• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

১৪ অক্টোবর আবাইপুর দিবস


ঝিনাইদহ প্রতিনিধি অক্টোবর ১৪, ২০১৮, ০৩:২৪ পিএম
১৪ অক্টোবর আবাইপুর দিবস

ছবি: সোনালীনিউজ

ঝিনাইদহ : ১৪ অক্টোবর, ১৯৭১ সাল। সেই বেদনাদায়ক অশ্রুসিক্ত নিষ্ঠুরতম হত্যাযজ্ঞের দিন আজ। ৭১’র এ দিনে অ্যামবুশরত অবস্থায় পাকহানাদার বাহিনীর হাতে অতর্কিত আক্রমণে নির্মমভাবে শহীদ হয়েছিলেন অকুতোভয় ৪১ স্বাধীনতা পাগল দূরন্ত মুক্তিযোদ্ধা। তারপর থেকেই প্রতিবছর ১৪ অক্টোবর শৈলকুপা মুক্তিযোদ্ধার ইতিহাসে আবাইপুর দিবস হিসেবে নানা কর্মসূচি পালিত হয়ে আসছে।

কুমিড়াদহ গ্রাম। দেশ স্বাধীনের পর থেকে প্রতিবছর ১৪ অক্টোবর এ দিনটিকে শৈলকুপা মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাসে স্মরণীয় একটি দিন হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। দিনটি পালনে স্থানীয়ভাবে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। দিবসটি উপলক্ষে বীর শহীদদের কবর জিয়ারত, পুষ্পমাল্য অর্পণ, মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলা সদর থেকে ১৪ মাইল আগে আবাইপুর ইউনিয়নের একটি অজপাড়া গাঁ। অবস্থানরত সুবিধার কারণে কুমিড়াদহ গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি গোপন ঘাঁটি গড়ে উঠেছিল সেখানে।

শৈলকুপা থানা সদরকে হানাদারমুক্ত করার লক্ষ্যে আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধারা কুমিড়াদহের ঘাঁটিতে সমবেত হচ্ছিলেন। অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে এ ঘাঁটিতে ১০০ থেকে সোয়া শ’ মুক্তিযোদ্ধা জড়ো হন। দিন গড়ায়। মুক্তিযোদ্ধারা শৈলকুপা থানা সদর দখলের জন্য সংঘবদ্ধ হতে থাকে। ১৯৭১ সালের ১৩ অক্টোবর। তখন দুপুর। সোর্স খবর নিয়ে এল হানাদার পাক সেনারা পার্শ্ববর্তী শ্রীপুর থানার খামারপাড়া গ্রামের বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। বেপরোয়া লুটতরাজ করছে, নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে। সোর্স আরও খবর দিল, পাকসেনারা আবাইপুর হয়ে এ পথেই শৈলকুপা থানা সদরে যাবে। তড়িঘড়ি করে মুক্তিযোদ্ধারা গোপন বৈঠকে বসলেন।

সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হলো পাক সেনাদের প্রতিরোধ করার। প্রতিরোধ সংগ্রামের মূল নেতৃত্ব স্বেচ্ছায় নিজ হাতে তুলে নিলেন পাকিস্তান বিমান বাহিনী থেকে পালিয়ে আসা এয়ারম্যান মজিবর রহমান। আবাইপুরের শ্রীপুর-শৈলকুপা প্রধান সড়কের পার্শ্বে খনন করা হলো পরিখা। তিনটি দলে ভাগ হয়ে তিনটি ভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিল প্রায় সোয়াশ’ মুক্তিযোদ্ধা।

চেয়ারম্যান মজিবর রহমানের নেতৃত্বে তিনটি ভিন্ন অবস্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব দেন তিন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তারা হলেন- শহীদ নজরুল ইসলাম (ওয়াপদার পার্শ্বে), মনোয়ার হোসেন মালিতা (ক্যানাল ব্রিজের পূর্ব পার্শ্বে) এবং গোলাম রইচ (পশ্চিম পার্শ্বে নদীর ধারে)। তিনজনের নেতৃত্বে যেসব মুক্তিযোদ্ধা অসীম সাহস ও বীরত্ব দেখান, তারা হলেন- শহীদ নজরুলের নেতৃত্বে আবুল কাশেম, আবদুস সামাদ, আবুল হোসেন, আবু জাফর, ইসমাইল হোসেন, চেতন জোয়ার্দার, আলিম উদ্দিন, সিমার আলী ও সিরাজুল ইসলাম। মনোয়ার হোসেন মালিতার নেতৃত্বে সহযোদ্ধা ছিলেন খন্দকার আলী হায়দার, রওশন আলী, নাজিম উদ্দিন বিশ্বাস, আনোয়ার হোসেন, আবদুল বারী ও তোতা শেখ এবং গ্রুপ কমান্ডার গোলাম রইচের সহযোদ্ধা ছিলেন- উজির আলী, রাশিদুল হাসান, আলাউদ্দিন, ময়েন উদ্দিন প্রমুখ।

১৩ অক্টোবর বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পরিখার মধ্যে অ্যাম্বুশ করে বসে থাকেন মুক্তিযোদ্ধারা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!