বাগেরহাট : সুন্দরবন থেকে উদ্ধার হয়েছে বনে হারিয়ে যাওয়া শরণখোলার ৬ কিশোর ।বণ্যপ্রানীর হামলা থেকে রক্ষায় সারারাত ঝড় বৃষ্টির মধ্যে ওরা গাছে চড়ে ছিলো। পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে প্রায় ১৮ ঘন্টা পর ভোর রাত চারটায় সুন্দরবনের ধানসাগর বনাঞ্চল থেকে ৬ কিশোরকে উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৮ মে) দুপুরে তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
উদ্ধার হওয়া কিশোররা হচ্ছে, শরণখোলা উপজেলার দক্ষিন আমড়াগাছিয়া গ্রামের ইসাহাক খলিফার পুত্র জয় (১৬), ফারুক খলিফার পুত্র সাইমুন (১৬), শহিদুল খলিফার পুত্র জুবায়ের (১৭), শহিদুল খলিফার পুত্র মাইনুল ইসলাম (১৮), জাহাঙ্গীর তালুকদারের পুত্র রহিম (১৭) ও রায়েন্দা বাজারের জাহাঙ্গীর খলিফার পুত্র ইমরান (১৯)।
শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ এসকে আব্দুল্লাহ আল সাইদ জানান, বুধবার সকাল ১০টায় ওই ছয় কিশোর বন্ধু মিলে কৌতুহলবশত সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর ষ্টেশনের সামনে দিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে। বনে প্রবেশের কিছুক্ষন পরে তারা পথ হারিয়ে গভীর জঙ্গলে চলে যায়। পথ খুজে না পেয়ে সন্ধ্যায় তারা বন্যপ্রাণীর হাত থেকে রক্ষায় বনের বিভিন্ন গাছে আশ্রয় নেয়।
কিশোরদের মধ্যে রায়েন্দা সরকারি পাইলট হাই স্কুলের এসএসসি পরক্ষার্থী জয় বুদ্ধি খাটিয়ে তার মোবাইল থেকে সন্ধ্যায় ৯৯৯ এ খবর দেয়। ৯৯৯ থেকে তারা সরাসরি শরণখোলা থানায় কথা বলিয়ে দেয়। এরপর থানা ও ধানসাগর নৌ-পুলিশ গ্রামবাসীদের নিয়ে সুন্দরবনে তল্লাশি অভিযান শুরু করেন। তারা মাইকিং করে কিশোরদের সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা করে। এরপর মোবাইলে যোগাযোগের মাধ্যমে ভোর ৪ টায় সময় বনের নাপিতখালী নামক স্থানে গহীন জঙ্গলে তাদের সন্ধান মিলে। কিশোররা লোকালয় থেকে প্রায় ৫/৬ কিলোমিটার গভীর বনে ঢুকে পড়েছিল।
কিশোর জয় জানায়, তার মোবাইলে ব্যালেন্স ছিল না। কিন্তু সে জানতো ব্যালেন্স না থাকলেও ৯৯৯ এ ফোন করা যায়। তাই সে বুদ্ধি খাটিয়ে ৯৯৯ ফোন করে সহযোগীতা চায়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উদ্ধারকৃত কিশোরদের শরণখোলা থানায় মিষ্টি খাইয়ে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেয়া হয়।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ বেলায়েত হোসেন বন থেকে কিশোর উদ্ধারের কথা স্বীকার করে বলেন, ধানসাগর ষ্টেশনের বন লোকালয় সংলগ্ন হওয়ায় মানুষ বনরক্ষীদের চোখ এড়িয়ে যখন তখন বনে প্রবেশ করে থাকে। ভবিষ্যতে মানুষের প্রবেশ ঠেকাতে বেষ্টনী তৈরী করা হবে বলে তিনি জানান।
সোনালীনিউজ/এএস
আপনার মতামত লিখুন :