• ঢাকা
  • বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাইন-মার্কিং নেই সাড়ে ৫ হাজার কি.মি. সড়কে


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ১৯, ২০১৯, ০৮:২০ এএম
সাইন-মার্কিং নেই সাড়ে ৫ হাজার কি.মি. সড়কে

ঢাকা : দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলো যেন মৃত্যুপুরী! প্রতিদিন বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল। আবার সড়ক দুর্ঘটনায় বেঁচে গেলেও পঙ্গু হয়ে জীবন কাটাতে হচ্ছে অনেককে। সারা দেশে বর্তমানে সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোমিটার সড়কে নেই কোনো সাইন ও মার্কিং। মূলত ক্ষতিগ্রস্ত ‍ও ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক এবং সড়কে সঠিক দিকনির্দেশনা না থাকায় সড়কে বেশি প্রাণ ঝরছে।

দুর্ঘটনা রোধে সারা দেশের ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক চিহ্নিত করে উন্নয়ন এবং প্রয়োজনীয় বাঁকে সাইন ও মার্কিং করার উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।

সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাইন ও মার্কিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যানবাহন কোথায় কী বাঁক নেবে, ট্রাফিক কী নির্দেশনা দিচ্ছে, যানবাহনের গতিসীমা কত হবে-ইত্যাদি সাইনের মাধ্যমে আগে থেকেই জানতে পারেন চালক।

অন্যদিকে যানবাহনের লেন ঠিক করা এবং কোন অংশে যানবাহন ওভারটেক করতে পারবে ইত্যাদি নির্দেশনা দেয় সড়কের মার্কিং।

‘জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রয়োজনীয় সাইন ও রোড মার্কিং স্থাপন এবং চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ স্থানসহ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ করিডর উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় এসব উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

প্রকল্পের আওতায় প্রয়োজনীয় সাইন ও রোড মার্কিং স্থাপনসহ চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ স্থান এবং মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ করিডরের উন্নয়নের মাধ্যমে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে টেকসই ও নিরাপদ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ৬৫১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি চলতি সময় থেকে ডিসেম্বর ২০২১ মেয়াদে বাস্তবায়ন করবে।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) সূত্র জানায়, জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থা তথা টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি নিরাপদ মহাসড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছে সরকার। বর্তমানে সড়ক নেটওয়ার্কের দৈর্ঘ্য ২১ হাজার ৩০২ কিলোমিটার। এর মধ্যে মহাসড়ক তিন হাজার ৮১৩ কিলোমিটার এবং আঞ্চলিক মহাসড়ক চার হাজার ২৪৭ কিলোমিটার।

সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন, নির্ভরযোগ্য, নিরাপদ ও টেকসই অবকাঠামো নির্মাণের জন্য সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রধান চ্যালেঞ্জ। মহাসড়কগুলোতে ট্রাফিক সাইন ও রোড মার্কিং স্থাপনের হার এখনো সন্তোষজনক নয়। ইতোমধ্যে কিছু স্পটে সড়ক নিরাপত্তা-সংক্রান্ত সাইন-মার্কিং করা হয়েছে। এর পরও পাঁচ হাজার ৫০০ কিলোমিটার জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে এখনো সাইন-মার্কিং দৃশ্যমান নয়।

২০১২ সালে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের আওতায় জরিপের মাধ্যমে এক হাজার ৩৭২ কিলোমিটার সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০০ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন করা হয়েছে। তবে এখনো বেশির ভাগ সড়ক মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ পুলিশের হাইওয়ে পুলিশ ইউনিটের পক্ষ থেকে ‘কোনো সাইন-সিম্বল নেই এবং প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে’ এমন তালিকার ভিত্তিতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ চিহ্নিত সব স্থানগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে সরকার।

সওজের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ কে এম মোহাম্মদ ফজলুল করিম বলেন, ‘জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের অনেকাংশে সাইন ও মার্কিং নেই। এসব কারণে অনেক সময় সড়কে দুর্ঘটনা ঘটে। এজন্য সড়কে সাইন ও মার্কিং দেওয়া হবে। সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এসবের গুরুত্ব অনেক। সাইন না থাকলে ভুলে অনেক সময় যানবাহন দিক হারিয়ে ফেলে। সাইন থাকলে চালক আগে থেকেই সচেতন হতে পারবেন। গাড়ির গতিসীমা ঠিক থাকবে। রোড মার্কিং হলে ওভারটেক কমে যাবে।’

সাইন-মার্কিং কাজ বাস্তবায়নে পাঁচ কোটি টাকার প্রকৌশল যন্ত্রপাতি কেনা হবে। প্রকল্পে স্থানীয় প্রশিক্ষণ খাতে তিন কোটি, বৈদেশিক প্রশিক্ষণ খাতে দেড় এবং সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ খাতে তিন কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় টেকনিক্যাল পরামর্শক খাতে আট কোটি, সুপারভিশন পরামর্শক খাতে দেড় কোটি, সুপারভিশন পরামর্শক খাতে ১৫ কোটি, সড়ক নিরাপত্তা সচেতনতা বৃদ্ধি খাতে দুই কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সড়ক অনেকাংশে নিরাপদ হবে এবং দুর্ঘটনা কমবে বলে দাবি করেছে সওজ।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!