• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সবই পুড়ল, রইল শুধু ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’!


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৯, ১০:০৯ পিএম
সবই পুড়ল, রইল শুধু ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’!

ঢাকা : রাজধানীর চকবাজার এলাকার চুড়িহাট্টা মোড়ে গিয়ে একটু বাঁ দিকে ঘুরলেই চোখে পড়ল রাজমনি হোটেল। পুরান ঢাকার জনপ্রিয় খাবারের হোটেলটি গতকাল রাতের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুড়ে ছাই। পুড়ে গেছে দোকানারের আসবাবপত্র থেকে শুরু করে সাটারও।

তবে হোটেলে প্রবেশদ্বারের উপরে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (স.)’ লেখা সংবলিত লেখাংশটুকু ঠিকই অবিকল অবস্থায় রয়ছে। আরবি ও বাংলা ভাষায় লেখা পবিত্র কালেমার প্রতি দৃষ্টি পড়ছে এলাকাবাসী সকলেরই।

বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পুরো এলাকাটি যেন এক মৃত্যুপুরীর আকার ধারণ করেছে। আগুনে পুড়ে যাওয়ার চিহ্ন বহন করছে এলাকার দালানকোটাসহ দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। মালামালসহ সব জিনিসপত্রই পুড়ে ছাই।

রাজমনি হোটেলের সামনে গিয়ে দেখা যায়, দোকানের সামনের সাটার পুড়ে গেছে। দোকানের হাড়িপাতিলসহ আসবাবপত্রও পুড়ে গেছে। কালি ও কেমিক্যালের ধোঁয়ার চিহ্ন হোটেলের দেওয়ালে দেওয়ালে।

হোটেলের মালিক ও বয়-বেয়ারাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা কেউ বলতে পারছে না। তবে জয়নাল আবেদীন বাবুল নামে এক ব্যক্তি চা খাওয়ার জন্য গতকাল রাত ১০টা ২১ মিনিটে চা খেতে প্রবেশ করেন। এ সময় তিনি তাঁর মেয়ে নাসরিন আক্তারের সঙ্গে কথা বলেন। এর এক মিনিট পরই হোটেলটির সামনে থেকে বিকট শব্দ শুনতে পান নাসরিন।

নাসরিন আক্তার জানান, ‘আব্বুর সাথে কথা বলার এক মিনিট পর ১০টা ২২ মিনিটে একটি বিকট শব্দ শুনতে পাই। এর পর পরই আব্বুর মোবাইলে ফোন করি। কিন্তু রিং হয় ফোন রিসিভ হয় না। ১০ টা ২৫ মিনেটের পর মোবাইলটি বন্ধ হয়ে যায়। আব্বুর মুখের আওয়াজ আর পাইনি। সেই থেকেই আব্বুকে খোঁজার চেষ্টা করছি।’

রাজমনি হোটেলের সামনে গিয়ে দেখা যায়, হোটেলটির দুইপাশেই রাস্তার ওপরে কেমিক্যালের পুড়ে যাওয়া ড্রামগুলো পড়ে আছে। এলাকাবাসী জানান, এখানে কয়েকটি ভবনের নিচতলাকে কেমিক্যালের গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করতেন ব্যবসায়ীরা। আগুন লাগার সঙ্গেই সঙ্গেই কেমিক্যালের কারণে তা দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে।

চকবাজারের নন্দকুমার সড়কের চুড়িহাট্টায় বুধবার রাতে এই শাহী মসজিদের সামনে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির ট্রান্সফরমার বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। মুহূর্তেই আগুন লাগে জামাল কমিউনিটি সেন্টারে। আগুনের ভয়াবহতা এত বেশি ছিল যে সে আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের চারতলা ওয়াহিদ ম্যানশনে।

ভবনটির প্রথম দুইতলায় প্রসাধন সামগ্রী, প্লাস্টিকের দানা ও রাসায়নিক দাহ্য পদার্থের গুদাম থাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের আরো চারটি ভবনে। রাজমনিসহ আশেপাশের কয়েকটি খাবারের হোটেলের গ্যাস সিলিন্ডারেরও বিস্ফোরণ ঘটে। পুড়ে যায় সড়কে থাকা একটি প্রাইভেটকারসহ কয়েকটি যানবাহন। এ সময় পুড়ে যাওয়া কয়েকটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!