• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংলাপ নিয়ে আওয়ামী লীগে বিভ্রান্তি


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১৬, ২০১৯, ১২:৪০ পিএম
সংলাপ নিয়ে আওয়ামী লীগে বিভ্রান্তি

ঢাকা : রোববার দিনভর রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত ইস্যু, ‘নির্বাচন উত্তর সংলাপে বসার জন্য গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাক পাচ্ছে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে সংলাপে বসা ৭৫টি দল ও তার নেতারা।’ পরদিন সোমবার সকালে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিবের ‘নির্বাচন ইস্যুতে আলোচনা হতে হব’ এই শর্ত জুড়ে দেয়া।

আর এর ঘণ্টা কয়েকের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দাবি, ‘সংলাপ নয়, শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ পাবেন নির্বাচনের আগে সংলাপে অংশ নেয়া দলগুলোর নেতারা।’

যদিও সংলাপ আলোচনা তার বক্তব্যের সূত্র ধরেই। সংলাপ ইস্যুতে ক্ষমতাসীনদের এই ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য তাই সৃষ্টি করেছে ধুম্রজাল।

মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে নব-নিযুক্ত প্রধানন্ত্রীর পাঁচ উপদেষ্টা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে যান। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলছেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও একটি সংলাপ করবেন।

অন্যদিকে মঙ্গলবার আধা-ঘণ্টার ব্যবধানে দলটির সাধারণ সম্পাদক আবারও দাবি করলেন, তিনি শনিবার আওয়ামী লীগের যৌথসভায় সংলাপ শব্দটিই উচ্চারণ করেননি! সংলাপের বিষয়টি অবতারণার জন্য তিনি সাংবাদিকদের ‘মনগড়া খবর’কে দায়ী করেন।

এমন দাবি গত সোমবার আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা আয়োজিত ১৯ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের বিজয় সমাবেশের প্রস্তুতি সভাতেও করেছিলেন তিনি।

এরপর মঙ্গলবার ক্ষমতাসীনদের শীর্ষ নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে সংলাপ প্রসঙ্গে এলো আলাদা আলাদা বক্তব্য। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সংলাপ প্রশ্নে এইচটি ইমাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী তো সকলের। তাকে সকলে অবশ্যই মেনে নেবে এবং সহযোগিতা করবে-করতে হবে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তিনি আবার একটি সংলাপ করবেন। আগের সংলাপে যারা অংশগ্রহণ করেছিল তাদেরকে তিনি আমন্ত্রণ করবেন। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে আলোচনা বলে যে কথাটি বলা হচ্ছে তা অত্যন্ত অবাস্তব এবং হাস্যকর।

এরপরই তিনি যোগ করেন : নতুন নির্বাচন বাস্তবে সম্ভব নয়। এখন বাস্তবতা মেনে নিয়ে সকলে সহায়তা করেন (ঐক্যফ্রন্ট)। আমাদের দিক থেকে আমরা পাঁচজন উপদেষ্টা, সরকারের মন্ত্রিপরিষদে যারা আছেন সকলেই সকলের সহায়তা চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বললে আমরা অন্যদের সঙ্গে (বিরোধী রাজনৈতিক দল) কথাও বলবো। আপনারা (ঐক্যফ্রন্ট) আসুন বাংলাদেশ তো সকলের, দেশকে গড়ে তুলি।

অপরদিকে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সংলাপ শব্দটি আসলো কোথা থেকে?  সংলাপ নিয়ে আমরা তো কিছু বলিনি! এজন্য মনগড়া খবরকে দায়ী করে আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাংগঠনিক এ নেতা বলেন, সংলাপ নিয়ে আমরা তো কিছু বলিনি। কেউ যদি মনগড়া খবর পরিবেশন করেন তাহলে তো কিছু করার নেই। আমি যে বক্তব্য রেখেছি তার অডিও ভিডিও ক্লিপ রয়েছে, সেখানে সংলাপের কোনো বিষয় নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে ঐক্যফ্রন্ট, যুক্তফ্রন্ট, বিএনপি, বাম গণতান্ত্রিক জোট, ইসলামী জোট সব মিলিয়ে মোট ৭৫টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছিলেন সেই দলগুলোর নেতৃবৃন্দকে আমাদের নেত্রী আবারো গণভবনে আমন্ত্রণ জানাতে চান, শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য।

সংলাপ হবে না দাবি করে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে সংলাপের কোনো প্রয়োজন নেই। এখানে সংলাপ নিয়ে ধূম্রজাল কোথা থেকে এলো? আমি তো সংলাপ শব্দটি উচ্চারণ করি। বলা হয়েছে গণভবনে নেত্রী আমন্ত্রণ জানাবেন, শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন; একটু আপ্যায়নের ব্যবস্থাও থাকবে। এই ছিল আমাদের কথা।

এখানে ধূম্রজাল কেন হবে, সংলাপ কেন হবে?

নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে গিয়ে তিনি যোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী একবারও সংলাপের কথা বলেননি। আমি বলেছি, তিনি আমন্ত্রণ জানাবেন। আমি তো সংলাপের কথা বলিনি! কাজেই এ শব্দটি কোথা থেকে এলো আমি জানি না।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!