• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
বিচার শুরু

সু চিকে অপরাধ স্বীকারের আহ্বান ৭ নোবেলজয়ীর


আন্তর্জাতিক ডেস্ক ডিসেম্বর ১০, ২০১৯, ০৪:১৭ পিএম
সু চিকে অপরাধ স্বীকারের আহ্বান ৭ নোবেলজয়ীর

ঢাকা: অবশেষে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানি মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় সকাল দশটায় নেদারল্যান্ডসের হেগে এই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। পশ্চিম আফ্রিকার ছোট এই দেশটির বক্তব্যের মধ্য দিয়ে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মঙ্গলবার গাম্বিয়ার রোহিঙ্গা গণহত্যার শুনানি শুরু হচ্ছে। চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।

এদিকে, নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর গণহত্যা ও জাতিগত নিধনযজ্ঞ পরিচালনার অভিযোগের সত্যতা প্রকাশ্যে স্বীকার করে নেয়ার জন্য দেশটির নেত্রী অং সাং সুচির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বের ৭ নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিত্ব।

মঙ্গলবার (১০ ডিসবর) সকালে আন্তর্জাতিক আদলতে শুরু হয় রোহিঙ্গা নিপীড়ন মামলার প্রথম দিনের শুনানি।

এরই প্রেক্ষিতে প্রকাশিত এক যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে সুচির প্রতি রোহিঙ্গা নিপীড়নের সত্যতা এবং এক্ষেত্রে দেশটির সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করে নেয়ার আহ্বান জানান এ সাত নোবেলজয়ী ব্যক্তি। একইসঙ্গে তারা নির্মম এই গণহত্যার জন্য মিয়ানমার সেনা কর্মকর্তাদের অবিলম্বে জবাবদিহিতার আওতায় আনার কথাও বলেছেন। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।

প্রকাশিত বিবৃতিতে তারা বলেছেন, ‘শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হিসেবে আমরা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যাসহ অপরাধগুলো প্রকাশ্যে স্বীকারের জন্য নোবেলজয়ী অং সান সু চির প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে, নৃশংস এই ঘটনায় নিন্দা জানানোর বিষয়টি সু চি অস্বীকার করেছেন।’

তারা বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর ঘটনায় একমাত্র মিয়ানমারকে দায়ী করার জন্য আমরা গাম্বিয়ার প্রশংসা করছি। এমনকি শান্তির মানুষ হিসেবে আমরা রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিয়মতান্ত্রিক বৈষম্য মোকাবিলা ও রোহিঙ্গাদের জাতীয়তা, ভূমির মালিকানা, আন্দোলনের স্বাধীনতাসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের আহ্বান জানাই।
প্রকাশিত এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন- শান্তিতে নোবেলজয়ী ভারতের কৈলাশ সত্যার্থী, ইরানের শিরিন ইবাদি, ইয়েমেনের তাওয়াক্কুল কার্মান, লাইবেরিয়ার লেমাহ গবোই, গুয়েতেমালার রিগোবার্টা মেনচ তুম, উত্তর আয়ারল্যান্ডের মাইরেড মাগুয়ের ও যুক্তরাষ্ট্রের জোডি উইলিয়ামস।

আইসিজের পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুসারে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে এই গণহত্যার শুনানি শুরু হয়। শুনানি চলবে আগামী বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) পর্যন্ত। যার মধ্যে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) হবে মিয়ানমারের শুনানি, যেখানে অংশ নেবেন নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি। 

এরপর বৃহস্পতিবার সকালে গাম্বিয়া এবং একই দিন বিকালে মিয়ানমার প্রতিপক্ষের যুক্তি খণ্ডন ও চূড়ান্ত বক্তব্য উত্থাপন করা হবে। এবার গাম্বিয়ার পক্ষ থেকে শুনানিতে অংশ নেবেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল ও আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু। তাছাড়া ট্রাইব্যুনালে মামলা পরিচালনা করবেন তামবাদু। যেখানে আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ যুক্তরাজ্যের প্রফেসর ফিলিপ স্যান্ডসসহ বিশ্ব পরিসরে নেতৃস্থানীয় কয়েকজন আইনজ্ঞ শুনানিতে অংশ নিতে পারেন। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। 

এ সময় হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাত লাখেরও বেশি মানুষ। চলতি বছরের ১১ নভেম্বর জেনোসাইড কনভেনশনের আওতায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে গাম্বিয়া। মামলা গ্রহণ করে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক আদালত।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!