• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সবার চোখ কলকাতা!


বিনোদন প্রতিবেদক নভেম্বর ১৯, ২০১৮, ১২:২৩ পিএম
সবার চোখ কলকাতা!

জয়া আহসান-শাকিব খান- সোহানা সাবা

ঢাকা: কাজ নেই ঢালিউড চলচ্চিত্রে। যার কারণে সবার চোখে এখন কলকাতা। ঢালিউডের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান গত সপ্তাহে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, দেশীয় চলচ্চিত্রের উন্নয়নের স্বার্থে কলকাতার দুটি ছবির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে স্থানীয় ছবিতে কাজ করেছেন।

তিনি আরও বলেছিলেন দেশীয় চলচ্চিত্রের অবস্থা ভালো নয়, এখন চলচ্চিত্রকারদের উচিত ঐক্যবদ্ধভাবে এই শিল্পকে জাগিয়ে তোলা। এই বক্তব্য দেওয়ার মাত্র দুই-তিন দিনের মধ্যে তিনি কলকাতার চারটি ছবিতে কাজ করার প্রস্তাব লুফে নিয়েছেন এবং এ সপ্তাহেই কলকাতা যাচ্ছেন এসব ছবির মহরত ও শুটিংয়ে অংশ নিতে। 

পরীমণি-ফেরদৌস- জ্যোতিকা জ্যোতি

তার কথায় দেশে ছবি নির্মাণ উদ্বেগজনক হারে কমেছে। কাজ নেই। সিনেমা হল আর প্রযোজনা সংস্থাগুলোর মধ্যে বন্ধের হিড়িক পড়েছে। এ অবস্থায় বেকার হয়ে পড়লে শিল্পী-কলা-কুশলীরা তাদের সংসার চালাবে কীভাবে। বাধ্য হয়ে কলকাতা হোক বা অন্য কোনো দেশ হোক প্রস্তাব পেলে ছুটে যেতেই হবে।

এদিকে চলতি বছরের গত শুক্রবার পর্যন্ত মুক্তি পেয়েছে মাত্র ৪৬টি ছবি। এসব ছবির মধ্যে কোনোভাবে অর্থ ফেরত পেয়েছে মাত্র ছয়টি ছবি। এগুলো হলো চালবাজ, পোড়ামন টু, ভাইজান এলোরে, জান্নাত, সুপার হিরো ও দেবী। চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার নওশাদ বলেন, এই যদি হয় দেশীয় চলচ্চিত্রের ব্যবসার চালচিত্র তাহলে প্রযোজক কেন লোকসান গুনতে এ খাতে অর্থলগ্নী করবে। 

প্রযোজকের অভাবে ছবি নির্মাণ হচ্ছে না। ছবির অভাবে সিনেমা হল বন্ধ হচ্ছে আর কাজের অভাবে নির্মাতা, শিল্পী, কলা-কুশলী বেকার হচ্ছেন। এই বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে সবাই কলকাতা বা বিদেশমুখী হবে—এটিই এখন বাস্তবতা।’ বর্তমান সময়ের ব্যস্ত চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা জাজ মাল্টিমিডিয়া ২০১২ সাল থেকে নিয়মিত চলচ্চিত্র প্রযোজনা করে আসছে। বছরে তারা সর্বোচ্চ ছবি উপহার দিচ্ছিল। লোকসানের জাঁতাকলে পড়ে বর্তমানে এই প্রযোজনা সংস্থাও বন্ধের পথে।

জাজের কর্ণধার আবদুল আজিজ বলেন, ৩০ নভেম্বর ‘দহন’ মুক্তি দেওয়ার পর আমার প্রযোজনা সংস্থা থেকে আপাতত কোনো ছবি নির্মাণের আর কোনো পরিকল্পনা নেই। পূর্ব ঘোষিত ‘মাসুদ রানা ’ নির্মাণে আরও সময় লাগতে পারে।’ 

অভিনেতা ডি এ তায়েব বলেন, ‘চলচ্চিত্রের লোকজনের মধ্যে ঐক্য এবং চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারে সহায়তাই পারে দেশীয় চলচ্চিত্র শিল্পকে এই দুরাবস্থা থেকে উদ্ধার করতে। এফডিসিতে পার্টি হতে গেলে নির্মাতাদের পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হয়। টেকনিক্যাল সাইড ও ফ্লোরসহ অন্যান্য ভাড়া বাইরের চেয়ে বেশি। সিনেমা হল ও প্রযোজনা সংস্থা একাধারে বন্ধ হচ্ছে। সরকার যদি ৬৪ জেলায় কমপক্ষে ৬৪টি সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করে দেয় এবং সিনেমা হল নির্মাণ ও সংস্কারে সহজ শর্তে কম সুদে ঋণ দেয় তাহলে নিশ্চিতভাবে অবস্থার উন্নতি হবে। 

পূজা-রোমান-নুসরাত ফারিয়া

চিত্র পরিচালক বুলবুল বিশ্বাস বলেন, ‘রাজনীতি’ ছবি মুক্তির পর কোনো প্রযোজক পাচ্ছিলাম না। তারা আশ্বাস দিলেও লোকসানের ভয়ে নির্মাণে আসেনি। এ অবস্থায় শিল্পী-কলা-কুশলী আর নির্মাতা বাঁচার তাগিদে অন্য দেশে কাজের প্রস্তাব পেলে চলে যাবে—এটিই স্বাভাবিক। 

নির্মাতা শাহ আলম মণ্ডল বলেন, প্রযোজকের অভাবে পরিচালনায় নিয়মিত হতে পারছি না। দেশে সিনেমা হল কমে গেছে। যা আছে তা দিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব নয়। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। 

এদিকে কলকাতার শীর্ষ চলচ্চিত্র প্রযোজক বিজয় খেমকাসহ আরও কয়েকজন প্রযোজক জানান, বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিয়ত অনেক শিল্পী তাদের সঙ্গে সেদেশের চলচ্চিত্রে অভিনয় করার জন্য যোগাযোগ করছেন। ঢাকার শিল্পীদের কথা হলো চলচ্চিত্রের অভাবে তারা বেকার। কিন্তু জনপ্রিয় তারকা ছাড়া অন্য কাউকে নিয়ে কাজ করতে চাই না। এ ক্ষেত্রে শাকিব খান জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে আমাদের কাছে বেশি পছন্দের। তাই তাকে নিয়ে ছবি নির্মাণ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। 

কলকাতার শ্রী ভেংকটেশ ফিল্মস সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে তাদের পছন্দের নায়িকা হলো মাহিয়া মাহি। গত কয়েক বছর ধরে কলকাতার ছবিতে কাজ করেছেন শাকিব খান, ফেরদৌস, জয়া আহসান, সোহানা সাবা, রোশান, পূজা চেরী, পরীমণি, মাহি, নুসরাত ফারিয়া, জলিসহ অনেকে। এই তালিকায় বর্তমানে যোগ হয়েছেন, অপি করিম ও জ্যোতিকা জ্যোতি।

ঢাকাই চলচ্চিত্র শিল্পীদের কলকাতা মিশনের তালিকাটি আগামী বছরের মধ্যে আরও দীর্ঘ হতে পারে বলে একটি সূত্র দাবি করেছে।

সোনালীনিউজ/বিএইচ

Wordbridge School
Link copied!