• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সেঞ্চুরিতে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করলেন সাব্বির, তবুও হার বাংলাদেশের


ক্রীড়া প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৯, ১২:০৯ পিএম
সেঞ্চুরিতে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করলেন সাব্বির, তবুও হার বাংলাদেশের

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বাংলাদেশের ইনিংসে সাব্বির রহমানের ইনিংস দেখে মনে হয়েছে তিনি যেন নিঃসঙ্গ এক শেরপা। যাকে সঙ্গ দেওয়ার মতো কেউ নেই। স্কোরবোর্ডে নিউজিল্যান্ডের ৩৩০ রান দেখেই বোঝা গিয়েছিল এই ম্যাচের ভাগ্য কী হতে চলেছে। তারপরও যারা ভেবেছিলেন বাংলাদেশ লড়াই চালিয়ে যাবে তাদের হতাশ করেছে টপ অর্ডার।

স্কোরবোর্ডে ২ রান উঠতে না উঠতেই নেই তামিম ইকবাল, লিটন দাস আর সৌম্য সরকার। ম্যাচ কী আর থাকে? উপরন্তু শঙ্কা জেগেছিল বাংলাদেশ না আবার একশ-এর নিচে না গুটিয়ে যায়। সেই শঙ্কা অবশ্য সত্যি হয়নি। কারণ সাব্বির। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে তুলে নিয়েছেন সেঞ্চুরি। বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডের ৩৩০ রান তাড়া করতে নেমে ২৪২ রানে অলআউট হয়ে ৮৮ রানে হেরেছে। ফলে তিন ম্যাচের তিনটিতেই হেরে হোয়াইটওয়াশ হলো মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।

এদিন প্রাথমিক বিপর্যয়টা সামাল দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ। দুজনের খেলা দেখে মনে হচ্ছিল বড় একটা জুটি হতে চলেছে। কিন্তু দলীয় ৪০ রানের মাথায় ট্রেন্ট বোল্টের বলে কলিন মুনরোর হাতে ক্যাচ তুলে দিলেন মুশফিক (১৭)। এরপরই আসলে সাব্বির রহমানের লড়াই শুরু। মুশফিকের বিদায়ের পর মাহমুদউল্লাহও বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি ফিরে গেছেন ৩৬ বলে ১৬ রান করে। ৬১ রানে ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে আস্তে আস্তে সম্মানজনক স্কোরের দিকে নিয়ে গেছে সাব্বি-সাইফউদ্দিনের ষষ্ঠ উইকেটে ১০০ রানের জুটি। ১৬১ রানে সাইফউদ্দিনকে ফিরিয়ে এই জুটি বিচ্ছিন্ন করেন বোল্ট। তাঁর আগে এই অলরাউন্ডারের ব্যাট থেকে এসেছে ৬৩ বলে ৪৪। শেষের দিকে মেহেদি হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন সাব্বির। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি আউট হয়েছেন টিম সাউদির বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে।

ব্যাট হাতে সাব্বির সমালোচকদের জবাব দিলেন সাব্বির। তাঁর দলে ঢোকা নিয়ে অনেক কথা হয়েছিল। অবশ্য সাব্বির যে প্রক্রিয়ায় দলে ঢুকেছিলেন তাতে কথা উঠাটাই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু এক সেঞ্চুরি করে তিনি সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দিলেন। ১০২ রানের ইনিংস সাব্বির খেলেছেন ১১০ বলে। ১২টি চারের পাশাপাশি ছক্কা মেরেছেন দুটি। মিরাজের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৪ বলে ৩৭। ৬৫ রান দিয়ে ৬ উইকেট তুলে নিয়েছেন সাউদি। ৩৭ রানে ২ উইকেট বোল্টের।

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভালে টস জিতে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠান বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। আগে ব্যাট করতে নেমে দারুন এক নজির গড়েছেন রস টেলর। রুবেলের বলে মাহমুদউল্লাহর তালুবন্দী হওয়ার আগে ৬৯ রানের ইনিংস খেলে রেকর্ড বইয়ে নাম লিখিয়ে ফেলেছেন টেলর। তিনিই এখন নিউজিল্যান্ডের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের মালিক। ২৭৯ ম্যাচে ৮ হাজার ৭ রান নিয়ে নিউজিল্যান্ডের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান ছিল সাবেক কিউই অধিনায়ক স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের। তাঁর রেকর্ডকে পেছনে ফেলতে টেলরকে দরকার ছিল ৫১ রান। এই ম্যাচের আগে ৩৪ বছর বয়সী এই মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানের ২১৭ ম্যাচে রান ছিল ৭ হাজার ৯৫৭। আজকের ম্যাচে ৭ চারে ৮২ বলে ৬৯ রানের ইনিংস খেলেন টেলর।

২১ রানের মাথায় কিউইদের প্রথম আঘাত করেন মাশরাফি। পাঁচ নম্বর ওভারে ওপেনার মুনরোকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। সিরিজে টানা দুই সেঞ্চুরি করা গাপটিল সাইফউদ্দিনের শিকার হন দলীয় ৫৯ রানের মাথায়। দুই উইকেট হারানোর পর নিউজিল্যান্ডের তৃতীয় উইকেট পড়ে ১৫১ রানের মাথায়। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে আউট হওয়ার আগে হেনরি নিকোলস করেন ৬৪ রান।

এর আগে টেলরের সঙ্গে গড়েন ইনিংসে ৯২ রানের সর্বোচ্চ জুটি। নিকোলাস আউট হলে ল্যাথামকে সঙ্গে নিয়ে ৫৫ রানের জুটি গড়েন টেলর। ৩৯তম ওভারে দলের ২০৬ রানের টেলর ফিরে গেলে নিশামকে সঙ্গে নিয়ে বাকি কাজ সারেন ল্যাথাম।মোস্তাফিজের স্লোয়ারে ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে ৫১ বলে ৫৯ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন ল্যাথাম। নিশামের সঙ্গে গড়েন ৬৫ রানের জুটি।

এসব ছোট-বড় জুটির ওপর ভর করে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সামনে ৩৩১ রানের লক্ষ্য দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। মোস্তাফিজ ২ উইকেট পেলেও সবচেয়ে বেশি ঝড় গেছে তার ওপর দিয়ে। ১০ ওভারে তিনি ৯৩ রান দিয়েছেন। মাশরাফি ৫১, রুবেল ৬৪, সাইফউদ্দিন ৪৮, মিরাজ ৪৩ রান দিয়ে পেয়েছেন ১টি করে উইকেট।

সোনালীনিউজ/আরআইবি/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!