• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক সংকট চরমে, এবার সংসদ স্থগিত


আন্তর্জাতিক ডেস্ক অক্টোবর ২৭, ২০১৮, ১১:১৬ পিএম
শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক সংকট চরমে, এবার সংসদ স্থগিত

ঢাকা : প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্তের পর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরিসেনা এবার দেশটির সংসদ স্থগিত ঘোষণা করলেন। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহেকে বরখাস্তের একদিনের মাথায় আজ শনিবার জাতীয় সংসদ আগামী ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করলেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা।

দেশটির মন্ত্রিসভার মুখপাত্র রাজিথা সেনারত্নে বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট দেশের সংসদ স্থগিত করেছেন।‌‌’

প্রেসিডেন্টের সংসদ স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রকাশের কিছু সময় আগেও সংবাদ সম্মেলন করেন রনিল বিক্রমাসিংহে। তিনি তাঁর দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সংসদ আহ্বানের জন্য স্পিকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বিক্রমাসিংহে তাঁকে বরখাস্তের এই সিদ্ধান্তকে ‌‘অসাংবিধানিক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি এখননো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বহাল রয়েছেন বলে দাবি করেছেন। বিক্রমসিংহে বলেন, ‘একমাত্র জাতীয় সংসদই পারে আমাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে।’ শুক্রবার রাতে অপর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সংসদে প্রধানমন্ত্রী বিক্রমসিংহের দলের সংখাগরিষ্ঠতা থাকায় প্রেসিডেন্ট এই স্থগিতাদেশ দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।

শ্রীলঙ্কার সংবিধান মতে, দেশটিতে ফরাসি সরকার পদ্ধতিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী থাকেন এবং প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

শুক্রবার রাতে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা।

মাহিন্দা রাজাপক্ষে প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে শুক্রবার রাতে শপথও নিয়েছেন। শপথ নেওয়ার পর তিনি মন্দিরে গিয়ে পূজাঅর্চনা করে এসেছেন। এখন কার্যত দেশটিতে দুজন প্রধানমন্ত্রী হলেন বলে দাবি করা হচ্ছে।

দ্বীপ রাষ্ট্রটির গণমাধ্যম ও অর্থমন্ত্রী মঙ্গলা সামারাভিরা এই বরখাস্তের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে একে ‘গণতন্ত্রবিরোধী অভ্যুত্থান’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

ক্ষমতাসীন জোটের অন্তর্কোন্দলে পড়ে দেশটির অর্থনৈতিক অগ্রগতিও বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল বলে বিশ্লেষকরা বলে আসছেন।

বিক্রমসিংহের ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি) ও সিরিসেনার ইউনাইটেড পিপলস ফ্রিডম অ্যালায়েন্সের (ইউপিএফএ) মধ্যে টানাপড়েন সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি বিক্রমসিংহের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্টকে হত্যাচেষ্টার ঘটনার তদন্তে অবহেলার অভিযোগ এনে জোট ছাড়ার হুমকি দেয় প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার জোট ইউপিএফএ।

কয়েকদিন আগে ওই হত্যাচেষ্টায় সিরিসেনা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সংশ্লিষ্টতার সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বলে খবর বের হয়। যদিও কলম্বো ও দিল্লির কোনো দিক থেকেই এমন দাবির সত্যতা অস্বীকার করা হয়।

দ্বীপদেশটির রাজনীতি ও সরকারে প্রতিবেশী ভারতের প্রভাব রয়েছে বলে বলা হয়ে থাকে। শ্রীলঙ্কার নেতৃত্বে এমন নাটকীয় পরিবর্তনের ঘটনায় রয়টার্সের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে কোনো জবাব দেওয়া হয়নি।

চীনের সঙ্গে রাজাপক্ষের সখ্যতার বিষয়টি ভারত সব সময় নজরে রাখে। রাজাপক্ষে ২০০৯ সালে তাঁর দেশকে ২৬ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের হাত থেকে রক্ষা করার পর দেশ পুনর্গঠনে চীনের কাছ থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আনেন।

সেসব বিনিয়োগের ফলে কঠিন ঋণের জালে আটকে পড়ে শ্রীলঙ্কা। শেষমেশ দেশটির কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দক্ষিণাঞ্চলের বন্দরটি চীনের নিয়ন্ত্রণে দিতে বাধ্য হয় শ্রীলঙ্কা। এ নিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে চরম সমালোচনার মুখে পড়ে শ্রীলঙ্কা।

সোনালনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!