• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

স্বৈরশাসকরা কোন দিন জনগণের হাতে ক্ষমতা দিতে চায় না


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ১৯, ২০১৯, ০৭:৩৮ এএম
স্বৈরশাসকরা কোন দিন জনগণের হাতে ক্ষমতা দিতে চায় না

ঢাকা : জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, আমাদের অতীতের অভিজ্ঞতা বলে দেয়, জনগণের ঐক্যের কোনও বিকল্প নেই। ঐক্যের ডাক জেলা, গ্রাম, পাড়া-মহল্লায় নিতে যেতে হবে। ক্ষমতার মালিক জনগণ যেন নিজের ভূমিকা রাখতে পারে। সেজন্য ঐক্যকে সুসংহত করতে হবে।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। নির্বাচন কেন্দ্রিক সংকট সমাধানে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন ও প্রাসঙ্গিকতা শিরোনামের এ সভার আয়োজন করে মুক্তিজোট।

ড. কামাল বলেন, স্বৈরশাসকরা জনগণের হাতে ক্ষমতা দিতে চায় না। তবে অতীতে এ ধরনের শাসকরা এসব করে ক্ষমতায় থাকতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সাংবিধানিক শাসন প্রতিষ্ঠা হবে বলেও মন্তব্য করেন গণফোরাম সভাপতি।

ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা অতীতে ঐক্যের ডাক দিয়ে ভালো সাড়া পেয়েছি, সফল হয়েছি। আপনারা এখানে যেমন ঐক্যের ডাকে সাড়া দিয়ে এসেছেন। সেরকম পাড়া-মহল্লায়-গ্রামে সব জায়গায় এই ঐক্যের ডাককে নিয়ে যাবেন। জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে তারা এই দেশের মালিকের ভূমিকা রাখতে পারবে। আমাদের আকাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সাংবিধানিক শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারব। সেই ধরনোর শাসনের মধ্যে জনগণ তাদের আকাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যগুলো পূরণ করতে পারবে। আসুন আমরা এই শপথ নিই। আমাদের এই ঐক্য সবচেয়ে বড় শক্তি।

ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা লক্ষ করি কীভাবে সাম্প্রদায়িকতাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হয়। তবে জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে এটা সফল হয় না। আজকের ছুটির দিনে আপনাদের উপস্থিতি প্রমাণ করে আমরা যে ঐক্য চাচ্ছি, সেটার গুরুত্ব আপনারা সবাই উপলব্ধি করেন, করছেন। সরকার বিভিন্নভাবে অনৈক্যে রাখার চেষ্টা করে। সাম্প্রদায়িকতাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হয়। সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থ ও কালো টাকা ব্যবহার করে অনৈক্যের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তারা কোনোদিনই সফল হয়নি। ।  

আগামী নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক বলেন, অর্থনীতিকে গতিশীল করে, গণতন্ত্রকে ভালভাবে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে আমরা দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার পদক্ষেপ অবশ্যই নিব। আমাদের সবচেয়ে বেশি যেটা পক্ষে আছে সেটা হলো- জনগণ এই বিষয়টার গুরুত্ব বোঝে।

তিনি বলেন, আমরা যে ঐক্যের ডাক দিয়ে নেমেছি, এটায় অনেক সাড়া পড়ছে। আমরা আগামীতে দেশকে জনগণের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসব। জনগণ ক্ষমতার মালিক- এটা সংবিধানে লেখা আছে। সাময়িকভাবে কোনো সরকার বৈধভাবে এলেও তারা মালিক নয়। মালিকের প্রতিনিধি। আর যারা অবৈধভাবে ওখানে আছে, তারা তো কিছুই না। তারা অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী।

তিনি বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতা আমাদের বলে দেয় জনগণের ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। যারা দেশে স্বৈরশাসন চালাতে চায় তাদের মূল চেষ্টা থাকে সাম্প্রদায়িকতা, সংকীর্ণ দলীয় মানসিকতায় বিভেদ সৃষ্টি করা। যারা দেশে জনগণের শাসন চায় না, গণতন্ত্র চায় না, তারা বলে দেশ কতভাগে বিভক্ত। জনগণ যে দেশের মালিক সেটা তারা স্বীকারও করে না, তাদের ক্ষমতাও দিতে চায় না। অন্যদিকে আমরা সবাই মনে করি, যারা এসব করার চেষ্টা করে তারা অতীতে এগুলো করে ব্যর্থ হয়েছে।

প্রধান বক্তার বক্তৃতায় আয়োজক মুক্তিজোটের সংগঠন প্রধান আবু লায়েস মুন্না বলেন, নির্বাচনকেন্দ্রিক সংকট তথা বিগত প্রাতিষ্ঠানিক ভ্রান্তিতেই রুদ্ধ আজকের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ ও এর জাতীয় রাজনীতি। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র উভয়ই দেশ ও মানুষের স্বার্থে আজ জাতীয় ঐক্যের সমার্থক হয়ে গেছে। জাতীয় জীবনে নেমে আসা অন্ধকারের বিরুদ্ধে ইতিহাসকে মনে করিয়ে দিচ্ছে।

‘নির্বাচন কেন্দ্রিক সংকট সমাধানে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন ও প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিজোটের জাতীয় সমন্বয়ক এ আর শিকদার। বক্তব্য দেন জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রব, সহ-সভাপতি তানিয়া রব, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া, মুক্তিজোটের জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির প্রধান মো. সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!