• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

৯৬ বিশ্বকাপের নতুন সূর্য জুয়াসুরিয়া


রবিউল ইসলাম বিদ্যুৎ মে ১৯, ২০১৯, ০৫:৪৬ পিএম
৯৬ বিশ্বকাপের নতুন সূর্য জুয়াসুরিয়া

ছবি সংগৃহীত

ঢাকা: একটু রয়েসয়ে উইকেটে থিতু হয়ে তবেই হাত খুলতেন ওপেনাররা। ১৯৯৬ বিশ্বকাপে এই ধারা থেকে বেরিয়ে এসে সনাথ জয়াসুরিয়া দেখালেন কিভাবে শুরু থেকেই বলকে পেটানো যায়। সেটা এমনই যে, তাঁর সামনে পড়লে বোলারদের নাভিঃশ্বাস উঠে যেত! জয়াসুরিয়া একাই পুরো ম্যাচের ছবি বদলে দিতে পারতেন। স্বয়ং গ্লেন ম্যাকগ্রা স্বীকার করে নিয়েছেন, জয়াসুরিয়াকে বল করা ছিল খুবই কঠিন। জয়াসুরিয়া শুধু ম্যাচের মোড়ই পাল্টে দিতেন না, ব্যাটিংয়ের শুরুর তত্ত্বই পাল্টে দিয়েছেন।

১৯৯৬ বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচেই শুরু থেকেই প্রতিপক্ষের ওপর হামলে পড়তো লঙ্কানরা। এর অগ্রভাগে থাকতেন মাতারা হ্যারিকেন জয়াসুরিয়া। অন্যপ্রান্তে রুমেশ কালুভিতারানা। দুজনের লক্ষ্যই ছিল প্রথম ১৫ ওভারে দ্রুত রান তোলা। সে সময় ১৫ ওভারে ৬০ রান তোলাটাকেই যথেষ্ট মনে করা হতো। কিন্তু জয়াসুরিয়া-কালুভিতারানা জুটি এই ধারণা পাল্টে দিলেন। প্রথম ১৫ ওভারে ভারতের বিপক্ষে তারা তুললেন ১১৭, কেনিয়ার সঙ্গে ১২৩ এবং কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তুলেছেন ১২১ রান।

গ্রুপ পর্বে ভারতের ২৭৩ রান তাড়া করতে নেমে জয়াসুরিয়া-কালুভিতারানা জুটি প্রথম তিন ওভারেই তুলে ফেলেছিলেন ৪২ রান। পরের ম্যাচে কেনিয়ার বিপক্ষেও একইভাবে চলল জয়াসুরিয়ার ব্যাট। ২৭ বলে খেললেন ৪৪ রানের ইনিংস। নির্ধারিত ৫০ ওভারে শ্রীলংকা স্কোরবোর্ডে তুলল ৩৯৮। তখন ছিল এটাই ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের বিশ্ব রেকর্ড।

ফয়সালাবাদে অন্য জয়াসুরিয়াকে দেখল ইংল্যান্ড। এবার তিনি খেললেন মাত্র ৪৪ বলে ৮২ রানের ইনিংস। ইংলিশদের ২৩৬ রান লঙ্কানরা অতিক্রম করে গেল মাত্র ৩৬ ওভারেই। কোয়ার্টার ফাইনাল জিতে অর্জুনা রানাতুঙ্গার দল কলকাতা পৌঁছাল ভারতের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল খেলতে।

ইডেন গার্ডেনে টস জিতে ভারত অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহার উদ্দিন ফিল্ডিং বেছে নিলেন। প্রথম ওভারেই আউট হয়ে গেলেন জয়াসুরিয়া। ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও বল হাতে তিনি ঠিকই সফল হলেন। মাত্র ১২ রান দিয়ে তুলে নিলেন ৩ উইকেট। সেমির মতো লাহোরের ফাইনালেও ব্যাট হাতে বিশেষ কিছু করতে পারেননি জয়াসুরিয়া। কিন্তু এক উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি দুর্দান্ত কয়েকটি ক্যাচ নিয়ে লঙ্কানদের বিশ্বকাপ জেতাতে অবদান রেখেছেন।

ছয় ইনিংসে ৩৬.৮৩ গড়ে জয়াসুরিয়ার ব্যাট থেকে এসেছে ২২১ রান। এই স্কোর দেখে ঠিক বোঝা যাবে না ৯৬ বিশ্বকাপের জয়াসুরিয়াকে। চেনা যাবে যখন দেখবেন তার স্ট্রাইকরেট (১৩১.৫৪)।  পাশাপাশি বল হাতেও কম যাননি। ৭ উইকেট তুলে নেওয়ার পাশাপাশি ক্যাচ নিয়েছেন পাঁচটি। তাই ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরষ্কারও উঠেছে জয়াসুরিয়ার পকেটে। বড় কথা, ১৯৯৬ বিশ্বকাপে জয়াসুরিয়াকে দেখেই বাকি দলগুলো শুরুর ব্যাটিং তত্ত্ব গ্রহণ করলেন এবং সেটা আজও চলছে।

 সোনালীনিউজ/আরআইবি/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!