• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হঠাৎ বাস ধর্মঘটে বিপাকে যাত্রীরা


জেলা প্রতিনিধি মে ২২, ২০১৯, ১২:২৭ পিএম
হঠাৎ বাস ধর্মঘটে বিপাকে যাত্রীরা

পটুয়াখালী: পটুয়াখালীতে শুরু হয়েছে অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘট। বুধবার ভোর থেকে পটুয়াখালী বাস টার্মিনাল থেকে কোনো ধরনের যাত্রীবাহী বাস ছেড়ে যায়নি। এদিকে হঠাৎ বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

পটুয়াখালী বাস টার্মিনালে অপেক্ষমান বাস যাত্রী মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, আমার ফুফু মারা গেছে। তাই সকালে গলাচিপা থেকে ভেঙে ভেঙে রওনা দিয়েছি। যেতে হবে বাকেরগঞ্জ।

জৈনকাঠি এলাকার গৃহিণী পলাশী রানী সাহা বলেন, বাকেরগঞ্জ বাবার বাড়ি বেড়াতে যাবো। সকালে অটোযোগে এসে ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি। এখানে এসে শুনলাম বাস চলাচল বন্ধ। দুর্ভোগের আর শেষ নেই।

জানা গেছে, বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজ মৃধা ও সেক্রেটারি গোলাম মাওলা দুলু মৃধার বিরুদ্ধে দীর্ঘ ১১ বছর ধরে পেশি শক্তি প্রয়োগ করে অবৈধভাবে কমিটির পদে বহাল ও অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে এনে ৯০ শতাংশ মালিক পক্ষ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়। গত ২০ মে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দের সাধারণ সদস্যরা।

নতুন আহ্বায়ক কমিটি বাস টার্মিনালে সমিতির ঘরে প্রবেশ করতে চাইলে অবৈধ মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজ মৃধা ও সেক্রেটারি গোলাম মাওলা মৃধার নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে নতুন আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, মিজানুর রহমান মুন্সি, বাবুল গাজী ও বেলাল মৃধা আহত হন। এরই জের ধরে আন্তজেলায় বাস ধর্মঘটের ডাক দেয় জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন।

জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম রনি মৃধা জানান, এক পক্ষ বলছে বাস চালাতে অন্য পক্ষ বলছে বাস না চালানোর জন্য। কোনো উপায় না পেয়ে অভ্যন্তরীণ রুটে শ্রমিকদের বাস চালাতে নিষেধ করেছি। মালিকপক্ষ একত্রিত হয়ে ঝামেলা মিটিয়ে আসলেই শ্রমিকরা বাস চালাতে পারবে।

বরিশাল-পটুয়াখালী রুটে চলাচলকারী এ পরিবহনের স্টাফ রফিক জানান, আমরা দিনমজুর। যেখানে মালিকের জীবনের নিরাপত্তা নেই সেখানে আমাদের মতো গরিবের নিরাপত্তা কোথায়? বাস চলাচল বন্ধ থাকলে শুধু যাত্রী না আমাদের শ্রমিকদেরও সমস্যা হয়।

ঢাকা থেকে আগাত পর্যটক শাওন মিয়া জানান, বাস শ্রমিকদের কাছে আমরা সাধারণ যাত্রীরা জিম্মি। বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে এই ভোগান্তি দীর্ঘদিনের। এই সড়কের পথে পথে যাত্রী হাত বদল হয়। বিশেষ করে বরিশালের যাত্রীদের পটুয়াখালীর লেবুখালী ও কুয়াকাটায় নেয়ার কথা বলে চৌরাস্তায় নামিয়ে দেয়া হয়। অনেক সময় কুয়াকাটার পরিবর্তে আমতলী কিংবা কলাপাড়া ব্রিজেও নামিয়ে দেয়া হয়। যদিও বরিশাল থেকে ছেড়ে আশা সব পরিবহনে বরিশাল- কুয়াকাটা লেখা থাকে। ফলে যাত্রীরা না বুঝেই পরিবহন শ্রমিকদের হাতে প্রতারিত ও লাঞ্ছিত হন।

এদিকে ধর্মঘটে বাস টার্মিনালের কোনো বাস চলাচল না করলেও বিআরটিসি সার্ভিস চলাচল করায় যাত্রীর চাপ লক্ষ্য করা গেছে। দুই-তিন ঘণ্টা পর একটি বিআরটিসি বাস আসলে লম্বা লাইনের সৃষ্টি হয়। এতে গাড়িতে কে আগে উঠবে তার প্রতিযোগিতা চলে।

পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাহ্ফুজ ইসলাম জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশ প্রশাসন মাঠে কাজ করছে। সমস্যা নিরসনে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।

পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী জানান, সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলছি।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!