• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংঘাত এড়াতে পিছু হটল বিএনপি


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৮, ০৩:১০ পিএম
সংঘাত এড়াতে পিছু হটল বিএনপি

ঢাকা : সহিংসতা এড়াতে আবারো জনসভার তারিখ পরিবর্তন করেছে বিএনপি। দলটির নেতারা বলছেন, পুলিশের শঙ্কা একই দিন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জনসভা করলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। বিএনপি সংঘর্ষ চায় না।

বিএনপি চায় একটি শান্তিপূর্ণ জনসভা করে দলের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত জনগণকে জানানোর পাশাপাশি কর্মসূচি ঘোষণা করতে। এজন্যই জনসভার তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপি।

এদিকে বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে দলীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনাদের সভাটা কবে হবে, এটা তো এখনো ঠিক হয়নি। সভার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এখনো অনুমতি দেয়নি। জোর করে ২৯ সেপ্টেম্বর সভা করবেন? কেন এই জেদাজেদি? ১০ বছরে ১০ মিনিটও রাস্তায় নামতে পারেননি। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে খুশি করার জন্য লাফালাফির পরিণতি শুভ হবে না।

২৯ সেপ্টেম্বর বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টি কোনো সমাবেশ নয়- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নেই। আমাদের নেত্রী পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন, আমাদের কর্মসূচি আমরা দেব। তারা সভা করবে, আমরা পাল্টা করব দেশের মানুষকে আতঙ্কে রেখে- এ ধরনের রাজনীতি আমাদের প্রয়োজন নেই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী অক্টোবর মাসের ১ তারিখ থেকে সপ্তাহব্যাপী রাজধানীসহ দেশব্যাপী গণসংযোগ করব। আমরা ভোটারদের কাছে যাব, বাড়িতে বাড়িতে যাব। রাস্তায় অবরোধ করে মানুষের জন্য দুর্ভোগ হবে এমন কোনো সভা সমাবেশ করব না।

সমাবেশের তারিখ পেছানোর বিষয়ে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বিএনপি সংঘাত চায় না। তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চায়। বিএনপি নিজে থেকে জনসভার তারিখ পরিবর্তন করছে না। বরং পুলিশের অনুরোধে বিএনপি দ্বিতীয় দফা জনসভার তারিখ পরিবর্তন করেছে। কারণ একই দিন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশ হলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করে পুলিশ।

আলাল বলেন, মহাসচিব বলেছেন জনসভা থেকে আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রামের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। পাশাপাশি থাকবে নীতিনির্ধারণী বিষয়ে জনগণকে জানানো।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ অন্যান্য নেতা উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া হয়নি। কারণ বিএনপি একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মাধ্যমে নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত ও কর্মসূচি ঘোষণা করতে চায়। এ অবস্থায় পুলিশের অনুরোধ ও সহিংসতা এড়াতে বিএনপি রোববার জনসভার জন্য অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে। এখন দেখা যাক পুলিশ কী করে। তবে বিএনপি জনসভা করতে চায়।

এদিকে শনিবারের জনসভার অনুমতির বিষয়ে জানতে গতকাল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাছে গিয়েছিলে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। ডিএমপি তাদেরকে শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে না করে রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠান করার কথা বলে। শনিবার না দিলে রোববার বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার অনুমতি চেয়ে আবেদন করে।

এদিকে ডিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন কোরেশি গতকাল বিকালে গণমাধ্যমকে বলেছেন, বিএনপির পক্ষ থেকে শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু সার্বিক বিবেচনায় ওই দিন সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

শাহাবুদ্দিন কোরেশি বলেন, একটি সমাবেশের অনুমতি দিতে হলে পারিপার্শ্বিক অনেক কিছু বিবেচনায় নিতে হয়। গোয়েন্দা প্রতিবেদনও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে ওই দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা নয়া পল্টনে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া যায়নি।

ডিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার বলেন, বিএনপিকে শনিবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে কর্মসূচি পালন করতে বলা হয়েছিল; তবে তা না করে তারা রোববার সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে। সে ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জনসভা না করার বিষয়ে জানতে চাইলে এ্যানী বলেন, বিএনপি চায় জনসভা করতে। তাই উন্মুক্ত স্থান দরকার। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জনসভার জন্য ভালো জায়গা। বিএনপি এজন্য পিছু হটছে। ডিএমপি তাদের সমাবেশের অনুমতি দেবে বলেও প্রত্যাশা করেন বিএনপির এই নেতা।

গতকাল নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজধানীতে জনসভা করতে চায় বিএনপি। এই সময়ের মধ্যে পুলিশ যেদিন অনুমতি দেবে সেদিন তারা জনসভা করবেন। এ লক্ষ্যে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!