• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকার চেষ্টা করব


নিজস্ব প্রতিবেদক ও বগুড়া প্রতিনিধি ডিসেম্বর ১৫, ২০১৮, ১১:৩৬ পিএম
শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকার চেষ্টা করব

ঢাকা : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘খানাখন্দকে ভরা অসমতল মাঠে নির্বাচন করতে হচ্ছে। আমাদের ওপর সংঘাত-হামলা-মামলা হচ্ছে। একদিকে সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র নিয়ে আক্রমণ করছে, অন্যদিকে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এখনো নির্বাচনের মাঠে রয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত আমরা মাঠে থাকার চেষ্টা করব। কারণ জনগণ আমারদের সঙ্গে রয়েছেন। ৩০ ডিসেম্বর ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে জনগণই এ দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবেন।’

শনিবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে বগুড়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে বগুড়া শহরের এডওয়ার্ড পৌর পার্কে উডবার্ণ পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলেন হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ জেলার ঠাকুরগাঁর পাশাপাশি বগুড়া-৬ (সদর) আসনেও প্রার্থী হয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘রাষ্ট্রযন্ত্র আর প্রশাসনকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ সরকার আবারও একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়। সারা দেশে এখন ভয়াবহ যুদ্ধাবস্থা। নির্বাচনের কোনো সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সকলের জন্য সমান সুযোগ) নেই। সব দলের জন্য সমতল ও সমান্তরাল মাঠ নেই। রাজনীতির ইতিহাসে নজিরবিহীন অসম নির্বাচন হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘দু-এক দিনের মধ্যে ইসিতে গিয়ে সারা দেশে মামলা-হামলার পরিস্থিতি তুলে ধরা হবে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) একটা ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত হয়েছে। আমার ওপর হামলা হয়েছে। ড. কামাল হোসেন-আসম আবদুর রবের মতো নেতার ওপর হামলা হয়েছে। ইসি নানাভাবে অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি। নির্বাচন কমিশন অসহায়। তারা সরকারের নির্দেশের বাইকে কোনো কাজ করতে পারছেন না। সরকারি সংস্থা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের নির্দেশ মানছে না। কমিশন নিজেদের অসহায়ত্বের কথা স্বীকার করেছেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সরকারের হয়ে কাজ করছে, সরকারের পক্ষে ভোট চাইছে, এত কিছুর পরও আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে আছি, শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকব। কারণ ৩০ ডিসেম্বর ভোট কেন্দ্রে উত্তাল জনতা সকল অপশক্তি রুখে দেবে। সেদিন ভোট বিপ্লব সূচিত হবে।’

নির্বাচনের অনুক‚ল পরিবেশ না থাকলে শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকার কৌশল জানতে চান সাংবাদিকেরা। জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার ত্রাস সৃষ্টি করে, ভয় দেখিয়ে জনগণকে ভোটদানে বিরত রাখতে চায়। বিএনপির কর্মীদের কৌশল হবে জনগণের কাছে যাওয়া। ভীতি দূর করে সাহস যুগিয়ে জনগণকে ভোট কেন্দ্র পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া। জনগণ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে ভোট বিপ্লব হবে। স্বৈরতন্ত্রের পতন হবে, গণতন্ত্র ফিরে আসবে।’

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো গণতান্ত্রিক দেশে গণতন্ত্র বিপন্ন হলে, স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিলে বিশ্বের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর দায়িত্ব রয়েছে, বিপন্ন দেশটিতে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে ভ‚মিকা রাখা। বিশ্বের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর কাছেও আমরা সেই জোরালো ভ‚মিকা রাখার বিষয়টিই প্রত্যাশা করি।’

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বগুড়ায় বিএনপিতে কোনো কোন্দল নেই। তিনি দলীয় প্রধানের অবর্তমানে সেখানে ধানের শীষের প্রার্থী নন, তার প্রতিনিধি হয়ে লড়ছেন। দলের প্রতিষ্ঠাতার জন্ম ভূমিতে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে ধানের শীষের প্রতি উত্তাল জনতার বাঁধভাঙা সমর্থন পাচ্ছেন। কোনো অপশক্তিই জনতার এ বিপ্লব রুখতে পারবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন তদারকির জন্য আমরা বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি করেছিলাম। কিন্তু নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে। এটা খুব একটা ‘ইফেক্টিভ’ হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুর রহমান মান্না ছাড়া বগুড়ার অন্য ছয়টি আসনে ধানের শীষের প্রার্থীরা ছিলেন। এছাড়া খিালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও বগুড়া পৌরসভার মেয়র একেএম মাহবুবর রহমান, জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, আলী আজগর তালুকদার হেনা, মাহবুবর রহমান বকুলসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

পরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শহরতলির সাবগ্রাম বাজার থেকে দ্বিতীয়দিনের মতো ধানের শীষের প্রচারণা শুরু করেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!