• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
শেখ হাসিনার হাতে যোগ্য ও ত্যাগী নেত্রীদের তালিকা

সংরক্ষিত মহিলা আসনে ব্যাপক রদবদলের আভাস


বিশেষ প্রতিনিধি জানুয়ারি ৫, ২০১৯, ১০:২২ পিএম
সংরক্ষিত মহিলা আসনে ব্যাপক রদবদলের আভাস

ঢাকা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সংরক্ষিত মহিলা আসনের মনোনয়ন নিয়েও চলছে নানা গুঞ্জন। সংসদের প্রথম অধিবেশনেই সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যদের যোগদান নিশ্চিত হতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের যোগ্য ও ত্যাগী নেত্রীদের তালিকা তৈরি করছেন।

দলীয় সূত্র জানায়, এবারের সংরক্ষিত আসনে ব্যাপক রদবদল হতে পারে। সংসদের প্রথম অধিবেশনেই সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্যদের চূড়ান্ত করা হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে দশম জাতীয় সংসদের মতো বেশি সময় না-ও লাগতে পারে। মন্ত্রিসভার গঠনের পরপরই এ বিষয়ে নজর দেবেন সংশ্লিষ্টরা।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, সংরক্ষিত আসনে যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেয়া হবে। যারা দলের দুর্দিনে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, বিভিন্ন কাজে অবদান রেখেছেন, দলের ও দলের সহযোগী সংগঠনে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন- এমন নেত্রীদের মনোনয়ন দেয়া হবে। সেই হিসেবে দশম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী, শিক্ষিকা, উদ্যোক্তা, অভিনেত্রী, শিল্পী, ব্যবসায়ী, দলের জন্য নিবেদিত কর্মীদের বিশেষ করে মহিলা লীগ, যুব মহিলা লীগ নেত্রীদের মধ্য থেকে নাম সংগ্রহ করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, ব্যাপক পরিবর্তন আসতে পারে সংরক্ষিত আসনে। এ কারণে দশম সংসদে সংরক্ষিত আসনে থাকা অধিকাংশই এবার বাদ পড়তে পারেন। জেলা কোটা সমন্বয় করতে গিয়ে তারা বাদ পড়তে পারেন।

গত সংসদে প্রত্যেক কৃতকর্ম দেখার পর এবার নারী সংসদ সদস্য মনোনীত করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যারা ভালো কাজ করেছেন তাদের মূল্যায়ন করা হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা সরাসরি নির্বাচন করার জন্য মনোনয়ন চেয়েছিলেন- যোগ্যতার ভিত্তিতে এমন কয়েকজনকে প্রাধান্য দেয়া হতে পারে।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারী সংসদ সদস্য ছিলেন এমন একজন বলেন, সাধারণত দেখা গেছে দুবারের বেশি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য থাকতে পারেনি। সেক্ষেত্রে দশম জাতীয় সংসদে যারা দুবার সংসদ সদস্য ছিলেন তারা এবার বাদ পড়তে পারেন।

সূত্র জানায়, সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য হতে এরইমধ্যে গণভবনে জোর লবিয়িং শুরু করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও কয়েকটি সহযোগী সংগঠনের নারী নেত্রীরা। এ জন্য তারা দলীয় প্রধান ছাড়াও দলের শীর্ষ-নেতাদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সংসদ, গণমাধ্যম বিশেষ করে টক-শোতে জোরালো অবস্থান রয়েছেন- এমন কয়েকজন নারী সংসদ সদস্য পুনরায় থাকছেন। তাদের মধ্যে বর্তমান তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, মাহজাবিন খালেদ, সাবিনা আক্তার তুহিন, অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি, ফজিলাতুন্নেছা বাপ্পি, নূর জাহান বেগম মুক্তা অন্যতম।

নতুনদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন- আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, স্বাস্থ্য উপ কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাঈদা শওকত জেনি, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মারুফা আক্তার পপি, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম ক্রিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিরীন রোখসানা, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার, বরিশালের জেবুন্নেছা আফরোজ, ময়মনসিংহের মনিরা সুলতানা, গোপালগঞ্জের আরিফা আকতার রুমা ও শেখ মিলি, নীলফামারীর অ্যাডভোকেট তুরিন আফরোজ, মৌলভীবাজারের সায়রা মহসিন, কুষ্টিয়ার সুলতানা তরুণ, চট্টগ্রামের চেমন আরা তৈয়ব এবং ঢাকার আসমা জরিন ঝুমু। এ ছাড়াও চলচ্চিত্রভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী, অরুণা বিশ্বাস, নাট্যাভিনেত্রী শমী কায়সার ও রোকেয়া প্রাচীর নামও শোনা যাচ্ছে।

মানিকগঞ্জ থেকে সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য হতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি যোগ্য মনে করেন, তাহলে আমার আপত্তি নেই। আমি আবেদন করতে পারি। তবে এখনও করিনি।

দশম জাতীয় সংসদে নারী আসন-১ থেকে সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য সেলিনা জাহান লিটার নামও শোনা যাচ্ছে। এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও তার নিজের উপজেলা রানীশংকৈল মহিলা কলেজে নিয়োগ বাণিজ্য করার অভিযোগ রয়েছে তার নামে। ঠাকুরগাঁও থেকে লিটা ছাড়াও ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের নেত্রী আয়েশা সিদ্দিকা তুলির নামও জোরে-শোরে আলোচনায় রয়েছে বলে দলীয় সূত্রগুলো জানায়।

কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য আঞ্জুমান আরা বন্যার নামও শোনা যাচ্ছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন তিনি।

আলোচনায় রয়েছে ময়মনসিংহ জেলায় গফরগাঁও উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেশমা আক্তারের নামও। তিনি ময়মনসিংহ মমিনুন্নেসা মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ভিপি ছিলেন। আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে, তখন এই নেত্রী নির্যাতনের মুখে পড়েছিলেন বলে জানা গেছে। ওই জেলার বতর্মান নারী সংসদ সদস্য ফাতেমা তুজ জোহরাও আলোচনায় রয়েছে। তিনি বর্তমান ধর্মমন্ত্রীর ভাগিনার বউ।

এ ছাড়া আলোচনায় রয়েছেন ভালুকা উপজেলার  মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মনিরা সুলতানা, গৌরীপুর উপজেলার নাজনীন বেবী। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!