শেষ রক্ষা হলো না সেই বানরের

মৌলভীবাজার: এক শিশু নিহত ও ৩০ জন আহত করার জন্য দায়ী একটি বানরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে । ‘গণ আদালত’ বসিয়ে বানরটির বিচারের রায় দেন জনগণ। গত মঙ্গলবার মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বানরটির আক্রমণে তানিয়া বেগম (৮) নামে এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলেও পরে সে মারা যায়। এছাড়া গত এক মাসে বানরটি সেলিম আহমদ (৮), মারুফ আহমদ (১০), বিউটি বেগম (১১) ছাড়াও রোকনপুর, বড়খলা, কাঠালতলী ও গৌড়নগর এলাকার শিশুসহ প্রায় ২৫ জনকে আঁচড়ে-কামড়ে আহত করেছে। আহতদের বেশির ভাগের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।

এদিকে, বানরটির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে বন বিভাগের দ্বারস্থ হয় ক্ষতিগস্তদের পরিবার। কিন্তু গত একমাসে জন্তুটির অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে ওঠে এলাকার লোকজন। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকালে ঘুমের ওষুধ মেশানো ভাত খেতে দেয় স্থানীয়রা। সারা দিন ধাওয়া করে বিকেলে বানরটিকে ধরে এলাকাবাসী। পরে গণ আদালতে তার মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়।

জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নে কয়েকটি চা বাগান ও বনাঞ্চল রয়েছে। পাহাড় ও চা বাগানে অনেক বানরের বাস। এরা অনেক সময় খাবারের সন্ধানে দলবলে লোকালয়ে এসে খেতের ফসল খেয়ে কিংবা নষ্ট করে চলে যায়। কিন্তু মানুষের ওপর কখনো আক্রমণ করেনি। কিন্তু গত এক মাস আগে গলায় লাল রঙের রশি বাধা অবস্থায় বানরটি লোকালয়ে এসে তাণ্ডব শুরু করে। বানরটি হঠাৎ করে মানুষের ওপর আক্রমণ করত।

ভোরবেলা, দুপুর ও সন্ধ্যায় একা পেলেই লোকজনের ওপর হামলা করেছে। বেশিরভাগ আক্রমণের শিকার হচ্ছে স্কুলগামী শিশুরা। বিভিন্ন সময় বানরটি যেসব শিশুকে আক্রমণ করেছে তাদের অবস্থা গুরুতর। বানরটির আক্রমণ থেকে পরিত্রাণ পেতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এনাম উদ্দিন গত বৃহস্পতিবার বড়লেখা উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বন বিভাগের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও কোনো সমাধান মেলেনি। তবে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা এনামুল হক এলাকায় গিয়ে ভুক্তভোগী লোকজনকে বানরটি মেরে ফেলার নির্দেশ দেন।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ