• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

৫ কারণে লকডাউন ছাড়াই আশাবাদী বাংলাদেশ


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ২, ২০২০, ০১:২১ পিএম
৫ কারণে লকডাউন ছাড়াই আশাবাদী বাংলাদেশ

ঢাকা: করোনা নিয়ে বাংলাদেশ আশা-নিরাশার দোলাচালে দুলছে। একদিন পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে, অন্যদিন পরিস্থিতি আবার আশার আলো দেখাচ্ছে। তবে বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে এটা বলার সময় এখনো আসেনি। টানা ব্যর্থতা এবং সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশে এখনো করোনা পরিস্থিতি লাগামের মধ্যেই রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

সবকিছু খুলে দেওয়ার দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশে বরং আশাবাদী দেখাচ্ছে। শনিবার যেখানে করোনায় ৪০ জন মারা যাওয়ার পর যে চোখ রাঙ্গানি ছিল, তা সোমবার (১ জুন) কিছুটা হলেও স্তিমিত হয়েছে। ২২ জন মৃত্যুবরণ করেছে, আক্রান্তের হার-ও কমেছে।

আগেরদিন যেখানে ২১ শতাংশের উপরে ছিল, আজ তা ২০ শতাংশের কিছুটা বেশি এবং গতকালের থেকে আজকে আক্রান্তের সংখ্যাও কমেছে। আর এসব নিয়ে বাংলাদেশ আশাবাদী হয়ে উঠতেই পারে। বাংলাদেশের অনেকেই এখন মনে করছেন যে, বাংলাদেশে করোনা নিয়ে যে নেতিবাচক শঙ্কাগুলো তৈরি হয়েছিল, সেগুলো শেষ পর্যন্ত সত্যি নাও হতে পারে। বাংলাদেশে করোনা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করার যে প্রধান কারণগুলো এখন সামনে আসছে তা হলো-

১. লাফিয়ে বাড়ছে না মৃত্যু
বাংলাদেশে করোনায় এখন পর্যন্ত ৬৭২ জন মারা গেছে। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ২২ জন, এর আগে গতকাল সর্বোচ্চ ৪০ জন মৃত্যুবরণ করেছিল। ইউরোপ বা আমেরিকায় যেমন হঠাৎ করে মৃত্যুর হার লাফিয়ে বেড়েছিল, বাংলাদেশে সেই পরিস্থিতিটা হয়নি এবং
বাংলাদেশে সেই পরিস্থিতি হওয়ার আশঙ্কা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে বলেই মনে করছনে বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, এভাবে মৃত্যুর হার থাকলে পরিস্থিতি সহনীয় থাকবে এবং একটা পর্যায়ে আমরা করোনার সঙ্গে বসবাসের অভ্যাস গড়ে তুলবো।

২. লাগামহীন হচ্ছেনা আক্রান্ত
বাংলাদেশে আক্রান্ত অনেক বেড়ে গেছে আগের তুলনায়। কিন্তু যারা বলছেন যে মার্চে আক্রান্ত কম ছিল, এপ্রিলে একটু বেড়েছে বা মে তে আরো বেশি বেড়েছে। কিন্তু দেখা যায় যে, মার্চে পরীক্ষার হার ছিল খুবই কম, এপ্রিলে পরীক্ষার হার কিছুটা বাড়ানো হয়েছিল এবং এখন দৈনিক ১০ হাজারের বেশি পরীক্ষা হচ্ছে এবং এই পরীক্ষার ফলে আক্রান্তের হার যা বাড়ছে তা খুব একটা উদ্বেগজনক নয় বলে মনে করছেন কোন কোন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন যে, যারা উপসর্গ নিয়ে পরীক্ষা করছে তাঁদের মধ্যে ২০ থেকে ২১ শতাংশ আক্রান্তের হার হলে তা বড় ধরণের ভয়ের কারণ নয়। এর ফলে বাংলাদেশে করোনার যে হার্ড ইম্যুউনিটি, সেই হার্ড ইম্যুউনিটির সম্ভাবনা নাকচ হয়ে যাচ্ছে।

৩. মৃদু উপসর্গবাহী রোগীর সংখ্যা বেশি
বাংলাদেশে যারা করোনায় আক্রান্ত তাদের মধ্যে মৃদু উপসর্গবাহী রোগীর সংখ্যা বেশি। সামান্য উপসর্গ নিয়ে তারা হয় বাড়িতেই থাকছেন বা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলছেন। এর কারণে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের যে চাপ পড়েছে স্বাস্থ্য সেবার উপরে তা এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি।

৪. মানুষ আগের চেয়ে সচেতন
গত ৩১ মে সবকিছু খুলে দেওয়ার পর মানুষ আগের থেকে অনেক সচেতন হয়েছে এবং এই সচেতনতাই করোনা রোধে সবথেকে বড় রক্ষাকবচ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন মানুষ ঘর থেকে বের হওয়ার অাগে নিজের সুরক্ষা নিজে করার চেষ্টা করছে, এমনকি গণপরিবহনেও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে দেখা গেছে। মানুষ এখন ভয় পেয়েছে এবং তারা বুঝতে পেরেছে যে তাদের নিজের সুরক্ষা তাদের নিজেদেরই করতে হবে। আর এটা করোনা মেকাবেলায় বড় আশাবাদ দেখাচ্ছে বাংলাদেশকে।

৫. অর্থনীতিতে আশাবাদ
কর্মচাঞ্চল্য শুরু হওয়ার পর বাংলাদেশ বিশ্বের প্রথম দিকের দেশগুলোর একটি যারা অর্থনীতির চাকাকে সচল করেছে এবং করোনাউত্তর বিশ্বে অর্থনীতির যে লড়াই হবে, সেই লড়াইয়ে একটু ঝুঁকি নিয়ে হলেও বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেল। কারণ অর্থনীতি যদি শক্তিশালী থাকে তাহলে জনস্বাস্থ্য মোকাবিলা করা কঠিন নয়, এটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। কাজেই এখন অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বাংলাদেশ যে ঝুঁকিটি নিয়েছে সেই ঝুঁকির ফল বাংলাদেশ অচিরেই ভোগ করবে বলে আশাবাদী অনেকে।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!