• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

৪০০ টাকা মজুরিসহ ৭ দফা দাবিতে চা শ্রমিকদের কর্মবিরতি


হবিগঞ্জ প্রতিনিধি মে ২০, ২০১৯, ০৮:১১ পিএম
৪০০ টাকা মজুরিসহ ৭ দফা দাবিতে চা শ্রমিকদের কর্মবিরতি

ঢাকা : নানা কর্মসূচিতে পালন করা হয়েছে ২০ মে ঐতিহাসিক চা শ্রমিক দিবস। দিবসটির জাতীয় স্বীকৃতি, ৪শ' টাকা মজুরি নির্ধারণ এবং ভূমি অধিকারসহ ৭ দফা দাবি আদায়ে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে কর্মবিরতি পালন করছে ১০ সহস্রাধিক চা শ্রমিক।

আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিভিন্ন বাগানে বিক্ষোভ র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে বিভিন্ন সময়ে অধীকার আদায়ে লড়াকু প্রয়াত চা শ্রমিক নেতাদের প্রতি।

সোমবার (২০ মে) দুপুর পর্যন্ত চুনারুঘাটের দেউন্দি বাগানে চা শ্রমিকদের ধর্মঘট চলে।

এছাড়াও উপজেলার ১৭টি বাগানে কর্মরত ১০ সহস্রাধিক চা শ্রমিক ঘণ্টার কর্মবিতি পালন করে কাজে যোগ দেয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও চুনারুঘাট উপজেলার চানপুর চা বাগানর শ্রমিক নিপেন পাল।

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রতি বছরই রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটি পালনের আহ্বান জানালেও এ ব্যাপারে সরকারি কোন উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। আমাদেরকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে এদেশে এনে স্বল্প মজুরির মাধ্যমে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের কাজ করানো হচ্ছে।

চা শ্রমিক নেতা কাঞ্চন পাত্র বলেন, আমাদের ভূমি অধিকার, চা শ্রমিক দিবস স্বীকৃতি এবং চা শ্রমিকদের মজুরি ১০২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪শ' টাকা করাসহ ৭ দফা দাবি দিয়েছি। এসব দাবি মানা না হলে আমরা পরবর্তীতে আন্দোলন করতে বাধ্য হবো।

প্রসঙ্গত, ১৯২১ সালের এই দিনে ব্রিটিশদের অত্যাচার থেকে মুক্ত হতে সিলেট অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার চা-শ্রমিক নিজেদের জন্মস্থানে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। এ সময় চাঁদপুরের মেঘনাঘাটে গুলি চালিয়ে নির্বিচারে হত্যা করা হয় চা শ্রমিকদের। এরপর থেকে চা-শ্রমিকেরা 'চা-শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন। তবে বারবার দাবি জানানো এবং অনেক আন্দোলনের পরও ৯৮ বছরেও স্বীকৃতি পায়নি দিবসটি। ঘুচেনি চা শ্রমিকদের বঞ্চনা।

পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে চীন ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোথাও চায়ের প্রচলন ছিল না। ১৮৫৪ সালে পরীক্ষামূলকভাবে সিলেটের মালিনীছড়া চা বাগানে চা চাষ শুরু করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। সে সময় বৃহত্তর সিলেটে চা বাগান তৈরির জন্য ভারতের আসাম, উড়িষ্যা, বিহার, উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকদের নিয়ে আসা হয়। ‘গাছ হিলেগা, রুপিয়া মিলেগা’ এমন প্রলোভনে শ্রমিকরা বাংলাদেশে এলেও তাদের ভুল ভাঙ্গতে বেশি সময় লাগেনি। বিশাল পাহাড় পরিষ্কার করে চা বাগান করতে গিয়ে হিংস্র পশুর কবলে পড়ে কত শ্রমিকের জীবন গেছে তার কোনো হিসেব নেই। এছাড়া ব্রিটিশদের অত্যাচার তো ছিলই।

তাদের অব্যাহত নির্যাতনের প্রতিবাদে তৎকালীন চা শ্রমিক নেতা পণ্ডিত গঙ্গাচরণ দীক্ষিত ও পন্ডিত দেওসরন ‘মুল্লুকে চল’ (দেশে চল) আন্দোলনের ডাক দেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!