• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

হঠাৎ হাসপাতালে পরিদর্শনে মন্ত্রী, অবস্থা দেখে হতভম্ব


মৌলভীবাজার প্রতিনিধি নভেম্বর ৩, ২০১৯, ১২:৩৯ পিএম
হঠাৎ হাসপাতালে পরিদর্শনে মন্ত্রী, অবস্থা দেখে হতভম্ব

মৌলভীবাজার: হঠাৎ মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিদর্শন করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী এবং স্থানীয় সাংসদ মো. শাহাব উদ্দিন। পরিদর্শন এসে হাসপাতালের অবস্থা দেখে হতভম্ব হয়ে গেছেন মন্ত্রী। এ সময় হাসপাতালে কর্মরত অনেককে পাননি মন্ত্রী। তবে মন্ত্রী আসার খবর পেয়ে চিকিৎসকরা তড়িগড়ি করে ছুটে আসেন। 

শনিবার (২ নভেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে পরিবেশ মন্ত্রী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। এসময় তিনি বিভিন্ন অনিয়ম দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

মন্ত্রীর সঙ্গে থাকা লোকজন জানান, শনিবার বিকেলে হঠাৎ বড়লেখা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনে যান মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন। তখন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার কর্মকর্তারা অনুপস্থিত ছিলেন। এমনকি জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. শারমিন আক্তার ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফেরদৌস আক্তারকেও পাননি মন্ত্রী। 
পরে অবশ্য মন্ত্রী আসার খবরে তারা ছুটে আসেন। 

এরপর মন্ত্রী হাসপালের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন। ভর্তি রোগী ও তাদের সাথে থাকা স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন। পরিদর্শনকালে মন্ত্রী রোগীদের জন্য সরবরাহ করা খাবরের মান (নিম্ন মানের), মেডিকেল অফিসারদের অনুপস্থিতি, গত ছয়মাস থেকে স্বাস্থ্য সেবা কমিটির মিটিং না হওয়া, সরকারি কর্মচারীদের অ্যাম্বুলেন্স বাণিজ্য, রেজিস্ট্রারবই চেক করে আপডেট তথ্য না পাওয়াসহ নানা কারণে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

এসময় তিনি হাসপাতালের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট থাকার কারণ নিয়ে চালকের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন। ব্যক্তিগত অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে ব্যবসা করার বিষয়েও কথা বলেন।  মন্ত্রীর সাথে বড়লেখা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শামীম আল ইমরান, বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার উদ্দিন, বড়লেখা পৌরসভার কাউন্সিলর জেহীন সিদ্দকী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহম্মদ হোসেন একটি কর্মশালায় যোগ দিতে ঢাকায় যান। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তার ছুটি ছিল। কিন্তু ছুটি শেষ হলেও তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।

এই বিষয়ে ডা. আহম্মদ হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি ট্রেনিংএ ছিলাম। আমাদের হাসপাতালের একটি পুরস্কার পাওয়ার কথা ঘোষণা হয়। এটা রোববারে গ্রহণ করার কথা। তাই যাওয়া-আসার কথা চিন্তা করে থেকে যাই। ঢাকায় অবস্থানের বিষয়ে সিভিল সার্জন মহোদয়কে অবগত করেছি।’

এদিকে, চিকিৎসকদের উপস্থিত না পাওয়া প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফেরদৌস আক্তার মুঠোফোনে বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয় আসছিলেন। তিনি আসবেন এটা আমরা আগে জানতাম না। আমি অন্যরুমে ছিলাম। তাই তাৎক্ষণিক দেখা হয়নি। মন্ত্রী মহোদয় তিনটার পর আসছিলেন। নিয়ম হচ্ছে ৫০ শয্যায় জরুরি বিভাগে সেকমো থাকবে। সব সময় ডাক্তার বসে থাকার নিয়ম নেই। দুপুর আড়াইটার পর ডাক্তাররা অনকলে থাকেন। মন্ত্রী মহোদয়কে আমি বিষয়টি অবগত করেছি।’

মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘বাস্তব চিত্র দেখতে কাউকে না জানিয়েই হাসপাতাল পরিদর্শনে যাই। রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছি। কিছু অনিয়ম পাওয়া গেছে।’

উল্লেখ্য, সম্প্রতি বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিন কর্মচারীর বিরুদ্ধে অ্যাম্বুলেন্স বাণিজ্যের অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী হাসপাতালে ঝটিকা পরিদর্শন করেন বলে জানা গেছে।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!