• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাব্বিরের ছন্দে ফেরার ম্যাচে জিতল মাশরাফির রংপুর


ক্রীড়া প্রতিবেদক জানুয়ারি ১৯, ২০১৯, ০৫:৩০ পিএম
সাব্বিরের ছন্দে ফেরার ম্যাচে জিতল মাশরাফির রংপুর

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ৬ষ্ঠ আসরের ২১তম ম্যাচে চেনা ছন্দে ফিরলেন সাব্বির রহমান। ওপেনিং করতে নেমে মাত্র ৫১ বলে ৫টি চার আর ৬টি ছক্কায় ৮৫ রান করলেন এই হাডহিটার ব্যাটসম্যান। তাতে  সিলেট সিক্সার্স পেয়ে গেল ১৯৪ রানের লড়াকু পুঁজি। কিন্তু প্রতিপক্ষ যখন মাশরাফি বিন মর্তজার রংপুর রাইডার্স। তখন এই টার্গেটও যে যথেষ্ট নয়, তাই প্রমাণ করলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স, রাইলি রুশো আর ফরহাদ রেজারা। তিন বল হাতে রেখেই পাহাড় টপকালো বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।  

সিলেটের দেয়া ১৯৫ রানের পাহাড় টপকাতে নেমে শেষ ওভারে ফরহাদ রোজার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ভর করে ম্যাচে নাটকীয় জয় পায় রংপুর রাইডার্স। শেষ দুই ওভারে রংপুরের প্রয়োজন পড়ে ২৪ রানের। ক্রিসে তখন ব্যাট করছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি আর ফরহাদ রেজা। তখনও হয়তো অনেকেই ভেবে নিয়ে ছিলেন জিততে যাচ্ছে সিলেট। কিন্তু ম্যাচের নাটক মঞ্চায়ন তখনও বাকি। এমন সময় নাটকের মঞ্চে নায়ক হিসাবে আর্বিভূত হলেন ফরহাদ রেজা। মাত্র ৬ বলে ১৮ রান নিয়ে রংপুরকে নাটকীয় জয়ের স্বাদ পাইয়ে দিলেন এই অলরাউন্ডার। তাতে মাশরাফির অবদান ৬ রান। 

শুরুতেই হোঁচট খায় রংপুর। পাকিস্তানি মোহাম্মাদ ইরফানের করা ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই সাব্বির রহমানের তালুবন্দি হন ক্যারিবীয় দৈত্য ক্রিস গেইল। তবে অ্যালেক্স হেলসকে সঙ্গী করে দ্বিতীয় উইকেটে ৬২ রানের জুটি গড়েন রাইলি রুশো। দলীয় ৬৩ রানে অলক কাপালির বলে লিটন দাসের হাতে ধরা পরার আগে ৩৩ রান করেন অ্যালেক্স হেলস।  

এরপর ডি ভিলিয়ার্সের সঙ্গে নতুন করে জুটি গড়েন রুশো। উড়ন্ত গতিতে ছুটতে থাকে রংপুর। ফলে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন তিস্তা পাড়ের দলটি। কিন্ত তাসকিনের রুশোর বিদায়ে স্বপ্ন এলোমেলো হয়ে পড়ে আবারও। বিদায়ের আগে ৩৫ বলে ৯টি চার আর ২টি ছক্কায় ৬১ রানের যাদুকরি ইনিংস খেলেন এই দক্ষিণ আফ্রিকান।

আফ্রিকান সতীর্থকে হারিয়ে আর টিকতে পারেননি ডি ভিলিয়ার্সও। তাসকিনের বলেই বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন মি. ৩৬০ ডিগ্রি খ্যাত এই ব্যাটসম্যান। ফেরার আগে বিপিএলে নিজের  অভিষেক ম্যাচে ২১ বলে সমান ২টি করে চার আর ছক্কায় ৩৪ রান করেন তিনি। এরপর দলের হাল ধরতে পারেননি মোহাম্মদ মিথুন ও নাহিদুল ইসলাম। দুজনকেই শিকার করেন তাসকিন। ফলে দুই দলের জয়ের সম্ভাবনা দেখা দেয় ফিফটি ফিফটি।  

শেষ দুই ওভারে রংপুরের প্রয়োজন পড়ে ২৪ রানের। ক্রিসে তখন ব্যাট করছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি আর ফরহাদ রেজা। সিলেটের অধিনায়ক ওয়র্নার বল তুলে দেন মেহেদি হাসান রানার হাতে। কিন্তু আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি তিনি। তার প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাাঁকান মাশরাফি। শেষ বলে ছক্কা হাাঁকান রেজা। ঐ ওভারে মোট ১৯ রান হজম করেন রানা।

ফলে শেষ ওভারের জয়ের জন্য রংপুরের প্রয়োজন পড়ে মাত্র ৫ রানের। প্রথম বলে সিঙ্গেল নেন মাশরাফি, দ্বিতীয় বলে রান নিতে পারেননি রেজা। তবে পরের বলেই সোজা বোলারের মাথার উপর দিয়ে বাউন্ডারি মেরে রংপুরকে জয়ের স্বাদ পাইয়ে দেন ফরহাদ রেজা। রংপুরের ৪ উইকেটের জয়ে বিফলে যায় সাব্বির রহমানের ৫১ বলে ৮৫ রানের উড়ন্ত ইনিংস। সেই সঙ্গে তাসকিনের শিকার করা ৪ উইকেট। 

শনিবার (১৯ জানুয়ারি) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ঝড়ের আভাস দিয়েছিলেন ওপেনার লিটন দাস আর সাব্বির রহমান। তবে ৮ বলে ১টি চার আর ১টি ছক্কায় ১১ রান করে মাশরাফির শিকার হয়ে ফেরেন লিটন দাস। কিন্তু লিটনকে হারিয়েও ঝড় থামতে দেননি সাব্বির।

সাব্বির রহমানের ব্যাটিং দেখে উৎসাহিত হয়েছিলেন আফিফ হোসেন। কিন্তু খুব বেশি দুর যেতে দুর এগোতে পারেনি তিনি। রাইলি রুশোর অসাধারণ থ্রোতে  ব্যক্তিগত ১৯ রানে রানআউটে কাটা পড়েন আফিফ। এরপর ডেভিড ওয়ার্নারকে নিয়ে দলকে টেনে তোলেন সাব্বির। তাদের ৫১ রানের জুটি ভাঙেন মাশরাফি। ব্যক্তিগত ১৯ রানে ফেরেন ওয়ার্নার।

ওয়ার্নার বিদায় নিলে সাব্বিরের সঙ্গে নতুন করে জুটি বাঁধেন নিকোলাস পুরান। স্কোর বোর্ডে রান সংখ্যা বাড়াতে হবে। সেদিকে দৃষ্টি রেখে রংপুর বোলারদের চড়াও হন সাব্বির-পুরান। ফলে চ্যালেঞ্জিং স্কোরের পথে এগিয়ে যায় সিলেট। চমৎকার ব্যাটিংয়ে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির সঙ্গে এবারের বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরির সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন সাব্বির। কিন্তু শফিউল ইসলামের বলে লং অফে ধরা পড়েন রাইলি রোসের হাতে। তার আগেই  খেলেন ৮৫ রানের অনিন্দ্যসুন্দর ইনিংস। ৫১ বল মোকাবেলায় ৫ চারের বিপরীতে ৬ ছক্কায় এ ইনিংস সাজান তিনি।

শেষ পর্যন্ত ২৭ বলে ৪টি চার আর ৩টি ছক্কায় হার না মানা ৪৭ রানের ইনিংস খেলেছেন নিকোলাস পুরান। তাতেই নির্ধারিত ওভারে ৪ উইকেটে ১৯৪ রানের পাহাড় গড়ে সিলেট। রংপুরের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ২টি উইকেট নেন।একটি উইকেট নিয়েছেন শফিউল ইসলাম।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!