• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সারাদেশে নৌ-যান শ্রমিকদের লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১৩, ২০১৯, ১০:১৫ এএম
সারাদেশে নৌ-যান শ্রমিকদের লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা

ঢাকা: সারাদেশে আগামী ২৮ নভেম্বর দিবাগত রাত ১২ টা ১ মিনিট থেকে লাগাতার কর্মবিরতি পালনের হুমকি দিয়েছেন নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশন। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশনের এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ কর্মসূচি দেয়া হয়। সেদিন ১২টা ১ মিনিট থেকে সারা দেশে লাগাতার এই কর্মসূচী পালন করা হবে।  

সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার, ঢাকা নদীবন্দরকে সবধরনের সন্ত্রাসমুক্ত করা, কেরানি-কেবিন বয়-ইলেকট্রিশিয়ানসহ সব নৌ-শ্রমিককে গেজেট মোতাবেক বেতন প্রদানসহ ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহ আলম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন নৌযান শ্রমিকরা।

এদিন সমাবেশে নেতারা বলেন, ২০১৫ সালে উপস্থাপিত ১৫ দফা দাবির মধ্যে অমীমাংসিতগুলোকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে নিষ্পত্তিতে মালিকদের হঠকারিতা ও সময় ক্ষেপণের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ৩০ আগস্ট ১১ দফা দাবি উত্থাপন করে আন্দোলন শুরু করেন নৌযান শ্রমিকরা। ওই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে ফেডারেশন নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 

এর ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৪ অক্টোবর নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে মালিক, শ্রমিক ও সরকারের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে ৯ অক্টোবর শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গেও আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেও বিষয়গুলোর সঙ্গে একমত প্রকাশ করা হয়। কিন্তু মালিকদের অসহযোগিতায় দীর্ঘ ৬মাসেও এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ায় চলতি বছরের ১৫এপ্রিল মধ্যরাতে দেশব্যাপী কর্মবিরতিতে যান নৌযান শ্রমিকরা। 

এর পরদিনই শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মালিক সমিতিগুলোর প্রতিনিধি ও ফেডারেশনের নেতাদের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে দাবি নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত হওয়ায় কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়।

শ্রমিক নেতারা আরো অভিযোগ করে বলেন, সে সময়ও মালিকপক্ষের অনুপস্থিতি ও টালবাহানার কারণে ৪৫ কর্মদিবসের জায়গায় ৯০ দিন অতিবাহিত হলেও দাবি নিষ্পত্তি হয়নি। বাধ্য হয়ে নৌযান শ্রমিকরা চলতি বছরের ২৩জুলাই মধ্যরাত থেকে আবার কর্মবিরতি শুরু করেন। এরপর ২৪ জুলাই শ্রম অধিদপ্তরের আহ্বানে শ্রম প্রতিমন্ত্রীর অসুস্থতার কারণে বিদেশে অবস্থান, ঈদুল আজহা, বন্যা ইত্যাদি বিবেচনায় কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়। সে সময় ৩০ আগস্টের মধ্যে এ সমস্যা সমাধানের জন্য সুনির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়া হয়। 

কিন্তু এরমধ্যেও কোনো সভা না হলেও ১ সেপ্টেম্বর আরেকটি সভা আহ্বান করা হয়। সভায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী, সচিব ও শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং শ্রমিকপক্ষ উপস্থিত থাকলেও মালিকপক্ষ উপস্থিত হয়নি। এর প্রেক্ষিতে সরকার মৌখিকভাবে আরো ১৫ দিন সময় বৃদ্ধির প্রস্তাব করে। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর আবারো সভা আহ্বান করলে নানা অজুহাতে সভায় উপস্থিত হয়নি মালিকপক্ষ। এরপর এক মাসের সময় নিয়ে প্রায় ৪মাস অতিবাহিত হলেও মালিকদের হঠকারিতা ও সরকারের মালিক তোষণনীতির কারণে শ্রমিকদের দাবি মীমাংসা হয়নি বলে নৌযান শ্রমিক নেতারা জানান।

এরমধ্যে আন্দোলন নস্যাতের উদ্দেশ্যে কয়েক দফায় নৌযান শ্রমিকদের ওপর হামলা চালানো হয় জানিয়ে সংগঠনের নেতারা বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ১১ দফা দাবির সমস্যা সমাধানে সরকারকে আরো ১৫ দিন সময় দেয়া হলো। অন্যথায় ২৮ নভেম্বর দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে সব নৌযান শ্রমিক সারাদেশে লাগাতার কর্মবিরতি পালনকরবে। 

সভায় সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহ আলম ভূঁইয়া। সভায় বক্তব্য রাখের- সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফছার হোসেন চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক শেখ আবুল কাশেম, আব্দুল মালেক মাস্টার, আবু সাঈদ, হারুনুর রশিদ, আজিজুর রহমান, মাসুদ, জাহাঙ্গীর আলম, কামাল উদ্দিন ড্রাইভর, আলমগীর হোসেন মাষ্টার প্রমখ। সভা পরিচালনা করেন দপ্তর সম্পাদক প্রকাশ দত্ত। 

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!