• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সাফিন হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিল খুনি


ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জুলাই ২৮, ২০১৯, ০৩:৩১ পিএম
সাফিন হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিল খুনি

ঝিনাইদহ : মেধাবী ছাত্র শিশু সামিউল আলম সাফিনকে যখন বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়, তখন সে বাঁচতে হাত পা ছুঁড়ছিল। এ সময় ঘাতক মেহেদী হাসান বিল্টুর মা জাহানারা বেগম সাফিনের দুই পা চেপে ধরে হত্যা নিশ্চিত করে। ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে এ ভাবেই সাফিন হত্যার বর্ননা করে ঘাতক বিল্টু।

রোববার (২৮ জুলাই) দুপুরে ঝিনাইদহ পিবিআই’র পুলিশ সুপার আবু আশ্রাফ রোববার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

তিনি গনমাধ্যমকর্মীদের বলেন, সাফিন হত্যার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার করতে পেরে পিবিআই গর্বিত। ছাত্র দীর্ঘ ৮ মাস পর ঝিনাইদহ সরকারী উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির মেধাবী ছাত্র সামিউল আলম সাফিন হত্যার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

গ্রেফতার হয় হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত মেহেদী হাসান বিল্টু (৩৫) নামে এক ঘাতককে। এই মামলায় তার মা জাহানারা বেগম পলাতক রয়েছে। বিল্টু ঝিনাইদহ পৌরসভার গয়াশপুর গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে।

জানা গেছে, এতো দিন ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশের কাছে সাফিন হত্যা মামলাটি ক্লু লেস ছিল। কোন অগ্রগতি না হওয়ায় ছায়া তদন্তকারী সংস্থা হিসেবে ঝিনাইদহ পিবিআই সাফিন হত্যার মোটিভ উদ্ধারে অত্যন্ত গোপনে মাঠে নামে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই’র এসআই মো.তৌহিদুল ইসলাম জানান, মেধাবী ছাত্র সাফিন হত্যার মোটিভ উদ্ধারে ঘাতক মেহেদী হাসান বিল্টুকে খুজে পেতে আমরা তার বড় ভাই লাল্টুকে টাইলসের কাজ করার কথা বলে কৌশলে পিবিআই অফিসে ডেকে নজর বন্দি করে ফেলি।

এরপর তাকে নিয়ে ২৫ জুলাই ঢাকায় রওনা দেন পিবিআই’র একটি চৌকস দল। লাল্টুকে দিয়ে ফোন দিয়ে বিল্টুর অবস্থান সনাক্ত করে সেখানে হানা দেয় পিবিআই। ঢাকার পল্লবী থানার কালসি এলাকা থেকে বিল্টুকে আটক করতে সমর্থ হয়। ঝিনাইদহ পিবিআই অফিসে জিজ্ঞাসাবাদে কি ভাবে সাফিনকে হত্যা করা হয় তার বর্ননা দেন বিল্টু। বিল্টু পিবিআইকে জানিয়েছে ঝিনাইদহ প্রিন্স হাসপাতালে টাইলসের কাজ করার সময় সে ও তার মা ব্যাবসায়ী আলমগীর হোসেন আলমের বাড়িতে চুরি করার ছক কষে। ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর বিল্টু ও তার মা জাহানারা বেগম আলমের বাসায় চুরি সংঘটিত করে বেরিয়ে আসার সময় স্কুল ছাত্র সাফিন তাদের দেখে ফেলে। এ সময় মা ও ছেলে দুজনে মিলে স্কুল ছাত্র সাফিনকে নির্মম ও নির্দয় ভাবে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর পালিয়ে যায়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত নিহতর পিতা কালীচরণপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও মটরসাইকেল ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন আলম জানান, তিনি এ ঘটনায় পরদিন ২৯ নভেম্বর ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করেন ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি অপারেশন মহসিন আলী।

পুলিশ এ ঘটনায় হামদহ শান্তিনগর পাড়ার মিন্টুর ছেলে রিফানকে আটক করলেও তার কাছ থেকে কোন তথ্য উদ্ধার করতে পারেনি। ৮ মাস মামলাটি মোটিভ ও ক্লুলেস থাকার পর অবশেষে ঝিনাইদহ পিবিআই’র পুলিশ সুপার আবু আশ্রাফের নিবিড় অনুসদ্ধানে মামলাটির গতি ফিরে পেল ও আলোর মুখ দেখলো।

এটি/এএস

Wordbridge School
Link copied!