• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সেই নাঈমকে মরনোত্তর জাতীয় পদক দিচ্ছেন ইমরান খান!


আন্তর্জাতিক ডেস্ক মার্চ ১৭, ২০১৯, ০৬:১৫ পিএম
সেই নাঈমকে মরনোত্তর জাতীয় পদক দিচ্ছেন ইমরান খান!

ঢাকা: নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের ঘটনায় নিহত মিয়া নাঈম রশিদকে মরনোত্তর জাতীয় পুরস্কারে ভূষিত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে হামলার সময় তিনি হামলাকারীকে থামাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হলে পাকিস্তানের এই ‘বীর’ মারা যান।

প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এক টুইট বার্তায় জানান, পাকিস্তান নাঈম রশিদের জন্য গর্বিত। তিনি হামলাকারীকে আটকাতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন। এই সাহসিকতার পরিচয় জাতীয় পুরস্কারের মাধ্যমে স্মরণ করা হবে। সরকার ক্রাইস্টচার্চের ঘটনার শিকার সকল পাকিস্তানিদের সর্বোচ্চ সহায়তা দিতে প্রস্তুত।

নিউজিল্যান্ডের আল নূর মসজিদে ব্রেনটন ট্যারান্ট যখন এলোপাতাড়ি গুলি চালাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই তাকে জাপটে ধরে আটকানোর চেষ্টা করেন নইম রশিদ। সে সময় রশিদ না আটকালে নিহতের সংখ্যা আরো অনেক বাড়ত। সেই অসমসাহসী ব্যক্তি শনিবার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাতে মারা গেছেন।

নিউজিল্যান্ডের সুন্দর শহর ক্রাইস্টচার্চে দুইটি মসজিদে নৃশংস হামলার ঘটনায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন মানুষ। শোক প্রকাশের ভাষাও যেন হারিয়ে ফেলেছেন মুসলিম অধিবাসীসহ স্থানীয় অনেকে। কাপুরুষোচিতভাবে অর্ধশত মুসল্লি হত্যায় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নিন্দার ঝড় উঠেছে বিশ্বজুড়ে।

ক্রাইস্টচার্চে আল নুর মসজিদে চালানো হামলার ভিডিওটির একটি অংশে দেখা যায় একজন গুলিবিদ্ধ হবার আগে তিনি হামলাকারীকে বাধা দেবার চেষ্টা করেন। তিনি হলেন পাকিস্তানের নাঈম রশিদ।

এঘটনায় তিনি গুরুতরভাবে আহত হয়েছিলেন। হাসপাতালে নেয়া হলে তার মৃত্যু হয়। শুক্রবার রাতে তিনি মারা যান বলে নিশ্চিত করেছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

নাঈম রশিদ মূলত পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদ থেকে আসা। তিনি ক্রাইস্টচার্চে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।

রশিদকে সবাই বীর হিসেবে দেখছেন। তার ভাই খুরশিদ রশিদ জানিয়েছেন ভিডিওটি দেখার পর তার সাহসী ভূমিকার জন্য তারা গর্বিত। তিনি বলেন, তিনি ছিলেন একজন সাহসী ব্যক্তি এবং আমি সেখানকার লোকজনের কাছে শুনেছি, সেখানে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন বলেছেন যে তিনি সেই হামলাকারীকে থামানোর চেষ্টা করে কয়েকজনের জীবন বাঁচিয়েছিলেন।

হামলায় নাঈম রশিদের বড় ছেলে তালহা রশিদও নিহত হয়েছেন। যখন পরিবারটি নিউজিল্যান্ডে চলে আসে তখন তালহার বয়স ১১ বছর ছিল।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার মৃত্যুর খর নিশ্চিত করেছে। স্বজন ও বন্ধুদের কাছে জানা গেছে, তালহা সম্প্রতি নতুন একটি চাকরি পেয়েছিল এবং শিগগিরই তার বিয়ে করার কথা ছিল।

যেখানে তার বিয়ে নিয়ে আয়োজন শুরু হওয়ার কথা হচ্ছিল সেখানে সম্পূর্ণ ভিন্ন আলোচনা চলছে এখন।

লাহোর থেকে তালহার চাচা জানান, অল্প কিছুদিন আগে যখন নাঈম রশিদের সাথে আমার কথা হচ্ছিল সে তার পাকিস্তান যাওয়ার পরিকল্পনা এবং ছেলেকে বিয়ে করানোর ইচ্ছার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু এখন আমরা বাবা ও ছেলে দুজনের মৃতদেহ পাকিস্তানে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আয়োজন করছি।

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আর্ডান জানিয়েছেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলমানরা এ হামলায় নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তুরস্ক, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশের মানুষ রয়েছে।

সৌদি আরবের আল-আরবিয়া টেলিভিশনের বরাতে জানা যায়, একজন সৌদি নাগরিক এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!