চাকরি কি তুমি করবে?”

উত্তরে শেখ রেহানা বলেছিলেন, “কেন করব না? এরকম কাজতো এদেশে সবাই করে।” একজন রাষ্ট্রপতির মেয়ে হয়েও কাজটি করতে কুন্ঠাবোধ না করায় শফিক সিদ্দিক অত্যন্ত অবাক ও খুশি হয়েছিলেন।

এই যে সবকিছুকে স্বাভাবিক ও সহজ করে গ্রহণ করা এবং যে কোনো পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেয়ার মানসিকতা তাও পারিবারিক ঐতিহ্যগত শিক্ষা, যা মা ও বাবার নিকট থেকে পাওয়া। এরপরের জীবন সাউদাম্পটন থেকে লন্ডনে প্রত‍্যাবর্তন। যাপিত জীবনের আরেক পর্যায়।

লন্ডনে এসে স্বামীসহ শেখ রেহানা আবারও উঠেন মোমিনুল হক খোকার বাড়িতে। ইতোমধ্যে তিনি ও শফিক সিদ্দিক অনেক চেষ্টা তদবির করে চাকরি জোটাতে সক্ষম হন। খুঁজে নেন ভাড়ায় হলেও একটা ছোট্ট নীড়। কেননা বেঁচে থাকা ও জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যেতে হলে প্রথমেই যে দুটি জিনিসের প্রয়োজন তাহলো বাসস্থান ও জীবিকা নির্বাহের জন্য অর্থের জোগান। শুরু হয় ঘুরে দাঁড়ানোর পালা, ব‍্যক্তিগত, পারিবারিক ও রাজনৈতিক পরিসরে। ভাড়া বাুিড় থেকে নিজের বাড়িতে ওঠে আসেন তারা। শফিক সিদ্দিক চাকরি করার পাশাপাশি উচ্চ শিক্ষার কাজটিও চালিয়ে যেতে থাকেন। শেখ রেহানা চাকরি নেন একটি লাইব্রেরীতে। লন্ডনেই জন্ম হয় ছেলে রেজোয়ান মুজিব সিদ্দিক ও বড়মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের। ছোট মেয়ের রূপন্তির জন্ম ব্রæনাইতে। উল্লেখ্য, ব্রæনাইতে কর্মরত অবস্থায়ই ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে শফিক সিদ্দিক পঙ্গুত্ব বরণ করে দীর্ঘ কয়েক বছর কর্মজীবন থেকে দুরে ছিলেন।

জীবনযুদ্ধে কিছুটা স্থিত হয়েই শেখ রেহানা শুরু করেন রাজনৈতিক যুদ্ধের প্রস্তুতি। বড়বোন শেখ হাসিনার প্রতিনিধি হয়ে যোগদান করেন সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে অনুষ্ঠিত সর্ব ইউরোপীয় বাকশালের সম্মেলনে ১৯৭৯ সালের ১০ই মে । আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে অত‍্যন্ত দৃঢ়তার সাথে উত্থাপন করেন পনেরোই আগস্ট নারকীয় হত‍্যাকান্ডের বিচারের দাবি। যা উপস্থিত সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। স্টকহোম থেকে ফিরে স্বামী শফিক সিদ্দিককে সাথে নিয়ে গড়ে তোলেন সর্ব ইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদ।‌ সভাপতি করা হয় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বঙ্গবন্ধুর আইনজীবী স‍্যার টমাস উইলিয়াম কিউসি এমপিকে। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব অর্পিত হয় জাতীয় চার নেতার অন‍্যতম ক‍্যাপ্টেন এম. মনসুর আলীর বড়ছেলে ড. মোহাম্মদ সেলিমের ওপর। প্রধান পৃষ্ঠপোষক করা হয় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের মধ্যে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তাদের মধ্যে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি মরহুম গৌস খান ও বর্তমান সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ অন্যতম। সর্ব ইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে ১৯৮০ সালের ১৬ই আগষ্ট পুর্ব লন্ডনের ইয়র্ক হলে অনুষ্ঠিত পনেরোই আগস্ট বঙ্গবন্ধু সহ সকল শহীদদের স্মরণে শোকসভার মাধ্যমে শেখ হাসিনার অভিষেক হয় পুনরায় সক্রিয় রাজনীতিতে। একই সময়ে গঠিত হয় বঙ্গবন্ধু হত্যা তদন্তে আন্তর্জাতিক কমিশন। কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন স‍্যার টমাস উইলিয়াম এমপি কিউসি। সদস্য সচিব হন সলিসিটর অব্রে রোজ। এছাড়া কমিশনের অন‍্যান‍্য সদস্য ছিলেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী সন ম‍্যাকব্রাইট, লেবার পার্টির তৎকালীন আইনবিষয়ক মুখপাত্র জেফরি টমাস কিইউসি এমপি। সর্ব ইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন গঠনে শেখ রেহানা অন‍্যতম মুখ‍্য ভূমিকা পালন করলেও তিনি আড়ালেই থেকে যান এবং এখনো তিনি আড়ালে থেকেই শেখ হাসিনার পাশাপাশি সবক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। যেভাবে বঙ্গমাতা বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেসা সবসময় আড়ালে থেকেই বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি আমাদের মুক্তিসংগ্রামে ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

(তথ্যসূত্রঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ, ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া এবং দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় ও তোমাদের ভালবাসা ফিরিয়ে এনেছে মোরে, ড. শফিক সিদ্দিক)

যুক্তরাজ্য, ১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮

লেখকঃ যুক্তরাজ্য প্রবাসী লেখক-সাংবাদিক।

[email protected]

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব ভাবনার প্রতিফলন। সোনালীনিউজ-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে লেখকের এই মতামতের অমিল থাকাটা স্বাভাবিক। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য সোনালীনিউজ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না। এর দায় সম্পূর্ণই লেখকের।

Wordbridge School
Link copied!