• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সিলেটের অভিষেকে বাংলাদেশকে ‘লজ্জা’ উপহার জিম্বাবুয়ের


ক্রীড়া প্রতিবেদক নভেম্বর ৬, ২০১৮, ০৪:৪৩ পিএম
সিলেটের অভিষেকে বাংলাদেশকে ‘লজ্জা’ উপহার জিম্বাবুয়ের

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: অভিষেকে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামকে রঙিন করে তুলতে চেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু হলো উল্টোটাই। ৩২১ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমে দেড় সেশনের বেশি টিকতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮১ রানে গুটিয়ে গিয়ে বাংলাদেশ হেরেছে ১৫১ রানের বিশাল ব্যবধানে। প্রতিপক্ষ যদি দক্ষিণ আফ্রিকা বা অস্ট্রেলিয়া হতো তাহলে এই হার মানা যেত। কিন্তু যে জিম্বাবুয়ে এ বছরে প্রথম টেস্ট খেলল তাদের বিপক্ষে এমন বিশ্রি পরাজয় ভাবনার কারণ হয়ে দাঁবে বিসিবির কর্তাব্যক্তিদের।

জিততে হলে বাংলাদেশকে ৩২১ রান করতে হবে। তৃতীয় দিন শেষে এই দুশ্চিন্তা নিয়ে ঘুমোতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। যদিও সেদিনই ১০.১ ওভারে বিনা উইকেটে ২৬ রান তুলেছিলেন ইমরুল-লিটনের উদ্বোধনী জুটি। তারপরও চতুর্থ ইনিংসে এত রান তাড়া করে বাংলাদেশ কখনো জিততে পারেনি। চতুর্থ দিনের শুরুটা হওয়া দরকার ছিল সাবধানি। ইমরুল কায়েস ও লিটন দাস সেটা করলেনও বটে। কিন্তু ৫৬ রানের মাথায় ২৩ তম ওভারের শেষ বলে সিকান্দার রাজাকে পুল করে মিড উইকেট দিয়ে চার মারতে চেয়েছিলেন লিটন। চার তো হলোই না বল গিয়ে লাগল থাইয়ে। এলবিডব্লু হয়ে গেলেন লিটন ব্যক্তিগত ২৩ রান করে।

মুমিনুল এসে কোথায় দলকে টেনে নিয়ে যাবেন উল্টো কাইল জার্ভিসের বলে বোল্ড হয়ে বাংলাদেশকে বিপযয়ে ফেললেন। ১৩ বলে ৯ রান করে ফিরলেন ‍মুমিনুল। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে জুটি বেঁধে জোড়া ‍উইকেট ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেন ইমরুল।কিন্তু বেশিক্ষণ সেই কাজটি করতে পারলেন না। সিকান্দার রাজাকে সুইপ করতে গিয়ে নিজেই নিজের সর্বনাশটা ডেকে আনলেন ইমরুল। ফিফটি থেকে ৭ রান দূরে ৪৩ রানে বোল্ড হয়ে গেলেন। ১০৩ বলে ছয়টি চারের সাহায্যে এই রান করেন ইমরুল।

রান পাচ্ছিলেন না বলে ছটফট করছিলেন মাহমুদউল্লাহ। সেটাই তাঁর জন্য কাল হলো। সেই সিকান্দার রাজার বলেই ক্যাচ তুলে দিলেন মাহমুদউল্লাহ (১৬)। ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করে মধ্যাহ্নভোজের ঠিক আগে আউট হয়ে গেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত (১৩)। তাঁর বিদায়ের পরপরই মধ্যাহ্নভোজে চলে যায় দু’দল। দুপুরের খাবারটা যে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের বিষাদ লাগবে সেটি না বললেও চলে। ১১১ রান ‍তুলতেই যে চলে গেছে ৫ উইকেট।

মধ্যাহ্নভোজ শেষে লড়াইয়ের ছিটেফোটাও দেখা গেল না ব্যাটসম্যানদের মধ্যে। জিম্বাবুয়ের বোলারদের বিপরীতে দাঁড়িয়ে লড়লেন কেবল অভিষিক্ত আরিফুল হকই। ৩৮ রান করেছেন তিনি। তাঁর ইনিংসটি না হলে লজ্জাটা যে আরও বড় হতো, সেটি নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, দেশের মাটিতে বাংলাদেশের অভিজ্ঞ কোনো ব্যাটসম্যানই একটু প্রত্যয় দেখাতে পারলেন না। এ বছরের জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দুটি টেস্টে যে দুঃস্বপ্নের মুখোমুখি বাংলাদেশকে হতে হয়েছিল, তা থেকে নিজেদের বের করতে পারল না দল।

জিম্বাবুয়ের সেরা বোলার ব্রেন্ডন মাভুতা। লেগব্রেকে তিনি তুলে নিয়েছেন ৪ উইকেট। সিকান্দার রাজা শুরুর ধাক্কাটা দিয়েছেন—৩ উইকেট তুলে নিয়ে। এ ছাড়া ওয়েলিংটন মাসাকাদজা নিয়েছেন ২ উইকেট। কাইল জার্ভিস নিয়েছেন একটি।

প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের করা ২৮২ রানের জবাবে ম্যাচের দ্বিতীয় দিনই নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৪৩ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ফলে প্রথম ইনিংস থেকে ১৩৯ রানের লিড পায় জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় দিন শেষসময়ে ২ ওভার ব্যাট করার সুযোগ পায় জিম্বাবুয়ে। বিনা উইকেটে ১ রান করেছিলো তারা। ফলে ১৪০ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে জিম্বাবুয়ে। সোমবার (৫ নভেম্বর) নিজেদের দ্বিতীয়ইনিংসে ১৮১ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। এতে বাংলাদেশের সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩২১ রান।

সোনালীনিউজ/আরআইবি/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!