• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারি চাকুরেদের বেতন-ভাতা নিয়ে আরও একটি সুখবর


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ১৭, ২০২০, ১২:১১ পিএম
সরকারি চাকুরেদের বেতন-ভাতা নিয়ে আরও একটি সুখবর

ঢাকা: এত দিন সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা এর অধীনস্ত সংস্থা তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ বরাদ্দ চাইতো। তাদের চাওয়ার ওপর ভিত্তি করে বাজেট তৈরি করতো অর্থ মন্ত্রণালয়। আর এ কাজটি ম্যানুয়ালি হওয়ায় অর্থবছর শেষেও বেতন-ভাতা বাবদ অতিরিক্ত বরাদ্দের চাপ বাড়তো। এতে বাজেটের অর্থ বরাদ্দ দিতে বেগ পেতে হতো অর্থ মন্ত্রণালয়ের।

তবে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে এ বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পেতে বেতন-ভাতাদির বাজেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এতে করে বাজেট বাস্তবায়নে স্বচ্ছতাও বাড়বে বলে মনে করছে সরকার। এ জন্য সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও এর অধীনস্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তথ্য চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুন: ৫ শতাংশ সুদে শিক্ষকদের জন্য গৃহনির্মাণ ঋণ

রোববার (১৬ আগস্ট) মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের উপসচিব মো. তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সরকারের সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এ চিঠিতে কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ও তাদের অধীনস্ত প্রতিষ্ঠানে কোন পদে কত জন জনবল আছে, কার বেতন কত, কতজন পেনশনভোগী রয়েছে– এসব জনাতে চাওয়া হয়েছে। আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে এসব তথ্য অর্থ বিভাগে জানাতে বলা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা আরও সুসংহত করার জন্য আগামী ২০২১-২২ অর্থবছর হতে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদির বাজেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও পেনশন কার্যক্রম সহজতর ও অধিকতর স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে বর্তমানে ‌‘অনলাইন পে-ফিক্সেশন’ ডাটাবেজ হতে নতুন বাজেট ও হিসাবরক্ষণ শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি অনুযায়ী রি-ডিজাইনকৃত আইবাস প্লাস-এর ডাটাবেজে সব কর্মচারীর তথ্য স্থানান্তরের কার্যক্রম চলমান আছে।

আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য শিক্ষা অধিদফতরের ২৪ নির্দেশনা

এসব কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন ও ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার বা ইএফটির মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও পেনশন পরিশোধের লক্ষ্যে সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, অধীনস্ত অধিদফতর, পরিদফতর ও অধস্তন অফিস এবং মাঠ পর্যায়ের অফিসসমূহের অর্গানোগ্রাম, নিয়োগবিধি ও পদ মঞ্জুরি অনুযায়ী পদবি, পদসংখ্যা ও গ্রেড আইবাস প্লাস সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।

বর্ণিত প্রেক্ষাপটে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদির বাজেট আগামী ২০২১-২২ অর্থবছর হতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রণয়ন ও ইএফটির মাধ্যমে কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও পেনশন প্রাপ্তি সহজতর করার লক্ষ্যে সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, অধীনস্ত অধিদফতর বা পরিদফতর ও অধস্তন অফিস ও মাঠ পর্যায়ের অফিসসমূহের অর্গানোগ্রাম, নিয়োগবিধি ও পদ মঞ্জুরির সত্যায়িত অনুলিপি আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে অর্থ বিভাগে পাঠানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: আর কতদিন ঝুলে থাকবে ৭ সহস্রাধিক শিক্ষকের নিয়োগ

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষা অধিদফতর সারাদেশে তাদের যত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে তারা ম্যানুয়ালি হিসাব করে বেতন-ভাতা বাবদ বরাদ্দ চায়। এক্ষেত্রে তারা বেতন বাবদ আলাদা এবং অন্যান্য ভাতা বাবদ আলাদা বরাদ্দ চায়। এরপর অর্থ মন্ত্রণায় তা অনুমোদন করলে কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার বা ইএফটির আওতায় বেতন পেয়ে থাকে। এতে অনেক সময় অনেক প্রতিষ্ঠান লামগ্রান্ড বা ‘কেউ চলে যাবে ওকে উমুক ভাতা দিতে হবে’ এসব অজুহাতে অর্থবছরের শেষ দিকেও বেতন-ভাতা বাবদ বরাদ্দ চায়। অনেক সময় অনেক প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বাজেট চায়। তাই বাজেট বাজেট বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জে পড়ে। বাজেট বাস্তবায়নের হিসাবও স্বচ্ছতার অভাব থাকে।

তিনি আরও বলেন, কিন্তু এখনতো অর্থ মন্ত্রণালয়ে সারাদেশের সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডাটাবেজ রয়েছে। এ ডাটাবেজে একজন চাকরিজীবীর বর্তমানে বেতন-ভাতা কত আগামী জুলাই মাসে ইনক্রিমেন্টসহ কত বেতন-ভাতা কত হবে সব তথ্য রয়েছে। এ জন্য আজকে সব সরকারি অফিসে চিঠি দিয়ে তাদের কোন অফিসে কোন পদে কত জন লোক রয়েছে এটা দিলেই আমরা আমাদের ডাটাবেজ থেকে অটোমেটিক ওই তাদের বাজেটটা ধরে রাখতে পারবো। তাদের আর আলাদাভাবে বেতন-ভাতার জন্য বাজেট চাওয়া লাগবে না।

অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, সব প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীর তথ্য দিলে সে তথ্য আবার যাচাই-বাছাই করা হবে। তারপর যে অফিসার যে গ্রেডের তার সে অনুযায়ী সুযোগ-সবিধা সরকার নির্ধারণ করে রেখেছে, সেটা অটোমেটিক আমরা ক্যালকুলেট করতে পারব। এতে করে বছর শেষে বেতন-ভাতা বাবদ অতিরিক্ত কোনো বরাদ্দের প্রয়োজন হবে না। আবার কোনো প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত বরাদ্দ চাওয়ার সুযোগও থাকবে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ বিভাগের যুগ্মসচিব সিরাজুন নূর চৌধুরী বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী সংখ্যাসহ অন্যান্য তথ্য সঠিকভাবে পাঠায় তাহলে তাদের বেতন-ভাতা বাবদ বরাদ্দ অটো ক্যালকুলেশন হয়ে যাবে। আমরাতো জানি কে কে কোন গ্রেডের অফিসার। এতে করে আগামী বাজেটে আর তাদের তথ্যের জন্য আর অপেক্ষা করতে হবে না। ফলে বাজেট বাস্তবায়নে অনেক স্বচ্ছতা আসবে। এ জন্যই আমরা সব অফিসের কাছে তথ্য চেয়েছি।

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বেতন-ভাতা বাবদ্দ রাখা হয়েছে রয়েছে ৬৮ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা।

সোনালীনিউজ/টিআই

Wordbridge School
Link copied!