• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

১২ দেশে শনাক্ত করোনাভাইরাস


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জানুয়ারি ২৬, ২০২০, ০১:০৭ পিএম
১২ দেশে শনাক্ত করোনাভাইরাস

ঢাকা : চীনে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। এক দিনের ব্যবধানে মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২৬ থেকে প্রায় অর্ধশতে দাঁড়িয়েছে।

দেশটির সীমান্ত ছাড়িয়ে এশিয়ার অন্য দেশ, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকা মহাদেশের ১২টি দেশে এরই মধ্যে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।

চীনেই আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার দুইশ ছাড়িয়ে গেছে। সব দেশ মিলে এ সংখ্যা এক হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে।

তবে চীন বাদে অন্য দেশে শনাক্ত রোগী কম হওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এখন বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করছে না। প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে বিভিন্ন দেশ যার যার মতো উদ্যোগ নিয়েছে। চীন সারাদেশে আক্রান্ত রোগী শনাক্তে বাস, ট্রেনে তল্লাশি শুরু করেছে। আক্রান্ত কাউকে পেলে সঙ্গে সঙ্গে আলাদা করে ফেলা হচ্ছে। চীনজুড়ে সাড়ে ৪০০ সামরিক মেডিক্যাল কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।

এদিকে চীনের স্বায়ত্তশাসিত গোলযোগপূর্ণ এলাকা হংকং জারি করেছে জরুরি অবস্থা। হুবেই প্রদেশের উহানে সিনহুয়া হাসপাতালের ৬২ বছর বয়সী চিকিৎসক লিয়াং উডংয়ের মৃত্যুর খবর জানিয়ে টুইট করেছে চীনের গ্লোবাল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক। উহান শহর থেকেই এই ভাইরাস ছড়ানো শুরু হওয়ায় এ শহরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফলে সেখানে ৫০০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি আটকা পড়েছেন। খবর এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসির

উহান ছাড়াও চীনের আরও ১২টি শহরে সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। এএফপি জানায়, কেবল চীনের ১৩ শহরেই আক্রান্তের সংখ্যা ১২৮৭ জন।

সংক্রমণ প্রতিরোধে যে ৪৫০ সামরিক মেডিকেল কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তারা এর আগে সার্স ও ইবোলা প্রতিরোধের কাজে অভিজ্ঞ। সব মিলে চীন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সন্ধান পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই টুইটারে তিনি বলেন, 'করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চীন কঠিন পরিশ্রম করছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।'

চীনের বাইরে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, নেপাল, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া- এই ১১ দেশে আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে সাত ব্যক্তিকে আলাদা করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা করা হচ্ছে

উহান থেকে ১৯ জানুয়ারি আসা এক চীনা নাগরিকের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রেন্ডন মারফি বলেছেন, 'চীনের বাইরেও যে পরিমাণ আক্রান্তের খোঁজ মিলছে, আর উহান থেকে অস্ট্রেলিয়ায় আসা মানুষের সংখ্যা বিবেচনায় এটা অসম্ভব নয় যে, আমরা এ ধরনের আরও কিছু আক্রান্ত ব্যক্তির খোঁজ পাব।'

শুক্রবার সন্ধ্যায় ফরাসি কর্তৃপক্ষ ইউরোপে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তি শনাক্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন জানিয়েছে, তারা প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে ৬৩ জনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। এর মধ্যে দুই ব্যক্তির শরীরে ভাইরাসটির উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে। আক্রান্ত দুই ব্যক্তিই উহান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন বলে জানান তারা।

এদিকে চীনে পড়তে যাওয়া এক শিক্ষার্থীর দেহে করোনাভাইরাস শনাক্তের কথা জানিয়েছে নেপাল। শুক্রবার এক ঘোষণায় দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ একথা জানায়।

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষও তিন নাগরিকের শরীরে ভাইরাসটির উপস্থিতি শনাক্তের তথ্য দেয় বলে স্ট্রেইট টাইমস জানিয়েছে। জাপান জানিয়েছে, তারা শনিবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তৃতীয় রোগীকে শনাক্ত করেছে।

গত সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) নতুন এ করোনাভাইরাসের কারণে চীনে জরুরি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে ঘোষণা করে। তবে এখনই আন্তর্জাতিকভাবে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেনি বলে জানিয়েছিল তারা। শনিবার তারা বলেছেন, আন্তর্জাতিকভাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।

চীনা নববর্ষের ১৫ দিনব্যাপী ছুটির মধ্যে দেশটির কোটি কোটি মানুষ একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাতায়াত করলে ভাইরাসটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বেইজিংয়ে উৎসব ও মন্দিরের মধ্যে মেলা নিষিদ্ধ এবং চলচ্চিত্র মুক্তি স্থগিত করা হয়েছে। শনিবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেছে সাংহাইয়ের ডিজনিল্যান্ডও।

হংকংয়ের প্রশাসক ক্যারি লাম শনিবার জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, হংকংয়ে যাতে এই ভাইরাস ঢুকতে কিংবা ছড়াতে না পারে, আমরা জরুরি ভিত্তিতে তা নিয়ে কাজ শুরু করেছি।

স্থল, সমুদ্র ও বিমানবন্দরে সতর্কতা : চীনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানার বসানো হয়েছে। চিকিৎসক, নার্সসহ অতিরিক্ত সেবাকর্মী নিযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি সার্বিকভাবে প্রস্তুতি রাখতে দেশের দুটি সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও স্ক্রিনিং শুরু হয়েছে। বিমানবন্দরের অ্যারাইভ্যাল এবং ভিআইপি টার্মিনালে থার্মাল স্ক্যানার বসানো হয়েছে। প্রত্যেক যাত্রীকে স্ক্যানারের ভেতর দিয়ে আসতে হয়। কোনো যাত্রীর গায়ে অতিরিক্ত তাপমাত্রা থাকলে স্ক্যানারে ধরা পড়ে। তখন যাত্রীর তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয় এবং তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখনও এনসিওভি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি। চীনে এ ভাইরাস চিহ্নিত হওয়ার পর থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন, এয়ারলাইন্সগুলো এবং এভিয়েশনে কাজ করা সবাইকে সচেতন করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। সার্বক্ষণিক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। বিমানবন্দরে সব যাত্রীর হাতে একটি সচেতনতামূলক নীল কার্ড দেয়া হচ্ছে।

বিমানবন্দরের এলইডি মনিটরে রোগের লক্ষণগুলো জানানো হচ্ছে। লক্ষণগুলো কারও থাকলে তাকে হেলথ ডেস্কে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। এছাড়া আইইডিসিআর চারটি হটলাইনও চলু করেছে। চীন বা অন্য কোনো দেশ ভ্রমণ করে পরবর্তী ১৪ দিনের মধ্যে কেউ যদি জ্বর, শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন তাহলে কয়েকটি নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। নম্বরগুলো হল- ০১৯৩৭-১১০০১১, ০১৯৩৭-০০০০১১, ০১৯২৭-৭১১৭৮৪, ০১৯২৭-৭১১৭৮৫।

অধ্যাপক ফ্লোরা আরও বলেন, এসব হট নম্বরে প্রতিদিনই কিছু মানুষ ফোন করছে। চীন থেকে ভ্রমণ করে এসেছে এমন কিছু লোকের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের শরীরে কমন কোল্ডের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে আক্রান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি।

ভাইরাসের ধরন ও সংক্রমণের তথ্য : আক্রান্ত রোগীদের কাছ থেকে ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করে তা গবেষণাগারে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। চীনের কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এ সংক্রমণ যে ভাইরাসের কারণে হচ্ছে সেটি আসলে এক ধরনের করোনাভাইরাস। বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন ২০১৯-হঈড়ঠ করোনাভাইরাস। গবেষকরা বলছেন সামুদ্রিক মাছের বাজার এ ভাইরাসের উৎসস্থল। অনেক ধরনের করোনাভাইরাস থাকলেও ছয় ধরনের করোনাভাইরাস মানুষকে আক্রান্ত করে। গবেষকরা বলছেন, সাধারণ সর্দি, কিন্তু মারাত্মক ধরনের সংক্রমণ বা সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম বা সংক্ষেপে সার্স হচ্ছে এক ধরনের করোনাভাইরাস। ২০০২ সালে ৮০৯৮ জন আক্রান্ত হন। এরমধ্যে ৭৭৪ জন মারা যান।

করোনাভাইরাস সম্পর্কে এখনও খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এটি অত্যন্ত দ্রুত ছড়াতে পারে। এ ভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে এটি একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ ফ্লু বা ঠাণ্ডা লাগার মতো করে এ ভাইরাস হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ভাইরাস সংক্রমণের প্রধান লক্ষণ হল- শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও কাশি। পরে দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়া, নিউমোনিয়া এমনকি মৃত্যু ঘটতে পারে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটি শরীরে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে প্রায় ৫ দিন লাগে। প্রথম লক্ষণ জ্বর। এরপর শুকনো কাশি দেখা দেয়। এক সপ্তাহের মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।

করোনাভাইরাসের চিকিৎসা : করোনাভাইরাসের চিকিৎসা প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী বলেন, ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এর টিকা বা ভ্যাকসিন নেই। কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা ব্যবস্থাও নেই। মূলত রোগীর লক্ষণ দেখে এর চিকিৎসা করতে হবে। রোগীর জ্বর হলে জ্বরের চিকিৎসা, শ্বাসকষ্ট হলে সেই চিকিৎসা এমনকি কোনো অর্গান ফেউলিউর হলে সেই চিকিৎসা করা হয়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ রোগ থেকে নিরাপদ থাকতে আক্রান্ত ব্যক্তিকে (ভাইরাস বাহক) এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়া বারবার হাত ভালোভাবে ধোয়া, হাত দিয়ে নাক-মুখ স্পর্শ না করা, ঘরের বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করা উচিত।

উহানে ৪০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আটকা পড়েছে : উহান শহরে আটকাপড়া ৪০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন। দেশে ফেরার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা আকুতি জানিয়েছেন। এদিকে, চীনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, উহান শহরে ৩০০ থেকে ৪০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আটকা পড়েছে। তাদের সহায়তা দিতে দূতাবাস কাজ করছে। বেইজিংয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস আটকে পড়াদের সহযোগিতার জন্য একটি হটলাইন নম্বর চালু করেছে। নম্বরটি হল +৮৬১৭৮০১১১৬০০৫। নম্বরটি ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে।

উহানে থাকা বাংলাদেশিরা জানিয়েছেন, সেখানকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন ৫০০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। উহান থেকে বাস, ট্রেন ও বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বেশিরভাগ মানুষ ঘরে থাকছেন। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় খাবার সংকটেরও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে করোনাভাইরাসে কোনো বাংলাদেশি আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

হুবেই ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে মেকানিক্যাল অ্যান্ড অটোমেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী রাকিবুল তূর্য (২৩) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উহানে তাদের অবস্থা জানিয়ে পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, সম্প্রতি চীনে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শহর উহানে বাস করছি। এখানে আমরা প্রায় ৫০০ জনেরও অধিক বাংলাদেশি উহানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে অধ্যয়নরত।

উহান থেকে বহির্গামী সব বাস-ট্রেন ও বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমরা চাইলেও এখন নিজ দেশে ফিরে যেতে পারছি না। তিনি আরও লিখেছেন, বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে আমাদের খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে- এমন খবর বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রচার করা হলেও এ খবর ভিত্তিহীন। এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো খোঁজ নেয়া হয়নি। আমরা সবাই কঠিন মুহূর্ত পার করছি। পিএইচডি করতে যাওয়া ইমতিয়াজ শরিফ ফেসবুক ওয়ালে লেখেন, ইউনিভার্সিটিতে চলছে শীতকালীন ছুটি। ফলে ক্যাস্পাস ফাঁকা, উহান শহরটা একদম জনশূন্য। আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। তবুও থেমে নেই জীবন। চলছি চলার মতো করে।

চীন থেকে দেশে ফিরে এক গবেষকের উদ্বেগ : ‘করোনাভাইরাস’ প্রতিরোধে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ব্যবস্থা না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চীন থেকে দেশে আসা এক পিএইচডি গবেষক। চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, ঢাকা থেকে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে পৌঁছান ওই ব্যক্তি। এর আগে তিনি চীন থেকে মঙ্গলবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশে আসেন।

পিএইচডি গবেষক ফায়সাল করিম বলেন, চট্টগ্রাম শাহ আমানতে ‘করোনাভাইরাস’ শনাক্তে স্ক্রিনিং (পরীক্ষা) করার কোনো যন্ত্রপাতি নেই। তাকে স্ক্রিনিং করা হয়নি। এমনকি তিনি আক্রান্ত কিনা এ বিষয়েও কোনো প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়নি। চট্টগ্রামের নগরীর পাঁচলাইশ থানার শুলকবহর এলাকার বাসিন্দা ফায়সাল করিম সেন্ট্রাল চায়না বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে পিএইচডি গবেষণা করছেন।

তবে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার সরওয়ার-ই-জামান জানিয়েছেন, চীন থেকে চট্টগ্রামে সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই। দুবাই ও ভারত হয়ে কানেকটিং ফ্লাইটে চীনের যাত্রীরা চট্টগ্রামে আসেন। এ ধরনের কানেকটিং ফ্লাইটের কোনো যাত্রী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিনা সেটির ওপর নজর রাখছেন চিকিৎসকরা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!