স্তব্ধ বিরানভূমি
তোমার আর কোনো কথায় গভীরতা খুঁজে পাই না
তোমার আর কোনো কথায় বোধ খুঁজে পাই না ।
গভীর আলোকের স্পর্শ জাগে না আর
কোনো ভোরে পশ্চিমের আকাশটা বায়বীয় মেঘ হয়ে ভাসেনি
আমি সুহাসিনি পদ্য গদ্যের মতো
কাহিনী হৃদয়ের ক্ষত মলম আজও তো আবিষ্কার হয়নি।
আশার পাশে নিরাশার তরবারি ব্যবচ্ছেদ করে চলেছে বারবার মনছবি।
গল্পের ভেতর ঘুমিয়ে পড়ি ফের মৃত্যুর মতো জেগে ওঠি।
কাজের পাশে অকাজের মেঠোপথ.. হাট-বাজার ; নগর-গ্রাম ; ধুলির আবরণ।
আমি শ্লথ গতিতে থামি আরেকবার ভাবি জীবনখানি কী?
২৬.১১.১৭
ক্ষরণ
বেতফল রক্তের স্রোতের মাঝে তারুণ্যের এক বেতফল
হতাশায় কামড়ে থাকা ঘোর অমানিশা বাহিরে
আযানের ধ্বনি চির জাগ্রত কে যে বলে যায়,
চিরদিন তুমি অনাহুত!
তারপর, আরো রক্তের স্রোত
ভেসে আসে সব লাল অনুভ‚তিরা
আরো আসে স্বপ্নের কান্না।
কামড়ে থাকা দাঁত আরো কটমট একটা ফসলের বীজ
তার ভেতর এতো কান্না! বুকের একটু জমিন তার ভেতর
শুধু বিষধর ফণা কী করে চাষ করি
শুধু অবাধ জল আর লোনা।
শুধু এক রাতের জন্য আমি নই নই কোনো একদিনের আমি আছি চিরদিন অনন্ত অলক্ষ্যে। দেখেছি,মনের গলি সেখানে চোরা চালানিই চলে দেহমাখা মদ যেখানে বাষ্প হয়ে ওড়ে। তীব্র নেশা ভাসায় কোনো এক অন্য মরণের ফাঁদে। কান্না আসে পৃথিবী হাঁটে নির্ঘুম চাঁদ হাসে মাটির বুকে জোছনারা শুধু নিভু নিভু আলো জ্বালে শুনেছো, নীরবতা পাথর ছুঁড়েছে তার চেয়ে বড় জবাব আর হয় না। ভালোবাসা কারে বলে জানোই না।
বীজ
একটু বা ক্ষুদ্র বা বীজ তার-ই মাঝে বিরাজিত অজানা বিরাট বৃক্ষ,
জাগরণে জেগে দেখো কল্পনা করে দেখো
কত মজার খেলা কানামাছি গোল্লা হঠাৎ ছুটতে গিয়ে গেলো আলখাল্লা!
আহা! কী মজা তার-ই মাঝে পাবে অক্কা!
একবার ওম দাও দু'বার পানি দাও
একবার মাটি ভেদ করো তারপর সূর্যের মতো জ্বলে ওঠো
জল খাও বেড়ে ওঠো।
বেড়ে উঠতে ছাগলে খায় পশুপাখি দেহ খায়
পোকায় করে কাটিকুটি তবু বড় হও
ভালোবাসো মাটি। এই মহাবিশ্বেরর সবকিছু তোমারই
তুমি বীজ অপরূপার তোমার মাঝে অপরূপা
ঘুমায় চিরদিনই তুমি মাটি, তুমি আগুন পানি
বায়ু তুমি জেগে ওঠো মহাবিশ্ব ফারি।
একটু বীজ জাগরণে হও মহাবৃক্ষ তবে
একটু জাগো সখের বাগান চেয়ে আছে
তোমার অপরূপা দু'চোখে!
১৮.১১.১৭
উদ্বেগ
সূর্যটার মতোই তুমি জ্বলতে জ্বলতে একদিন নিভে যাবে
ওপারে আবার তোমার জন্ম হবে সাত সমুদ্র তেরো নদী বয়ে
আবার সন্ধ্যে নামবে ফুরিয়ে যাবে প্রদীপের তেল আবারও তুমি হবে নিশ্চল।
জ্বলার নেশায় অস্থির একাকী পাখি পথ পায় না
থামার খানিক দূরেই স্বার্থপর এক পেয়ালা যাকে স্পর্শ করার
আগেই সে সরে পড়ে নিরাপদ দূরত্বে।
তুমি থামবে আবারও থামবে যখন গোধূলি লাল হবে
আরও আরও আগুন লাল টলমলে ঘন জোয়ার সমুদ্রে তখন
তুমি থামবে আগুনের মতো জ্বলে জ্বলে।
আরও কাছে থেকে দেখোনি জীবনটাকে
যে বুড়ো সূর্যটার মতোই থুরথুরে কাঁধে
এক বিশাল বোঝা হৃদয়ে অভিনব স্পর্শহীন
দূরত্ব ওপারে দেখবে আরেক
সূর্য তোমার মতোই হাসবে।
তুমি কান পেতে থাকবে অন্যযাত্রার
শেষ ধ্বনির মাঝে অনাবৃত শরীর নিয়ে ঠিক
যেমন এসেছিলে প্রথমবার
এই মহাবিশ্বের সূর্যের আলোয়।
১৭.১১.১৭
স্বেচ্ছাচারিতা
গোলাপের কাঁটার ভিড়ে এক বাসনাহীন নির্বাসন...
কামনাহীন মাংস হৃৎপিন্ডহীন আবাদী জমি,
স্পর্শহীন পাথুরে জীবন ভেঙে দেয়
মন ক্রিসপি পাতার মতন।
ডালে বসে এক বহুরঙা বাবুই চোখে চোখে
রাখি তারে কী যে করে কখন কখনো
ডাল ভেঙে যায় তার নিতম্বের ভারে।
চুপচাপ চেয়ে আছি ঐ না দেখা চোখে বলি,
ভালোবাসিস কি না দেখেছিস ভেবে? উত্তর!
সে তো হারানো মনের গম্ভুজ ফিরে পাওয়া এতো সহজ?
শরীরে হেঁটে চলে আরেক পৃথিবী
নাম না জানা জলরাশি কলসি ভরা তার ঢেউ
ঠিক নয়নের মতো ছলছল ষোড়শীর মতো চঞ্চল ভাবি,
তার নাম দেই কী!
কখনো স্বেচ্ছাচারিতা এক বাহারি কৌটা দানবের মতো তার আকাঙ্ক্ষা
কাঁটাবিহীন শরীরের ক্ষুধা জ্বলে নিশিদিন তৃষিত মুক্তা।
লাজ লজ্জা বুঝি তোর কিছুই নেই প্রাণের
ভেতর পুষ করা এক সোনামুখী সুঁই।
আবার হেঁটে চলে দেহের ভেতর
মনের স্বেচ্ছাচারী নবযৌবন।
১৪.১১.১৭
কানামাছি গোল্লাছুট
যাও নিয়ে যাও সময়ের চিঠি বহুদিন রানার আসেনি লণ্ঠন জ্বলেনি।
মুঠোর ভেতর সবুজ চিঠি হেমন্তে জলফড়িঙের ওড়াউড়ি নিজের
ভেতর সহসা ভিজে যাই অগ্রহায়ণের শিশিরে
ডুবে যাই কে তুমি তন্দ্রাহীন আচ্ছন্ন কবি?
এই যে ছবির মতো এক জীবন দেখেছো
কেউ- তার আড়ালে কত না পরিহাস?
ঘুমের ভেতর জলে ভিজি কে পর কে যে
আপন সে কথা আসলে কি জানি? এক এক করে নামতা
পড়ি জীবন কী কঠিন অংকই না কষে! কানামাছি
দূরে লুকিয়ে দস্যি গোল্লাছুট আমায় তাড়িয়ে অন্য পাড়ায় ছোটে।
আমি এক্কা দোক্কা
আর কবিতায় মজে কবে যে
শেষের কবিতাটি পড়েছি সে কথা নেই মনে।
চলেছি রানারের খোঁজে সময় হাসে আর বলে,
তুই বোকা আমি আরো হেসে বলি দেখো,
আমার ঐ সবুজ চিঠি'টি এখন তার বাড়ির ডাকবাক্সে!
৯.১১.১৭
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :