• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সিইসির ভিন্ন সুরে বিব্রত আ.লীগ, সুবিধায় বিএনপি!


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ১০, ২০১৮, ০৫:৩১ পিএম
সিইসির ভিন্ন সুরে বিব্রত আ.লীগ, সুবিধায় বিএনপি!

ঢাকা: কেএম নুরুল হুদাকে সিইসি করে নির্বাচন কমিশন গঠন করার পর থেকে সমালোচনা করে আসছে বিএনপি। বারবার এই কমিশনের বিরোধীতা করে দলটি বলছে, এটি সরকারের তল্পিবাহক নির্বাচন কমিশন। এতে কোনো কর্ণপাত না করে এই কমিশনের অধীনেই একাধিক নির্বাচন পরিচালনা করা হচ্ছে। বরাবরই নির্বাচন কমিশন তাদের অধীনে অনুষ্ঠিত সব নির্বাচনকে সুষ্ঠু দাবি করে আসছে। একই দাবি করে আসছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও।

হঠাৎ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা’র একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা। গত মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক কর্মশালার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, বড় নির্বাচনে কিছু অনিয়ম থাকবেই। নির্বাচনে অনিয়ম হবে না এমন নিশ্চয়তা দেয়া সম্ভব নয়। তবে অনিয়ম হলে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, পাঁচ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে কোথাও কোথাও অনিয়ম হয়েছে। যেখানে বেশি অনিয়ম হয়েছে, সেখানে ইসি ব্যবস্থা নিয়েছে।

জাতীয় নির্বাচনেও এমন অনিয়ম হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,  পাবলিক নির্বাচন, বড় বড় নির্বাচনে কোথাও কোন অনিয়ম হবে না এই নিশ্চয়তা দেয়ার সুযোগ নেই। তদন্ত করে অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের আরো সংযত হয়ে কথা বলা উচিত। তিনি প্রায়ই ভালো কথা বলেন। স্লিপ হতেই পারে। হয়তো স্লিপ হয়েছে। আমি আশা করি, তিনি ভবিষ্যতে এ ধরনের বক্তব্য প্রদান করবেন না।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন নির্বাচন কমিশনার মাহাবুব তালুকদারও। তিনি বলেন, ‘সিইসির বক্তব্য অনিয়মকারীদের উসক দেবে। হতে পারে এটা তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। এটা কমিশনের সিদ্ধান্ত হতে পারে না। আমি অন্তত ব্যক্তিগতভাবে মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে. এম. নুরুল হুদার বক্তব্যের সঙ্গে মোটেও একমত নই।

মাহাবুব তালুকদার শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এই বক্তব্যে সাধারণ মানুষের ভেতরেও একটা খারাপ ধারণা তৈরি হতে পারে। এটা কমিশনের ভাবমূর্তিরও একটা ব্যাপার। আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের অঙ্গীকার নিয়ে নির্বাচন কমিশনে এসেছি। আমি চাই, জাতি একটি ভালো নির্বাচন দেখুক।

এদিকে শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, নির্বাচন কমিশনার সরকারের তল্পিবাহক। কিন্তু বিবেকের তাড়নায় একটি সত্য কথা বলে ফেলেছেন যে আগামী নির্বাচনে অনিয়ম যে হবে না তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। তার এ বক্তব্যের পরেই অন্যান্য কমিশনাররা দ্বিমত পোষণ করেছেন। এর পর প্রধান নির্বাচন কমিশনারের আর নিজের পদে থাকার কোনো অধিকার থাকতে পারে না। আমরা অবিলম্বে তার পদত্যাগ দাবি করি।

তবে সমালোচনার মাঝেও নিজের আগের অবস্থানেই অটল রয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। তিনি বলেছেন, সংসদ নির্বাচনে ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্র, প্রায় তিন লাখ ভোটকক্ষ; এত বড় নির্বাচনে কোথাও অনিয়ম হবে না- এমন কথা বললেও মিথ্যা কথা বলা হবে। আমি বাস্তবতার কথা বলছি, অনিয়ম হবে না- এমন নিশ্চয়তা আমি তো দিতে পারি না।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন করতে হবে। অক্টোবরের শেষে তফসিল ঘোষণা করা হবে। ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা ও সীমানা নির্ধারণ হয়েছে, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণের কাজ চলছে।

সোনালীনিউজ/জেএ

Wordbridge School
Link copied!