• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতের নির্দেশ মন্ত্রিসভার

সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ১২ শতাংশ কমেছে


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ২০, ২০২০, ০২:১৯ পিএম
সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ১২ শতাংশ কমেছে

ফাইল ছবি

ঢাকা : করোনা মহামারীর কারণে গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে মন্ত্রিসভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ শতাংশ কমেছে।

সোমবার (১৯ অক্টোবর) মন্ত্রিসভা বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে ২০২০ সালের তৃতীয় ত্রৈমাসিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এছাড়া করোনা সংক্রমণের সম্ভাব্য দ্বিতীয় পর্যায় (সেকেন্ড ওয়েভ) মোকাবিলায় বাইরে বের হওয়া মানুষের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল বৈঠকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের একথা জানান।

তিনি বলেন, বৈঠকে করোনা নিয়ে বিশেষ আলোচনা হয়েছে। সবার মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে সচেতনামূলক পদক্ষেপের সঙ্গে প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইন প্রয়োগ করতে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা দেখছি ইউরোপ-আমেরিকায় ফের করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি ওপর বিশেষভাবে নজর দিয়েছেন, সবাই যাতে সতর্ক থাকি, মাস্ক ব্যবহার করি।

যদি আমরা সবাই মাস্ক ব্যবহার করি, তাহলে আমাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে। এজন্য মানুষকে আরো বেশি করে সচেতন করতে হবে। অনেকের মধ্যে একটু শিথিল ভাব দেখা যাচ্ছে। করোনা মহামারীর মধ্যে গত জুলাইয়ের শেষ দিকে বাসার বাইরে সব জায়গায় সবার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে সরকার। অতি সংক্রামক এ ভাইরাস প্রতিদিনই মানুষের মৃত্যু ডেকে আনলেও নানা অজুহাতে এখনো অনেকে মাস্ক ব্যবহার করছেন না।

পাবলিক প্লেসে কোনোভাবেই মাস্ক ছাড়া যাওয়া যাবে না জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মসজিদ, জনসমাগম স্থল, বা সামনে দুর্গাপূজা আসছে, সেসব জায়গায় কেউ যেন মাস্ক ছাড়া না যান, তা নিশ্চিত করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভা আশা প্রকাশ করেছেন, সবাই সচেতন হয়ে মাস্ক ব্যবহারে আরেকটু বেশি মনোযোগী হলে আমরা এটা থেকে একটু হলেও পরিত্রাণ পাব। এ বিষয়ে মাঠ প্রশাসনকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত রোববার কমিশনার কনফারেন্স ছিল। সেখানে আমরা সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছি।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে আমরা বলে দিয়েছি তারা যেন ইমামদের মাধ্যমে সব মসজিদ থেকে অন্তত জোহর ও মাগরিব নামাজের পর মাইক বা সামনাসামনি নামাজের সময় সচেতন করেন। প্রত্যেকটি মসজিদ, বাজার বা গণজমায়েত হয়- এমন স্থানে যাতে স্লোগানের মতো (লেখা) থাকে যে, অনুগ্রহ করে মাস্ক ছাড়া কেউ প্রবেশ করবেন না। প্রয়োজনে মোবাইল কোর্টও পরিচালনা করা হবে।

এদিকে ২০২০ সালের তৃতীয় ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে মন্ত্রিসভায় নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ শতাংশ কমেছে। বৈঠকে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মন্ত্রিসভায় নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হারের প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে মন্ত্রিসভা বৈঠক ও গৃহীত সিদ্ধান্তের সংখ্যা ২০১৯ সাল থেকে ২০২০ সালে তুলনামূলক বেড়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাবের বিরূপ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিদ্যমান অগ্রগতির হার ৪৬ শতাংশ। আগের বছর একই সময়ে এ হার ছিল ৫৮ শতাংশ।

এ বছরের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কিছুটা ধীর হলেও মন্ত্রিসভা সন্তোষ প্রকাশ করেছে। বাস্তব অবস্থা তো সবাই জানে। করোনার জন্য পিছিয়ে পড়াটা যেন আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে কাটিয়ে উঠতে পারি সেজন্য বৈঠকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বর্তমান সরকারের সময়ে গত বছরের জানুয়ারি থেকে গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪২৭টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এরমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে ৩৫৪টি। বাস্তবায়নের হার ৮২ দশমিক ৯০ শতাংশ। বাস্তবায়নাধীন রয়েছে ৭৩টি।

২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৫টি মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়েছে। আর গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হয়েছে ২৩টি বৈঠক। ২০১৯ সালের বৈঠকে ২৫৮টি সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২৩৮টি বাস্তবায়ন হয়েছে। বাস্তবায়নের হার ৯২ দশমিক ২৫ শতাংশ। আর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৈঠকে ১৬৯টি সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে ১১৬টির বাস্তবায়ন হয়েছে। বাস্তবায়নের হার ৬৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৭টি আইন জারি করা হয়। প্রক্রিয়াধীন আছে ৩৩টি। নীতি, কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন হয়েছে ১৭টি। এই সময়ে দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক চুক্তি, প্রটোকল বা অনুসমর্থন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ১৯টি।

এছাড়া মন্ত্রিসভার জন্য ২৯৭টি সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উদ্যোগে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১১৫টি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!