• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সেশনজট এড়াতে বন্ধের দিনেও পরীক্ষা


জবি প্রতিনিধি মে ২২, ২০১৯, ০১:৫১ পিএম
সেশনজট এড়াতে বন্ধের দিনেও পরীক্ষা

ঢাকা : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগে রয়েছে সেশনজট। সেশনজট এড়াতে বন্ধের দিনেও নেওয়া হচ্ছে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা। জবির সব বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে সেমিস্টার পদ্ধতি চলমান রয়েছে। প্রতি শিক্ষাবর্ষে ১ম সেমিস্টার জানুয়ারি থেকে জুন এবং ২য় সেমিস্টার জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে শেষ করার নিয়ম আছে।

সময়মতো সেমিস্টার শেষ করতে এবং সেশনজট কমাতে পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতর ও গ্রীষ্মকালীন ছুটির মধ্যেও নেওয়া হচ্ছে পরীক্ষা। তবে বন্ধের দিনে পরীক্ষার বিষয় নিয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী ইতিবাচক মত দিলেও অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন সমস্যার কথা বলছেন।

রেজিস্ট্রার দফতর সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ মে থেকে ২০ জুন পর্যন্ত পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতর ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি শুরু হয়েছে। তবে যেসব বিভাগে ১৯ মে’র আগে সেমিস্টার ফাইনাল শেষ হবে না, সেই বিভাগসমূহে ১৯ মে’র পরও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। অনেক বিভাগে এখনো সেশনজট রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি সেশনজট কমানোর। যদি পরীক্ষাগুলো সময়মতো নেওয়া না হয় তাহলে আরো সেশনজটের কবলে পড়বে অনেক বিভাগ। তাই শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করেই বন্ধের দিনেও অনেক বিভাগে পরীক্ষা রাখা হয়েছে এবং পরীক্ষার দিনগুলোতে অন্যন্যা দিনের মতো শিক্ষার্থীদের জন্য বাস চলাচল করবে বলে জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতর সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে সমাজবিজ্ঞান, ব্যবসায় ও আইন অনুষদের অনেক বিভাগে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তবে বিশেষায়িত বিভাগ চারুকলা, সঙ্গীত, নাট্যকলা এবং বিজ্ঞান ও কলা অনুষদের কিছু বিভাগের শিক্ষার্থীরা এখনো সেশনজট থেকে রেহাই পাচ্ছে না। এসব বিভাগে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত ছয় থেকে দশ মাসের সেশনজট থাকলেও এর পরবর্তী ১২ থেকে ১৪তম ব্যাচসমূহে সেশনজট নেই।

সেশনজটের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাট্যকলা বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা দেড় বছর পিছিয়ে রয়েছে। ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা এক বছর, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ছয় মাস পিছিয়ে রয়েছে। ইংরেজি বিভাগে সেশনজট রয়েছে। বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা এক বছর, ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা সাত মাস, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা এক বছর, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছেন প্রায় সাত মাস।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগ চালু হয় ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে। নতুন চালু হওয়া বিভাগটির প্রথম ব্যাচ ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা এক বছর ও ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রায় সাত মাস পিছিয়ে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা দেড় বছরের জটে রয়েছে। বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রায় ৮ মাস পিছিয়ে রয়েছে। রসায়ন বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে দেড় বছর, ২০১৫-১৬ ছয় মাস, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ছয় মাস, ২০১৫-১৬ সেশনে চার মাস পরিসংখ্যান ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ছয় মাস, আইন বিভাগ ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের যথাক্রমে ছয় ও আট মাস, অর্থনীতি বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে এক বছর জটে মাস্টার্স ১ম সেমিস্টারে, ইতিহাসের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে ছয় মাসের জটে রয়েছে শিক্ষার্থীরা।

পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘রমজানের মধ্যে দূর থেকে এসে ক্লাস করা আমাদের জন্য অনেক কষ্টের। এরপরও যদি নির্দিষ্ট সময়ে বাকি সেমিস্টারগুলো শেষ করা যায় তবে আমরা উপকৃত হব। তবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হল না থাকায় আমাদের মেসে থাকতে হয়। অধিকাংশ বিভাগ বন্ধ থাকায় মেসের অনেক সদস্য চলে যাবে। মেসে থাকা, খাওয়া, নিরাপত্তা নিয়ে জটিলতা দেখা দেবে। সেশনজটের বিষয়ে নাট্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান কামালউদ্দিন খান বলেন, ‘আমরা জানুয়ারি থেকে সব সেমিস্টারের ক্লাস নিয়মিত নিচ্ছি। আমরা চেষ্টা করছি সেশনজট কমানোর। এখন আর কোনো ব্যাচের সেশনজট থাকবে না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যলয়ের নিয়ম আছে সময়মতো সেমিস্টার শেষ করার। সময়মতো যদি সেমিস্টার শেষ করতে না পারে তাহলে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়বে। তাই শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে সময়মতো সেমিস্টার শেষ করতে বন্ধের দিনে পরীক্ষা রাখা হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!