• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

১০ টাকার চালে চালবাজি বন্ধ হোক


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ৮, ২০১৬, ১১:৫০ এএম
১০ টাকার চালে চালবাজি বন্ধ হোক

দেশে হতদরিদ্রদের দুর্দশা লাঘবের কথা চিন্তা করে সরকার ১০ টাকা কেজিদরে চাল বিতরণের ব্যবস্থা নিয়েছে। সামাজিক সুরক্ষা বিবেচনায় এটি একটি ভালো উদ্যোগ। এই উদ্যোগের পেছনে আছে কল্যাণ ভাবনার একটি রাজনৈতিক ও সামাজিক দর্শন। রয়েছে সরকারি ভর্তুকি। দলীয় রাজনৈতিক বিবেচনাতেও এটি একটি লাভজনক পদক্ষেপ। আর এ চাল বিতরণ নিয়ে যদি দুর্নীতির অভিযোগ আসে, তবে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে এ চাল বিতরণ শুরু হয়েছে। প্রথম দফায় সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর এবং দ্বিতীয় দফায় মার্চ ও এপ্রিলে চাল বিতরণ করা হবে। সঙ্গত কারণেই ১০ টাকার চাল বিতরণ নিয়ে যে কোনো ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে জানা গেছে, বৃহত্তর যশোরের চার জেলায় ১০ টাকা কেজিদরে চাল বিতরণে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। যশোরের শার্শা, মনিরামপুর, কেশবপুর এলাকায় সবচেয়ে বেশি অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শার্শার একটি গ্রামে ভিক্ষা করে, অন্যের বাড়িতে কাজ করে এবং অন্যের জমিতে ঘর বানিয়ে বসবাস করে- এমন ব্যক্তিরা কার্ড না পেলেও ওই গ্রামের একজন লাখপতি প্রবাসী কার্ড পেয়েছেন বলে জেলা প্রশাসককে জানিয়েছে এলাকাবাসী। অনিয়ম হয়েছে মনিরামপুর উপজেলার কাশিমনগর ইউনিয়নেও। পত্রপত্রিকায় উঠে এসেছে সে তথ্য। তালিকা তৈরির মতো ডিলারদের চাল বিক্রির স্বচ্ছতা নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। এমনকি অনুমোদিত তালিকা থেকে দরিদ্রদের বাদ দিয়ে নিজস্ব লোকদের কাছে চাল বিক্রির অভিযোগ রয়েছে অনেক ডিলারের বিরুদ্ধে। গত ২০ অক্টোবর এসব অভিযোগের পরিপ্র্রেক্ষিতে কেশবপুরের হাসানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়কের ডিলারশিপ বাতিল করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। একই সঙ্গে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে একজনের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও আদায় করেন। এ ছাড়া গত ১১ অক্টোবর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওজনে কম দেয়ার অভিযোগে মনিরামপুর সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দোকানে অভিযান চালিয়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় এবং পরবর্তী সময় ১৭ অক্টোবর তার ডিলারশিপ বাতিল করেন। মূলত এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে মাঠে নেমেছে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়।
 
এই চাল বিতরণের শুরু থেকেই নানা ধরনের অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে, যা দুর্ভাগ্যজনক। হতদরিদ্ররা অধিকার বঞ্চিত হবেন- এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সঙ্গত কারণেই আমরা সরকারের পাশাপাশি দুদকের এ পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাই। একই সঙ্গে আমরা যে কোনো মূল্যে এসব দুর্নীতির অবসান চাই। পাশাপাশি হতদরিদ্রদের স্বার্থকে উপেক্ষা করে যেসব অসাধু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। মনে রাখতে হবে- হতদরিদ্রদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি করার অধিকার কারো নেই। আমরা আশা করি, সরকারের এই উদ্যোগ ও দুদকের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। নতুবা এ কর্মসূচি ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাবে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

সোনালীনিউজ/ঢাকা

Wordbridge School
Link copied!