• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হঠাৎ খালেদার মুক্তির আশা বিএনপির


বিশেষ প্রতিনিধি জুন ২০, ২০১৯, ০৬:৩৪ পিএম
হঠাৎ খালেদার মুক্তির আশা বিএনপির

ঢাকা : আইনি প্রক্রিয়ায় নয়, রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার যে কথা এতদিন বলে আসছিলেন দলটির নেতা ও আইনজীবীরা সে অবস্থান থেকে সরে এসেছেন তারা। তারা মনে করছেন, সরকার এখন অনেকটা নমনীয়। তাই তারা আশা করছেন, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই শিগগিরই কারামুক্ত হবেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) তারা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের কারাবন্দি জীবন ১৫ মাস পেরিয়ে ১৬ মাসে পড়েছে। সরকারকে নমনীয় দেখে দ্রুত তার জামিন করাতে আইনি তৎপরতা জোরদার করেছেন তারা। সরকার আদালতের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ না করলে শিগগিরই মুক্তি পাবেন খালেদা জিয়া।

আইনি তৎপরতা জোরদারের প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম সদস্য সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, সরকার বাধা সৃষ্টি না করলে দ্রুত মুক্তি পাবেন খালেদা জিয়া। তার প্রমাণ মঙ্গলবার হয়েছে। দুটি মামলায় হাইকোর্ট তাকে জামিন দিয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য জানান, মামলা দুটিতে খালেদা জিয়ার পক্ষে আদালতে লড়েন তিনি এবং দলের চেয়ারপারসনের

উপদেষ্টাম-লীর সদস্য সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী।

বিএনপির একাধিক আইনজীবী দাবি করেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে প্রমাণ হয়েছে, এতদিন খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তির বিষয়ে তারা আদালতকে বাধা দিয়েছেন। সরকার আগামী দিনে আর কোনো বাধা সৃষ্টি করবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তারা। একই আশা প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অনেক হয়েছে। সরকার বাধা না দিলে এই কোরবানির ঈদের আগেই খালেদা জিয়া আইনি প্রক্রিয়ায় জামিনে মুক্তি পাবেন। এজন্য তৎপরতাও শুরু করেছেন আইনজীবীরা।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বকশীবাজারের বিশেষ আদালত ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়। সেদিনই তাকে পুরান ঢাকার কারাগারে নেওয়া হয়। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।

বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিনের জন্য আইনি তৎপরতার প্রসঙ্গে তার উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জয়নুল আবদিন বলেন, গত শনিবার গুলশানে দলের আইনজীবীরা মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। এতে লন্ডন থেকে স্কাইপের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের মোট ৩৭টি মামলার সর্বশেষ অবস্থা জেনেছেন। চেয়ারপারসনের জামিনে মুক্তির বিষয়টি জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর আইনজীবীরা আবার এ জে মোহাম্মদ আলীর বাসায় বসেছিলেন। সেখানে পরবর্তী করণীয় নিয়ে তারা নিজেরা আলোচনা করেন।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও ২০১৬ সালের বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে দায়ের করা দুই মামলায় মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার জামিন হয়েছে। চলতি মাসেই শুনানি হবে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার। সেই শুনানি শেষে আদালত খালেদা জিয়াকে জামিন দিলে এবং সরকার সে আদেশের বিরুদ্ধে আপিল না করলে প্রমাণ হবে সরকার অনেকটা নমনীয় হয়েছে। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার জামিন প্রক্রিয়াও শুরু করবেন তারা। বাকি ৩৩টি মামলায়ই জামিনে রয়েছেন খালেদা জিয়া।

প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর বিএনপির আইনজীবীরা তার জামিনের জন্য কয়েক দফা চেষ্টা চালান হাইকোর্টে। কিন্তু তাতে কোনো সফলতা আসেনি। বরং সাজার মেয়াদ বেড়ে ১০ বছর হয়।

এতে হতাশ আইনজীবীরা বিএনপির নীতিনির্ধারকদের বলেন, আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। কারণ সরকার বারবার বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এভাবে এক বছর চলে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরেও তার জামিন মিলবে না। সে-সময় খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য রাজপথে জোরদার গণআন্দোলন গড়ে তোলার পরামর্শও দেন তারা। তবে বিএনপি সে আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!