• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সম্পত্তির লোভে বৃদ্ধ বাবাকে পিটিয়ে পা ভেঙে দিল ছেলে!


বরগুনা প্রতিনিধি আগস্ট ১৬, ২০১৯, ০৬:৩৯ পিএম
সম্পত্তির লোভে বৃদ্ধ বাবাকে পিটিয়ে পা ভেঙে দিল ছেলে!

বরগুনা: বরগুনার বামনা উপজেলার ছোনবুনিয়া গ্রামের অশীতিপর বৃদ্ধ আব্দুল রশিদ হাওলাদার। একটি খুপড়ি ঘরে একাই বসবাস করছেন। কখনো খেতে পায় আবার কখনো না খেয়েই কাটাতে হয় তাকে। স্ত্রী ও তাকে ছেড়ে ছোট ছেলের কাছে থাকেন। 

অথচ এক একর ৬৫ শতাংশ জমির মালিক তিনি। দুই ছেলে আর চার কন্যা সন্তানের জনক রশিদ হাওলাদার সবাইকে বিয়ে দিয়েছেন। যে যার মতোন কাজ কর্ম করে নিজেদের সংসার গুছিয়েছেন। ছেলেদের নামে এখনো তার সমুদয় সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় ছোট ছেলের হাতে প্রতিনিয়তই নির্যাতনের শিকার হন তিনি। তার বড় ছেলের নাম আলমগীর হাওলাদার ও ছোট ছেলে মো. জাহাঙ্গীর হাওলাদার। 

বড় ছেলে অনেক আগেই বাড়ী থেকে একটু দূরে নিজের বসতঘর করেছেন। সেখানেই তিনি তার সন্তানদের নিয়ে থাকেন। ছোট ছেলে জাহাঙ্গীরের সাথে তার মাও থাকেন। ছোটছেলের আলিশান রংকরা টিনসেট ঘরের পাশে একটি ঘুপরী ঘরে ঠাঁই হয়েছে বৃদ্ধ পিতার। 

জমিজমা লিখে না দেওয়ায় প্রায় তিনমাস আগে পিটিয়ে পা ভেঙ্গে দিয়েছে ছোট ছেলে জাহাঙ্গীর হাওলাদার এমন অভিযোগ করেন নির্যাতিত বৃদ্ধ বাবা। ভাঙ্গা পা নিয়ে তিনি এখন শয্যাশায়ী। একদিকে চলার অক্ষমতা অন্য দিকে পেট ভরে দুমুঠো ভাত খেতে না পাওয়ায় প্রতিদিনই মৃত্যুর জন্য প্রহর গুনছেন ওই অশীতিপর বৃদ্ধ। 

ছেলের হাতে নির্যাতনের শিকার আ. রশিদ হাওলাদার বলেন, 'বাবারা তোমরা চলে গেলে আবারও মারবো, মুই তহন কি হরমু? তোমাগো পামু কই? মোরে এইহান দিয়া উদ্ধার কইরা লইয়া যাও। জাহাঙ্গীর মোরে মাইরা হালাইবে।'

এ ব্যাপারে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মো. ফরিদ হোসেন বলেন, 'এই বৃদ্ধ তার বড় ছেলের কাছে যেতে চায় কিন্তু ছোট ছেলে তাকে জোড় করে এখানে আটকে রাখছে। জমি লিখে না দিলে এখান থেকে কোথাও যেতে পারবেনা বলে অনেক বার হুমকিও দিয়েছে। এখানে আটকে রেখে জমি লিখে নেওয়ার জন্য প্রতিদিন তাকে নির্যাতন করে।'

প্রতিবেশী আ. জলিল জানায়, 'ছোট ছেলে বাবার পা ভেঙ্গে দেওয়ার পরে স্থানীয় শালিসী বসে। এতে সিদ্ধান্ত হয় বৃদ্ধ বাবার চিকিৎসা করানোর পরে জমি জমা নিয়ে ভাগ বাটোয়ারা হবে। অথচ ছোট ছেলে বাবার কোন চিকিৎসাই করায়নি। উল্টো তাকে মারধর করে আরো অসুস্থ্য করেছে।'

নির্যাতনকারী ছোট ছেলে জাহাঙ্গীর হাওলাদারের কাছে তার বাড়ীতে গিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। যতক্ষণ পর্যন্ত এইপ্রতিবেদক সেখানে ছিলো ততক্ষন পর্যন্ত তিনি ঘরেই অবস্থান করেছেন। পরে বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলী হরিকে বিষয়টি জানালে তিনি ওই বৃদ্ধের সাথে ফোনে কথা বলেন। তিনি বলেন, 'আপতত ওই বৃদ্ধ পিতাকে তার পছন্দের ছেলের কাছে রাখুন। পরে তিনি সুস্থ হলে তার উপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।'

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!