• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সেই লেগুনার চালক কথা বলছিলেন মোবাইলে, ছিল না লাইসেন্স


নাটোর প্রতিনিধি আগস্ট ২৬, ২০১৮, ০৮:০৯ পিএম
সেই লেগুনার চালক কথা বলছিলেন মোবাইলে, ছিল না লাইসেন্স

নাটোর : নাটোরে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ লেগুনা যাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, দুর্ঘটনাকবলিত ওই লেগুনার ফিটনেস সার্টিফিকেট এবং চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। এছাড়াও দূর্ঘটনার পূর্বমুহূর্তে লেগুনার ওই চালক মোবাইল ফোনে কথা বলায় ব্যস্ত ছিলেন।

নাটোর-পাবনা মহাসড়কে শনিবার (২৫ আগস্ট) বিকাল ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ১৫ জনই ছিলেন লেগুনা যাত্রী। দূর্ঘটনায় আহত হন আরও ২৫ জন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে দূর্ঘটনা প্রসঙ্গে লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান জানান, চ্যালেঞ্জার পরিবহনের একটি বাস যাত্রী নিয়ে পাবনা থেকে রাজশাহী যাচ্ছিল। এদিকে লেগুনাটি যাচ্ছিল বনপাড়া থেকে ঈশ্বরদী। ক্লিক মোড়ে সাদিয়া ফিলিং স্টেশনের সামনে বাসটি লেগুনাকে ধাক্কা দেয়। এসময় রাস্তার পাশে খাদে গাছের সঙ্গে ধাক্কা দেয়। বাসের ধাক্কায় লেগুনাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।

বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামসুন নূর জানান, প্রাথমিকভাবে তদন্তে জানা গেছে লেগুনাটির নিবন্ধন ও ফিটনেস ছিল না বলছিলেন। লেগুনার চালকেরও ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। দূর্ঘটনায় আহত লেগুনার একাধিক যাত্রী জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার আগে চালক মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন। দুর্ঘটনাবকলিত চ্যালেঞ্জার পরিবহনের বাসটি এই সড়কে নিয়মিত চলাচল করতো।

বাসের চাপায় দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া লেগুনার যাত্রী আহত নুরসেদ সরদার (৬৮) কথায় প্রাথমিক তদন্তের সত্যতা পাওয়া যায়। নাটোর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুরুতর আহত ওই যাত্রী সাংবাদিকদের বলেন, লেগুনাটি বড়াইগ্রামের বনপাড়া থেকে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া যাচ্ছিল। ছাড়ার পর থেকে চালক এলোমেলো গাড়ি চালাচ্ছিল। দুর্ঘটনার সময় সে মোবাইল ফোনে কথা বলছিল।

এদিকে, ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন থেকে একটি কমিটি এবং অপরটি বগুড়া হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছে। এই দুই কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা, আহতদের ১০ হাজার টাকা এবং বিনা খরচে চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন।

এদিকে, রোববার বেলা ১২টার দিকে পুলিশ বগুড়া শহরের মধ্য পালশা এলাকার বাড়ি থেকে চ্যালেঞ্জার পরিবহনের মালিক মঞ্জু সরকারকে আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। আটক মঞ্জু সরকার পুলিশকে জানান, তার বাসের চালক শামিমের বাড়ি শহরের মালগ্রামে এবং হেল্পার কমলের বাড়ি সদরের গোকুল গ্রামে। মঞ্জু সরকারের দেয়া তথ্যে পুলিশ চালক ও হেলপারকে গ্রেফতারে অভিযান চালায়। কিন্তু পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করা যায়নি।

এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর শনিবার রাত থেকে মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন ছাড়াও লেগুনা, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভটভটি চলাচল বন্ধ করতে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। রবিবার দুপুর পর্যন্ত এধরনের ৫২টি যানবাহন আটক করা হয়েছে।

নাটোরে দুর্ঘটনা কবলিত চ্যালেঞ্জার পরিবহনের বাসটির মালিক মঞ্জু সরকারকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শেখ ফরিদ উদ্দিন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!