• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সফল হরতাল পালন


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ২, ২০১৯, ০১:২৭ পিএম
সফল হরতাল পালন

ঢাকা : একাত্তরের এই দিনে আওয়ামী লীগপ্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকা হরতালে ঢাকাবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দেয়। সমস্ত দোকানপাট, কল-কারখানা, অফিস-আদালত স্থবির হয়ে পড়ে। কেউ কোনো কাজে যোগ দেয়নি। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’ থেকে জানা যায়, কাঁচাবাজারিরাও সেদিন বসেনি ঢাকার রাস্তায়। মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ততায় তিনি বিস্মিত হন।

২ মার্চের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে রয়েছে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন। বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ছাত্র-জনতার বিশাল সমাবেশ করার কথা ছিল। লোকজনও আসতে শুরু করে সেখানে। কিন্তু অভূতপূর্ব জনসমাগমের কারণে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে সভামঞ্চ কলাভবনের গাড়ি বারান্দার ওপরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং মাইকে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে যেকোনো ত্যাগ স্বীকার ও সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। সভাস্থল থেকে মুহুর্মুহু স্বাধীনতার স্লোগান দেওয়া হতে থাকে।

এই ঐতিহাসিক সভায় সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগ সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকী। তিনি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠার লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। সভায় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ, ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস মাখন বক্তব্য দেন। এ সভাতেই সবুজ জমিনের ওপর লাল বৃত্তের মাঝখানে সোনার বাংলার সোনালি মানচিত্রসংবলিত স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলিত হয়। পতাকা উত্তোলন করেন ডাকসুর সহসভাপতি আ স ম আবদুর রব। পতাকাটির নকশা করেন শিল্পী শিব নারায়ণ দাশ।

সমাবেশ শেষে এক বিশাল মিছিল স্বাধীনতার স্লোগান দিতে দিতে বায়তুল মোকাররমের দিকে যায়। মিছিলটির অগ্রভাগে ছিলেন তোফায়েল আহমেদসহ উল্লিখিত ছাত্রনেতারা।

এর মধ্যেই ঢাকা শহরে সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত কারফিউ ঘোষণা করা হয়। এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বিভিন্ন ছাত্র হল ও শ্রমিক এলাকা থেকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-শ্রমিক কারফিউ ভঙ্গ করে মিছিল বের করে। মিছিলগুলোতে ‘সান্ধ্য আইন মানি না’, ‘জয় বাংলা’, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর- বাংলাদেশ স্বাধীন কর’ ইত্যাদি স্লোগান চলতে থাকে। ঢাকার বিভিন্ন রাস্তায় মিছিলগুলোতে সামরিক বাহিনী গুলি চালায়। ছাত্র-জনতার মধ্যে এক অনমনীয় মনোভাব লক্ষ করা যায়। লাশ কাঁধে নিয়ে মিছিল গভর্নর হাউজের দিকে অগ্রসর হয়। সেই মিছিলেও গুলি চালানো হয়। জাতীয় লীগের এক জনসভায় আতাউর রহমান খান আওয়ামী লীগ, ভাসানী ন্যাপ, ওয়ালী ন্যাপ ও জাতীয় লীগের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে গণআন্দোলনের আহ্বান জানান।

এ রকম টালমাটাল পরিস্থিতি শুধু ঢাকাতেই ছিল না। জেলা শহরগুলো থেকে শুরু করে গ্রাম-গঞ্জ পর্যন্ত বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!