• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সমঝোতার লক্ষণ নেই আ.লীগ-বিএনপিতে


বিশেষ প্রতিনিধি আগস্ট ২৭, ২০১৮, ০৯:০৩ পিএম
সমঝোতার লক্ষণ নেই আ.লীগ-বিএনপিতে

ঢাকা : নির্বাচন ঘনিয়ে এলেও দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, বিএনপি নেত্রী বেগম জিয়াকে কারাগারে রেখেই নির্বাচনে যেতে হবে দলটিকে। যদিও নেত্রীকে যোগ কিংবা বিয়োগ করেই নির্বাচনের প্রস্তুতি আছে দলটির।

দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির পক্ষ থেকে সংলাপ-সমঝোতার বিষয়ে বলা হলেও তা অগ্রাহ্য করে আসছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তারা বিএনপিকে ছাড়াই নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে কোনো কালক্ষেপন করতে চাইছে না।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কোনো উদ্যোগ নেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে দলটির সঙ্গে সংলাপের এখন সময় নেই, সুযোগ নেই, প্রয়োজনও নেই। বিএনপি অংশ না নিলেও নির্বাচন বন্ধ থাকবে না, নির্বাচনের ট্রেন চলতে থাকবে। ওই নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী থাকবে।

নির্বাচনকালীন সরকারে কারা থাকছেন, বিএনপিকে রাখা হবে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনের সময় বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার থাকবে, নতুন কোনো সরকার হবে না। আমি যতটুকু জানি, অক্টোবরে সরকারের আকার ছোট হবে। ওই সরকারে কারা কারা থাকবে তা প্রধানমন্ত্রী নিজেই নির্ধারণ করবেন। সংসদে যাদের প্রতিনিধিত্ব নেই, তাদের কাউকে মন্ত্রিসভায় রাখার সুযোগ নেই।

গত নির্বাচনে বিএনপির প্রতিনিধিত্ব থাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যন্ত অফার করা হয়। এবার তাদের প্রতিনিধিত্ব নেই। নির্বাচনকালীন সরকারে থাকার জন্য সংসদে প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে। রাজনৈতিক দলের বাইরে কারও নির্বাচনকালীন সরকারে থাকার সুযোগ নেই।

গত (৫ জানুয়ারি) নির্বাচনের মতো আগামী নির্বাচনে সহিংসতার আশঙ্কা আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে বিএনপি-জামায়াত কী প্রস্তুতি নিচ্ছে, তাদের কী প্ল্যান। আমরা সতর্ক আছি। ২০১৪ সালের মতো কিছু করতে গেলে দাঁতভাঙা জবাব দেব।

এদিকে সরকার বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র করছে- এমন অভিযোগ করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। ৫ জানুয়ারির মতো একতরফা নির্বাচনও আর হবে না। বিএনপি ছাড়া নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য হবে না এবং দেশের জনগণ তা মেনে নেবে না।

অবিলম্বে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে যাওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন, নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্বাচনে সেনা মোতায়েন এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে বলেও জানান ফখরুল।

খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচেন যাবেন কি না- জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, চেয়ারপারসনকে ছাড়া নির্বাচনে যাব, সেরকম সিদ্ধান্ত আমরা এখনও নিইনি। নির্বাচনে আমরা তখনই যাব, যখন একটি পরিবেশ তৈরি হবে, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ)’ হবে। নির্বাচনে যাওয়ার পূর্বশর্তই হচ্ছে- চেয়ারপারসনের মুক্তি।

তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন একটি সরকার গঠন করতে হবে, যারা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে।

সব দলকে সমান সুযোগ দিতে হবে। যারা বন্দি আছে, তাদের মুক্তি দিতে হবে। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং নতুন কোনো মামলা দেয়া যাবে না। বলতে পারেন, এগুলো আমাদের শর্তও। এসব না হলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।

তিনি বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো সদিচ্ছা ও লক্ষণ এখন পর্যন্ত সরকারের দেখা যাচ্ছে না। উল্টো তারা এটাই চাচ্ছে বিএনপি যাতে নির্বাচনে না আসে। তারা ভিন্ন মতকে দমন করে, স্টিমরোলার চালিয়ে এককভাবে নির্বাচন করতে চায়। সেটাই হচ্ছে তাদের লক্ষ্য।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!