• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
৪৫০ কোটি বছরের আল্টিমা-থুলের ছবি

৪০০ কোটি মাইল দূর থেকে পৃথিবীতে বার্তা পাঠাল নিউ হরিজোন


বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক জানুয়ারি ৪, ২০১৯, ০৪:২১ পিএম
৪০০ কোটি মাইল দূর থেকে পৃথিবীতে বার্তা পাঠাল নিউ হরিজোন

ঢাকা : চারশ কোটি মাইল দূর থেকে পৃথিবীতে বার্তা পাঠাতে সক্ষম হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা দ্য ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (নাসা) নিউ হরিজোন মিশনের মহাকাশযান ফ্লাইবাই। আন্তর্জাতিক সময়ানুযায়ী মঙ্গলবার সকাল ১২টা ৩৩ মিনিটে মহাকাশ থেকে সঙ্কেতটি পাঠানো হয় এবং এটি পৃথিবীতে এসে পৌঁছায় ১০টা ৩১ মিনিটে।

নতুন বছরের দ্বিতীয় দিনে এমন একটি বার্তা পেয়ে উচ্ছ্বসিত নাসার বিজ্ঞানীরা। এ বিষয়ে নিউ হরিজোনের মিশনের অপারেশন ম্যানেজার অ্যালিস বোম্যান বলেন, আমাদের একটি শক্তিশালী মহাকাশযান আছে। আমরা এই মাত্র আল্টিমা-থুলে অতিক্রম করলাম।

এদিন আল্টিমা-থুলের একটি অস্পষ্ট ছবিও প্রকাশ করে নাসা। মহাকাশযানটি সামনের দিনগুলোতে আল্টিমা-থুলে থেকে আরো ছবি ও ডাটা পাঠাবে বলে জানিয়েছে নাসা।

বার্তা সংস্থা ডেইলি মেইলে প্রকাশিত এক সংবাদে বলা হয়, মঙ্গলবার নাসার নিউ হরিজোন মিশনের সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীরা সাংবাদিকদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম দিন ৫ লাখ মাইল দূর থেকে নাসার মহাকাশযান ফ্লাইবাইয়ের তোলা পরস্পরের সঙ্গে জুড়ে থাকা রহস্যময় দুটি গ্রহের ছবি সাংবাদিকদের দেখান তারা।

মানুষের মাথার সঙ্গে ধরের মতো যুক্ত থাকা এই গ্রহ দুটিকে বিজ্ঞানীরা আল্টিমা-থুলে বা সাঙ্কেতিকভাবে (৪৮৬৯৫৮) ২০১৪ এমইউ৬৯ নামে চেনেন। এ বিষয়ে নিউ হরিজোনের প্রধান বিজ্ঞানী এস অ্যালান স্টার্ন বলেছেন, ২০১৪ সালের ২৬ জুন হাবল টেলিস্কোপের সাহায্যে নাসার বিজ্ঞানীরা এই আল্টিমা-থুলে আবিষ্কার করেন। আগে বিজ্ঞানীরা মনে করতেন এই গ্রহ দুটি আলাদাভাবে পরস্পরের খুব কাছে অবস্থান করছে। কিন্তু সাম্প্রতিক ছবি দেখে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন, গ্রহ দুটি আলাদা হলেও তারা পরস্পরের সঙ্গে জুড়ে আছে।

তিনি আরো বলেন, সৌরজগতের কুইপার বেল্টের ডিপ ফ্রিজে ৪৫০ কোটি বছর ধরে অবস্থান করছে পরস্পরের সঙ্গে জুড়ে থাকা এই গ্রহ দুটি (কুইপার বেল্ট হচ্ছে নেপচুন গ্রহের বাইরের একটি বিশেষ অঞ্চল, যেখান থেকে মহাকর্ষীয় বস্তুর ধ্বংসাবশেষ নিয়মিত প্লুটো ও এর পাঁচটি চাঁদের ওপর আঘাত করতে থাকে)। গায়ে গায়ে লেগে থাকা গ্রহ দুটির নাম আমরা দিয়েছি আল্টিমা-থুলে। এর মধ্যে বড়টির নাম আল্টিমা এবং ছোটটির নাম থুলে।

পারমাণবিক শক্তি দ্বারা পরিচালিত মহাকাশযানটি পৃথিবী থেকে ৪০০ কোটি মাইল অতিক্রম করে এখন আল্টিমা-থুলের ২ হাজার ২০০ মাইল এলাকার মধ্যে যেতে সক্ষম হয়েছে। তাই ভবিষ্যতে ফ্লাইবাই থেকে পাঠানো আল্টিমা-থুলের ছবি দেখে মহাবিশ্বের ল্যাবরেটরিতে কীভাবে ছোট ছোট গ্রহ জুড়ে বড় গ্রহ তৈরি হয়, তা আমরা আরো সহজে বুঝতে পারব, যা গ্রহ বিজ্ঞানের ইতিহাসে নতুন যুগের সূচনা করতে চলেছে বলেও মন্তব্য করেন অ্যালান স্টার্ন।

২০১৪ সালে আবিষ্কৃত হলেও এর আগে এত কাছ থেকে বিজ্ঞানীরা আল্টিমা-থুলেকে দেখেননি। ছবিগুলো সূর্যকে  পেছনে রেখে নেওয়া হয়েছে। দুটি গ্রহের মধ্যে ফাঁক থাকলে সেখান দিয়ে সূর্যালোক ঠিকরে বেরিয়ে আসত। রঙিন ছবিগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে আল্টিমা-থুলের রঙ লাল। দুটি গ্রহের সংযোগস্থলে উজ্জ্বল বর্ণের চক্রাকার দাগ আছে। সম্ভবত আলগা কোনো পদার্থ চক্রাকার স্থানটিতে জমা হয়ে আছে। গ্রহ দুটির সম্মিলিত আয়তন প্রায় ওয়াশিংটন ডিসির কাছাকাছি। উজ্জ্বল দিনে সূর্যের থেকে পৃথিবী যে পরিমাণ আলো পায়, তার চেয়ে প্রায় ১৯০০ গুণ কম আলো পায় আল্টিমা-থুলে এবং এটি প্রতি ঘণ্টায় ৩২ হাজার মাইল গতিতে তার কক্ষপথ ধরে দৌড়ে চলেছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!